Advertisement
১০ মে ২০২৪

তৃণমূলের কর্মী-বৈঠকে বক্তা বিশ্বনাথ

সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী ও কিছু অনুগামী তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে তাঁদের পুরভোটে প্রার্থী করা হয়েছে। তাঁদের সমর্থনে তিনি বেশ কিছু বৈঠকও করেছেন, এমনকী পাড়ায় দু’এক বার প্রচারেও দেখা গিয়েছে।

তৃণমূলের বৈঠকে দলের দুই নেতা অরূপ বিশ্বাস ও স্বপন দেবনাথ। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূলের বৈঠকে দলের দুই নেতা অরূপ বিশ্বাস ও স্বপন দেবনাথ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৭
Share: Save:

ভোটের আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও কয়েক জন অনুগামী। তাঁদের অনেককে প্রার্থীও করেছে তৃণমূল। কিন্তু তিনি দল পাল্টাননি। দুর্গাপুরের সেই কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল রবিবার বিকেলে সদলবলে হাজির থাকলেন তৃণমূলের কর্মিসভায়। বক্তব্যও রাখেন।

রবিবার বিকেলে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে এক প্রেক্ষাগৃহে তৃণমূলের প্রার্থী ও কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তৃণমূলের অন্য নেতাদের সঙ্গে সেখানে উপস্থিত হন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথবাবু। গত বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বিধায়ক হন তিনি। সম্প্রতি তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে জল্পনা শুরু হয় শহরে। যদিও তিনি দলবদল করেননি।

তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, দল না পাল্টালেও কিছু দিন আগে বিশ্বনাথবাবু তৃণমূল ভবনে ঘুরে এসেছেন। সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী ও কিছু অনুগামী তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে তাঁদের পুরভোটে প্রার্থী করা হয়েছে। তাঁদের সমর্থনে তিনি বেশ কিছু বৈঠকও করেছেন, এমনকী পাড়ায় দু’এক বার প্রচারেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু রবিবার যে ভাবে তৃণমূলের সভায় হাজির হলেন, তাতে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস।

প্রার্থী না করায় বিদায়ী কাউন্সিলরদের কেউ-কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁদের অধিকাংশকেই বুঝিয়ে-সুজিয়ে শান্ত করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। অনেকে এ বারের প্রার্থীদের সঙ্গে প্রচারেও বেরিয়েছেন। তা সত্ত্বেও দলের অন্দরে দ্বন্দ্বের স্রোত বইছে বলে দাবি তৃণমূলেরই একাংশের। এ ছাড়া যে ভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিশ্বনাথবাবুর অনুগামীদের প্রার্থী করা হয়েছে, সে নিয়েও স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এ দিন বৈঠকে অরূপবাবু বলেন, ‘‘অন্তর্ঘাতের কোনও রকম চেষ্টা দল বরদাস্ত করবে না। দয়া করে কেউ সে চেষ্টা করবেন না। তাতে আপনাদেরই ক্ষতি হবে।’’ পাশাপাশি, তিনি কাউন্সিলরদের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন করে বলেন, ‘‘ভোটে জেতার পরে নিজেদের ‘শেষ কথা’ ভাবার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। কাউন্সিলরদের চলতে হবে দলের নির্দেশে। এর অন্যথা আমি মেনে নেব না।’’

এ দিন তৃণমূলের বৈঠকে কংগ্রেসের বিধায়কের হাজিরার কথা জেনে তৃণমূলের অনেকেও অবাক হন। অরূপবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘রাজ্যসভায় যদি আমরা কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্যকে সমর্থন করতে পারি তাহলে এখানে উনি থাকলে আপত্তি কিসের! তাছাড়া ওঁর স্ত্রী নির্বাচনে আমাদের হয়ে লড়ছেন। তাঁকে সমর্থন করার জন্য তিনি আসতেই পারেন।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘এখানে কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম— সব এক হয়েছে। কিন্তু মানুষের আশীর্বাদ তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছে।’’ সভায় বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলের জন্য ছিলাম, আছি, ভবিষ্যতেও থাকব।’’ পরে অবশ্য তাঁর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

কংগ্রেসের জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল তাঁকে সন্ন্যাস নিতে বাধ্য করেছিল। কংগ্রেসই তাঁকে পুনর্বাসন দেয়। তার পরেও এই দ্বিচারিতার যোগ্য জবাব ভোটবাক্সে পাবেন তিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE