Advertisement
১০ মে ২০২৪
Coronavirus

বাজারে জটলা, আলোচনা করোনা নিয়ে

সকালে দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজার, ডিএসপি টাউনশিপের চণ্ডীদাস বাজার, সেন মার্কেটে  ‘লকডাউন’-এর প্রভাব দেখা যায়নি।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সতর্কতামূলক নির্দেশিকা উড়িয়ে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে চলছে আনাজ কেনাবেচা। মঙ্গলবার এমন দৃশ্যই দেখা গিয়েছে দুর্গাপুর স্টেশন লাগোয়া সেন মার্কেটে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সতর্কতামূলক নির্দেশিকা উড়িয়ে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে চলছে আনাজ কেনাবেচা। মঙ্গলবার এমন দৃশ্যই দেখা গিয়েছে দুর্গাপুর স্টেশন লাগোয়া সেন মার্কেটে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ০০:৪৬
Share: Save:

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলায় ‘তালা’। কিন্তু তার পরেও মঙ্গলবার ‘লকডাউন’-এর দিনে জেলার আনাজ-সহ নানা বাজারে ভিড় দেখা গেল। চলল জটলাও। এমনকি, সেই জটলায় অনেককেই দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাও করতে দেখা গেল!

সকালে দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজার, ডিএসপি টাউনশিপের চণ্ডীদাস বাজার, সেন মার্কেটে ‘লকডাউন’-এর প্রভাব দেখা যায়নি। সেন মার্কেটের পাইকারি বাজারে সাধারণ সময়ের মতো ছোট ট্রাকে করে আনাজ এসেছে। ট্রাকগুলিতে কয়েকজন করে এসেছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কোনও রকম সতর্কতা দেখা যায়নি। আনাজের দোকানে প্রতি দিনের মতো নির্দিষ্ট দূরত্ব ছাড়াই পরপর বসেছিলেন বিক্রে‌তারা। ক্রেতারাও এক সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে আনাজ কিনেছেন। শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা আশিস রায়, সুবাস পোদ্দারেরা বলেন, ‘‘কোনও উপায় নেই। ‘লকডাউন’ শুরু হয়ে গিয়েছে। যে কোনও দিন আনাজ আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই প্রথমেই বাজারে এসে কয়েকদিনের আনাজ মজুত করছি। তাই এত ভিড়।’’ একই ছবি নজরে এসেছে চণ্ডীদাস বাজারেও।

সকাল ১০টা নাগাদ নিয়ামতপুর চৌমাথা, কুলটির নিউরোড, রানিতলা, হাটন রোড চৌমাথা থেকে ইসমাইল মোড় পর্যন্ত একাধিক স্থানে বহু মানুষের জটলা দেখা গিয়েছে। সেই সব জটলায় অনেকেই করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনাও করেছেন। এর ভয়াবহতা, কী-কী সতর্কতা নেওয়া উচিত, দেশে ও রাজ্যে এর প্রভাব, এমন নানা বিষয় ছিল সেই আলোচনার বিষয়। তবে, গা ঘেঁষাঘেঁষি করে না দাঁড়ানোর যে সতর্কতা, তা মানতে দেখা যায়নি তাঁদের!

একই ছবি দেখা গিয়েছে জামুড়িয়া বাজারেও। জামুড়িয়া বণিক সংগঠনের সম্পাদক অজয় খেতান বলেন, ‘‘এমন ভিড় সচরাচর দেখা যায় না। তবে আমরা ‘মাস্ক’ বিলি করেছি। জনসাধারণকে অযথা ভিড় না করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।’’ আসানসোল পুরসভার ১ নম্বর বরো চেয়ারম্যান শেখ শানদার বলেন, “আমাদের ভয় এ ভাবে ভিড় হতে থাকলে করোনাভাইরাস রোধে সরকারের পরিকল্পনা সফল হবে না। তার সঙ্গে কালোবাজারিও আটকানো যাবে না। তাই দলগত ভাবে মানুষকে বোঝাচ্ছি।’’ ‘রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স’-এর সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়া, পাণ্ডবেশ্বর বণিক সংগঠনের সম্পাদক শ্যামাপদ ভট্টাচার্য ও উখড়া বণিক সংগঠনের সীতারাম বার্নওয়ালেরা জানান, রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা পাওয়ার পরে দোকানদারদের বোঝানো হয়েছে, যাতে সকালের দিকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া দিনভর অন্য কোনও দোকান না খোলা থাকে। ব্যবসায়ীরা তাতে সাড়াও দিয়েছেন বলে দাবি তাঁদের।

তবে রাস্তাঘাটে লোকজনের সংখ্যা জেলার নানা প্রান্তেই অত্যন্ত কম ছিল। বন্ধ ছিল আসানসোল বাজারও। সুনসান দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড, দুর্গাপুর স্টেশন, প্রান্তিকা বাসস্ট্যান্ড। সিটি সেন্টার এলাকায় লোকজনকে সে ভাবে বেরোতে দেখা যায়নি। তবে বেনাচিতি, ৫৪ ফুট রোড, সারদাপল্লি প্রভৃতি এলাকায় লোকজন বাইরে বেরিয়েছেন দু’-এক জন করে। তবে লকডাউনের দ্বিতীয় দিন থেকে পুলিশ, প্রশাসনের তৎপরতা আরও বাড়বে বলে সূত্রের খবর।

জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠি বলেন, ‘‘গণ পরিবহণ সম্পূর্ণ বন্ধ আছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বহনকারী যানবাহন চলেছে। দোকানে ক্রেতা ও বিক্রে‌তা, দু’পক্ষই যাতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনে চলেন তা নিশ্চিত করতে পুলিশ-প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ করছে। ‘মাইকিং’ করে মানুষকে সচেতন করার প্রক্রিয়াও চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE