Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ডেঙ্গি ফের কাড়ল প্রৌঢ়ের প্রাণ

ব্যারাকপুর তালপুকুরের বাসিন্দা দীপকবাবু দশ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। রবিবার দুপুরে কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। শীতের শুরুতে ডেঙ্গির এমন দাপট আগে দেখা যায়নি।

দীপককুমার দাস

দীপককুমার দাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪৭
Share: Save:

পারদ নামলেই নাকি নির্মূল হয় ডেঙ্গির মশারা। কিন্তু চলতি মরসুমে সেই তথ্য মিলছে না। শীতের শুরুতে কলকাতা এবং শহরতলিতে জাঁকিয়ে বসা ডেঙ্গি ক্রমশ ডালপালা মেলছে। মৃত্যু-মিছিলও অব্যাহত। ডেঙ্গি-মৃত্যুর তালিকায় শেষতম সংযোজন দীপককুমার দাস (৬৪)। হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেট বলছে, মৃত্যুর কারণ ‘ডেঙ্গি এনএস-১ পজিটিভ’।

ব্যারাকপুর তালপুকুরের বাসিন্দা দীপকবাবু দশ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। রবিবার দুপুরে কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। শীতের শুরুতে ডেঙ্গির এমন দাপট আগে দেখা যায়নি। তার ফলে বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞেরাও। তালপুকুর এলাকায় অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত।

চিকিৎসকেরা চিন্তিত এই কারণেই যে, ডেঙ্গির চিরাচরিত কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি দীপকবাবুর ক্ষেত্রে। যদিও ব্যারাকপুর পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ডেঙ্গি আগের থেকে অনেক কমেছে।

দীপকবাবু ব্যারাকপুরের একটি দোকানে কাজ করতেন। তাঁর ছেলে ভোলা দাস জানান, দিন দশেক আগে তাঁর বাবার জ্বর শুরু হয়। জ্বর না কমায় তাঁরা দীপকবাবুকে ব্যারাকপুর বিএন বসু হাসপাতালে নিয়ে যান। দেখার পরেই তাঁকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও জ্বর কমেনি। বরং প্রতিদিনই কমতে থাকে রক্তে প্লেটলেটের পরিমাণ। রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। প্লেটলেট এক ধাক্কায় নেমে যায় ৫৯ হাজারে।

ভোলা জানান, চিকিৎসার পরে প্লেটলেট কিছুটা বাড়লেও জ্বর কমেনি দীপকবাবুর। উল্টে দেখা দিতে শুরু করে অন্য শারীরিক সমস্যা। চিকিৎসকেরা বেশি করে জল খাওয়ার পরামর্শ দিলেও তিনি কিছু খেতে পারছিলেন না। শুক্রবার দীপকবাবুকে সাগর দত্ত হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসা হলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। খাওয়ার ক্ষমতা পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেন তিনি। স্যালাইন চালানো হলেও ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছিলেন। শনিবার থেকে তাঁর প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত আসতে শুরু করে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন থেকেই দীপকবাবুর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত রবিবার দুপুরে মৃত্যু হয় প্রৌঢ়ের।

ভোলা জানান, তাঁদের বাড়িতে কোথাও জল জমে থাকে না। তবে বাড়ির আশপাশে পুকুর-জলাশয় রয়েছে। সেখানে জঞ্জাল জমে তাকে। সপ্তাহ তিনেক আগে তালপুকুর লাগোয়া ব্যানার্জিপাড়ায় ডেঙ্গিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের পাড়াতেও অনেকে জ্বরে আক্রান্ত। ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত বেশ কয়েক জন ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণুও মিলেছে।

ব্যারাকপুরের পুর প্রধান উত্তম দাস অবশ্য বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে মৃত্যুর কোনও খবর আমার কাছে নেই। ডেঙ্গিও আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে। ডেঙ্গি রোধে পুরসভা সব পদক্ষেপ করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Dengue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE