Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus

লকডাউনেও জমায়েত, কোথায় গেল সচেতনতা

ব্যারাকপুরের অধিকাংশ কারখানা এমনিতেই বন্ধ ছিল সোমবার। তার ফলে রাস্তাঘাটে দুপুরের পর থেকেই লোক কমতে তাকে।

 লকডাউনের পরেও মাঠে ফুটবল খেলা চলছে। বনগাঁয়। নিজস্ব চিত্র

লকডাউনের পরেও মাঠে ফুটবল খেলা চলছে। বনগাঁয়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২০ ০৩:১৪
Share: Save:

লক ডাউনেও তালা পড়ল না জমায়েতে। সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ছাড় ছিল। নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, তারপরেই জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব বন্ধ হয়ে যাবে। গৃহবন্দি হতে হবে নাগরিকদের। কিন্তু সন্ধের পরে ফাঁকা রাস্তায় লেগে থাকল বাইকের আনাগোনা। বনগাঁর রাস্তায় কার্যত শুরু হল বাইক রেস। দোকান-বাজারও খোলা থাকল জেলার প্রায় সর্বত্র। রবিবার জনতা কার্ফুতে যে ছবি দেখেছিল জেলা, সেই ছবি ফিরল না সোমবার। অন্তত রাত পর্যন্ত। রাতের দিকে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করতে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।

ব্যারাকপুরের অধিকাংশ কারখানা এমনিতেই বন্ধ ছিল সোমবার। তার ফলে রাস্তাঘাটে দুপুরের পর থেকেই লোক কমতে তাকে। কিন্তু নিয়ম অগ্রাহ্য করে ব্যারাকপুর, শ্যামনগর, পলতা, ইছাপুরে বেশ কিছু দোকান খোলে। বাড়তে থাকে জটলাও। তবে অল্প কিছু অটো ও টোটো ছাড়া যানবাহন চলাচল করেনি। সন্ধ্যার পর থেকে পুলিশ অবশ্য টহল দিতে শুরু করে। তারপরে বন্ধ হয় দোকানপাট।

বিকেল ৫টার পরেও বনগাঁ শহরের রাস্তায় টোটো-অটো চলল অবাধে। সেগুলিতে যাত্রীও ছিল। বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেলেও। কিছু দোকান খোলা থাকল রাত পর্যন্ত। সন্ধের পরেও চলতে দেখা গেল মতিগঞ্জের হাট। সেখানে ক্রেতাদের ভিড়ও চোখে পড়েছে। পেট্রাপোল স্থলবন্দরে অবশ্য ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায় সময় মেনেই। বনগাঁ-হাবড়ায় মোড়ে মোড়ে মানুষের জটলা চোখে পড়েছে। খোলা ছিল বেশ কিছু চা-দোকান। ফলে সেখানেও ভিড় ছিল। সন্ধ্যার পরে পুলিশ সেই দোকানগুলি বন্ধের নির্দেশ দেয়।

বিকেল ৫টার পরে লকডাউন শুরু হওয়ায় বসিরহাটের রাস্তায় বেশ কিছু পাথরবোঝাই লরি দাঁড়িয়ে পড়ে। সীমান্ত পেরিয়ে সেগুলির বাংলাদেশে যাওয়ার কথা ছিল। হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া সব দোকানই বন্ধ হয়ে যায়। অল্প কিছু লোক চলাচল করলেও রাস্তাঘাট ছিল সুনসান। তবে হাসনাবাদের বাইলানি বাজারে বেশ কিছু দোকান খোলা ছিল সন্ধ্যার পরেও। পরে পুলিশ ও বাজার কমিটি সেগুলি বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।

অন্য দিকে, বিকেল ৫টায় লক ডাউন নির্দেশ জারি হওয়ার পরেও ক্যানিংয়ে একাধিক রাস্তায় দেখা মিলল অটো, টোটো-সহ বেশ কিছু যানবাহনের। সংখ্যায় কম হলেও রাস্তায় মানুষজনও ছিলেন। দোকান বাজারের অধিকাংশই অবশ্য বন্ধ ছিল। তবে কয়েকটি দোকান খোলা ছিল। সরকারি নির্দেশ মতো, শুধুমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান খোলা থাকার কথা। তবে এ দিন এলাকা ঘুরে দেখা গেল, জামাকাপড়, বইয়ের দোকান, সেলুন-সহ বেশ কিছু দোকান খোলা। খোলা দু’একটি চায়ের দোকানের সামনে সামান্য ভিড়ও রয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও জায়গায় এক সঙ্গে সাতজনের বেশি জটলা করা যাবে না। তবে সেই নির্দেশিকাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ক্যানিং বাসস্ট্যান্ড, হাসপাতাল মোড় এলাকায় মানুষের জটলা চোখে পড়ে। পরে অবশ্য এলাকায় পুলিশি টহল শুরু হয়। অনেক খোলা দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। হালকা হয়ে যায় জটলাও।

ডায়মন্ড হারবারে লকডাউন নির্দেশ জারি হওয়ার পরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলাকায় ঘোরেন ডায়মন্ড হারবার মহকুমা পুলিশ, প্রশাসন। মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শ্যামলকুমার মণ্ডল ও ডায়মন্ড হারবারের আইসি পার্থসারথি ঘোষ এ দিন জেটিঘাট মোড় থেকে কপাট হাট মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার জাতীয় সড়কের দুধার দোকান বন্ধ হয়েছে কিনা, তা ঘুরে দেখেন। দোকান বন্ধ রাখতে মাইকে প্রচার হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বাইরে, যে দোকানগুলি খোলা ছিল, তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এলাকায় ঘোরাঘুরি করা বাসিন্দাদের বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়।

এ দিকে, সরকারি নির্দেশিকায় জয়নগর ও সংলগ্ন এলাকায় লকডাউন জারির কথা বলা হয়নি। তবে জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার তরফে পুর এলাকা লকডাউন রাখতে সকাল থেকেই স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের কাছে আবেদন করা হয়। আবেদন মেনে অনেকেই দোকানপাট বন্ধ রেখেছিলেন। রাস্তা ঘাটে মানুষের উপস্থিতি অন্য দিনের তুলনায় অনেক কম ছিল। পুরপ্রধান সুজিত সরখেল জানান, অন্যান্য জায়গার মতো পুর এলাকায় সরকারি ভাবে লকডাউন জারির নির্দেশ দেওয়ার জন্য পুরসভার তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি লেখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE