জামুড়িয়ায় বিজেপির ‘হোলি মিলন উৎসব’। সেখানে হাত পরিষ্কার করছেন দলীয় কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক সম্প্রতি এক নির্দেশিকায় বড় কোনও জমায়েত এড়িয়ে চলার বা স্থগিত রাখার কথা বলেছে। একই কথা বলছেন রাজ্যের বিশেষজ্ঞেরাও। কিন্তু তার পরেও সোমবারের মতো মঙ্গলবারেও জমায়েতে পিছিয়ে থাকল না পশ্চিম বর্ধমান। তা কেন্দ্র করে বিজেপি, তৃণমূল চাপানউতোরও শুরু হয়েছে।
এ দিন বিকেলে জামুড়িয়ায় ইসিএলের পনিহাটি ওয়ার্কশপ রিক্রিয়েশন ক্লাবে বিজেপি ‘হোলি মিলন উৎসব’ আয়োজন করে। নেতৃত্বে ছিলেন দলের আসানসোল জেলা সম্পাদক সন্তোষ সিংহ। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, সেখানে প্রায় একশো কর্মী যোগ দেন। তবে এই উৎসব আয়োজনের মধ্যে করোনা-সচেতনতার অভাবের কথা স্বীকার করেননি বিজেপি নেতা সন্তোষবাবু, রাজু বাউড়িরা। তাঁদের দাবি, অনুষ্ঠান কেন্দ্রে ঢোকার আগে প্রত্যেকে তরল সাবান দিয়ে ভাল ভাবে হাত ধুয়ে ফেলেন। নিখরচায় ‘মাস্ক’-ও বিলি করা হয়। সন্তোষবাবুর কথায়, ‘‘উৎসবের মঞ্চকেই করোনা-প্রতিরোধে সচেতনতা শিবিরের রূপ দেওয়া হয়। প্রত্যেক কর্মীকে নিজেদের এলাকায় গিয়ে সচেতনতা প্রচার করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে, ‘অসচেনতা’র অভিযোগ প্রসঙ্গ উঠতেই রাজুবাবুর দাবি, ‘‘সোমবার অণ্ডালে আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির উপস্থিতিতে তৃণমূল ‘হোলি মিলন উৎসব’ করে। তাতে অনেক বেশি জন-সমাগম হয়েছিল। আমরা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন বলেই অনেক কম লোক ডেকেছিলাম।’’
যদিও এ প্রসঙ্গে জিতেন্দ্রবাবুর দাবি, ‘‘আমাদের উৎসবে সব কিছু নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। অহেতুক রাজনীতি করছে বিজেপি। সরকার সকলের কাছে সচেতন থাকার জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছে। তা সবার মানা দরকার। আমরাও তা মেনেই পরিচ্ছন্নতায় জোর দিচ্ছি।’’ আপৎকালীন ব্যবস্থায় স্থানীয় প্রশাসনকে পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় আরও জোর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন সিপিএম নেতা মনোজ দত্তও।
পাশাপাশি, জামুড়িয়া হাটতলায় জামুড়িয়া হিন্দি বিদ্যালয় লাগোয়া অন্নপূর্ণা ভবনে ‘সারা ভারত স্বর্ণকার সমাজ’-এর জামুড়িয়া আঞ্চলিক কমিটির প্রথম সম্মেলন ও ‘হোলি মিলন উৎসব’ আয়োজিত হয়। সংগঠন সূত্রে খবর, সেখানে প্রায় চারশো জন যোগ দেন। দুপুরে খাওয়াদাওয়ারও বন্দোবস্তও ছিল। তবে আয়োজকদের তরফে প্রভাত বর্মা বলেন, ‘‘করোনা-সচেতনতার জন্য খাবার আগে প্রত্যেকে ভাল ভাবে যাতে হাত ধুতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হয়। সম্মেলনের মুল অনুষ্ঠানে শ’খানেক প্রতিনিধি ছিলেন। তার পরে ধাপে-ধাপে সদস্যদের খাওয়ানো হয়। ফলে, বেশি মানুষের ভিড় হয়নি।’’
চিত্তরঞ্জন রবীন্দ্র ক্লাবের উদ্যোগে সালানপুরের আধিবাসী অধ্যুষিত কাশিডাঙায় করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সচেতনতা শিবির আয়োজিত হয়। আয়োজকেরা জানান, সেই ‘সচেতনতা শিবিরে’ই প্রায় ১৭৫টি পরিবারের সদস্যেরা যোগ দেন!
মহকুমাশাসক (আসানসোল) দেবজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও বড় জমায়েতের অভিযোগ প্রশাসনের কাছে কেউ করেননি। অভিযোগ পেলে খোঁজ নেওয়া হবে।’’
পাশাপাশি, এ দিন সকালে দুর্গাপুরের এক এলাকায় একটি সংগঠনের তরফে কয়েকশো মানুষকে সঙ্গে নিয়ে শোভাযাত্রা আয়োজিত হয়। তার জেরে যানজটও হয় রাস্তায়। সেখানেও করোনা-সতর্কতায় কোনও পদক্ষেপ নজরে পড়েনি বলে অভিযোগ। যদিও বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘ওই শোভাযাত্রার কোনও অনুমোদন প্রশাসন দেয়নি। ৩১ মার্চ পর্যন্ত যে কোনও ধরনের সভা-সমাবেশ ও শোভাযাত্রার উপরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy