প্রতীকী ছবি।
ধার নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়াকে কেন্দ্র করে বচসার জেরেই খুন হতে হয়েছে কামারহাটির যুবক সাহেব আলিকে। সোমবার সন্ধ্যায় কামারহাটি ফাঁড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত ওই যুবকের খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনটাই
জেনেছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার সকালে দমদম লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়, কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা ওই মৃত যুবকের বাড়িতে গেলে স্থানীয়েরা তাঁদের ঘিরেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর কালামুদ্দিন আনসারির ছেলে ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। তাই তাকেও গ্রেফতার করতে হবে।
পুলিশ জানায়, খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আসিফ, মহম্মদ আরিফ ওরফে পাপ্পু, ইমরান আলি ওরফে নেপালিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে রক্তাক্ত সাহেবকে অটোতে চাপিয়ে বেলঘরিয়া রথতলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল চার যুবক। সেখানকার সিসি ক্যামেরাতে দেখা গিয়েছিল অটো থেকে নামিয়ে সাহেবকে স্ট্রেচারে তুলে দিয়েই পালিয়ে যাচ্ছে তিন জন। তবে হাসপাতালের কর্মীদের চাপে পাপ্পুকে জরুরি বিভাগে যেতে হয় সাহেবের সঙ্গে। সেখানে গিয়ে চিকিৎসকেরা যখন দেখেন গুলির আঘাতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে, তখন হাসপাতালের তরফে খবর পাঠানো হয় বেলঘরিয়া থানায়। পুলিশ এসে পাপ্পুকে আটক করে নিয়ে যায়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুলিশ সূত্রের খবর, পাপ্পুকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, আসিফ নামের স্থানীয় এক যুবকের থেকে বেশ কয়েক দিন আগে দুই লক্ষ টাকা ব্যবসার প্রয়োজনে ধার নিয়েছিলেন ফল ব্যবসায়ী সাহেব। বারবার বলার পরেও সেই টাকা শোধ না করায় পাওনা নিয়ে ফয়সালা করতেই সোমবার বিকেলে কামারহাটির ম্যাকেঞ্জি রোডে একটি হোটেলের সামনে সাহেবকে ডেকে পাঠায় আসিফ। তার সঙ্গেই ছিল পাপ্পু ও নেপালি নামের দুই যুবকও।
পুলিশ জেনেছে, টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে কথাবার্তা শুরু হওয়ার পরেই বচসা বেধে যায়। তখনই খুব কাছ থেকে সাহেবের বুকে গুলি করা হয়। তবে গুলিটি কে চালিয়েছিল তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকরীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়তেই সাহেবকে একটি অটোতে চাপিয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসে আসিফেরা। তাদের পরিকল্পনা ছিল সাহেবকে হাসপাতালে রেখে তারা চম্পট দেবে। কিন্তু হাসপাতালের তরফে রোগীর সঙ্গে বাড়ির এক জনকে থাকতে হবে বলে চাপ দেওয়ায় পাপ্পু পালাতে পারেনি। তাতেই সে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। তাকে জেরা করে ওই রাতেই কাঁকিনাড়া থেকে আসিফ ও নেপালিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ দিন সকালে দমদম লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়, কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহারা মৃত যুবকের বাড়িতে গিয়ে স্থানীয়দের অসন্তোষের সামনে জানান, ‘আইন নিজের পথেই চলবে। কোনও দোষীকেই আড়াল করা হবে না।’ ৬ নম্বর ওয়ার্ড অফিসেও বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা।
পরে কালামুদ্দিন বলেন, ‘‘আমি রাজনীতি করি বলে আমার ছেলের নাম ইচ্ছাকৃত ভাবে জড়ানো হচ্ছে। আসিফ আমার ওয়ার্ডে থাকায় হয়ত স্থানীয়েরা বিক্ষোভ দেখাতে এসেছিল।’’
তবে শুধু পাওনা টাকা ফেরত না দেওয়াতেই ওই খুন কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি কাউন্সিলরের ছেলের যোগসূত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy