প্রতীকী ছবি।
করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তিনি আপাতত গৃহনিভৃতবাসে। কিন্তু সাপে কাটা রোগের চিকিৎসায় তাঁর অভিজ্ঞতা দীর্ঘ দিনের। টেলিফোনে পরামর্শ দিয়েই এক সাপে কাটা রোগীর প্রাণ বাঁচালেন চিকিৎসক।
ক্যানিং কোভিড হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা এই চিকিৎসক ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালেও অনেক দিন ধরে কাজ করছেন। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করতে গিয়ে ক’দিন আগে তাঁরও সংক্রমণ ধরা পড়ে। সঙ্গী আর এক চিকিৎসকও করোনা আক্রান্ত হন। উপসর্গ না থাকায় দু’জনে ছিলেন ভাড়াবাড়িতে, নিভৃতবাসে। সে কথা জানতে পেরে আপত্তি তোলেন পাড়ার লোকজন। দুই চিকিৎসককে পাড়াছাড়ার কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেন বাড়িওয়ালাও। যদিও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে উৎখাত হতে হয়নি তাঁদের। দুই চিকিৎসকই স্থানীয় লোকজনের আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করে সে সময়ে জানিয়েছিলেন, যাঁদের চিকিৎসা করতে গিয়ে তাঁরা নিজেরা আক্রান্ত হলেন, সেই মানুষগুলোই তাঁদের বিপদে কী ভাবে এমন আচরণ করছেন!
বুধবার টেলিফোনে তাঁর দেওয়া পরামর্শে সাপে কাটা রোগী সুস্থ হওয়ার পরে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘সাপে কাটা বহু রোগী ক্যানিং হাসপাতালের পরিষেবার উপরে খুবই ভরসা রাখেন। এই হাসপাতালের একটা সুনাম তৈরি হয়েছে এ ধরনের চিকিৎসায়। আর তা ছাড়া, আমার কাজ মানুষের সেবা করা। নিজে করোনা আক্রান্ত হলেও আমার তেমন কোনও উপসর্গ নেই। এই অবস্থায় টেলিফোনে পরামর্শ দেওয়ার আমার কর্তব্য বলেই মনে হয়েছে। ওই রোগীর প্রাণ বাঁচায় আমি খুশি।’’
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার সকালে বাড়ির পাশের খাল থেকে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলিয়াখালির বাসিন্দা তামিজউদ্দিন সর্দার। তাঁর ডান হাতে কেউটে সাপ ছোবল মারে। গ্রামের মানুষ তাঁকে সরবেড়িয়া শ্রমজীবী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
বেলা ১০টা নাগাদ তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আনেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের ওই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিন চারেক আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তামিজউদ্দিনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ওই ডাক্তারবাবুকেই ফোন করেন হাসপাতালে সে সময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক। ফোনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন ডাক্তারবাবু। সেই মতোই চিকিৎসা শুরু হয়।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ১০টি এভিএস দেওয়া হয়েছে তামিজউদ্দিনকে। গৃহনিভৃতবাসে থাকা ওই চিকিৎসক বলেন, গত চার দিনে এ রকম দু’জন সাপে কাটা রোগী এসেছিলেন হাসপাতালে। আমি সাধ্য মতো পরামর্শ দিয়েছি টেলিফোনে। দু’জনেই সুস্থ আছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy