Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাথায় কোপ শিশুর

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার গিলেবাড়ির বাসিন্দা মারুফাকে স্কুলে যাওয়ার পথ থেকে জোর তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে পেশায় রাজমিস্ত্রি রবিউল। পরে সালিশি সভায় দুই পরিবারকে বুঝিয়ে বিয়ে মেনে নেওয়া হয়। মারুফা-রবিউল সংসার শুরু করেন। একটি ছেলেও হয়, নাম, রাজিবুল।

বিক্ষোভ: অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে। ইনসেটে, রাজিবুল। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

বিক্ষোভ: অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে। ইনসেটে, রাজিবুল। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৮ ০১:২৪
Share: Save:

স্কুল থেকে ফেরার পথে মেয়েটিকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল এক ব্যক্তি। বছর তিনেক আগের ঘটনা। তারপরে পণের দাবিতে মেয়েটির উপরে অত্যাচার শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সেই নির্যাতন থেকে রেহাই পেল না তাঁদের বছর দু’য়েকের শিশুও। অস্ত্রের কোপ পড়ে শিশুটির নাকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বারাসত জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটি। বুধবার রাতে দেগঙ্গার দোহাড়িয়ার ঘটনা।

বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী অভিযুক্তের বাড়ি ঘেরাও করে ক্ষোভ দেখায়। পরে পুলিশ গিয়ে মেয়েটির স্বামী রবিউল মণ্ডলকে আটক করে। শাশুড়ি হাসেনা বিবিকে গ্রেফতার করা হয়। শ্বশুর ও ননদ পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার গিলেবাড়ির বাসিন্দা মারুফাকে স্কুলে যাওয়ার পথ থেকে জোর তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে পেশায় রাজমিস্ত্রি রবিউল। পরে সালিশি সভায় দুই পরিবারকে বুঝিয়ে বিয়ে মেনে নেওয়া হয়। মারুফা-রবিউল সংসার শুরু করেন। একটি ছেলেও হয়, নাম, রাজিবুল।

বৃহস্পতিবার মারুফা জানান, বিয়ের পর থেকেই তাঁর উপর নির্যাতন করতে থাকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। বুধবার রাতেও তাঁকে চুলির মুঠি ধরে ঘর থেকে উঠোনে টেনে মারতে থাকে শাশুড়ি, শ্বশুর ও ননদ। সে সময়ে কোলে ছিল রাজিবুল। মারুফা বলেন, ‘‘হঠাৎই ননদ একটি ধারাল কাটারি দিয়ে আমাকে মেরে ফেলতে কোপ মারে। তা গিয়ে লাগে ছেলের নাকে।’’

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য আবু তালেব বলেন, ‘‘প্রায়ই মেয়েটিকে মারধর করত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। অনেকবার তাঁদের সতর্ক করাও হয়। তারপরেও একটা দুধের শিশুকে এ ভাবে কোপ মারা হয়েছে।’’ কারিমা খাতুন নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, ‘‘মা হয়ে একটা মেয়ে আর একটি মেয়েকে কী ভাবে এমন নির্যাতন করে? এর চরম শাস্তি হওয়া দরকার।’’ এ দিন মারুফার বাবা আবু হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘‘বিয়েটা মেনে নিয়ে ছেলের বাড়ির দাবি মতো সবকিছু দিয়েছিলাম। তারপরেও আরও পণের দাবিতে ওকে মারধর করা হত।’’ তিনি জানান, মারুফাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়াও হয়েছিল। সপ্তাহ খানেক আগে রবিউল এসে ফিরিয়ে নিয়ে যান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলতেই চেয়েছিল।’’

শিশুটির সঙ্কট কাটেনি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ না হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শ্বশুর ও ননদের খোঁজ চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ও পণের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগও আনা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Beating Child Dowry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE