শুরু: অনুষ্ঠানের সূচনা করছেন শশী পাঁজা। নিজস্ব চিত্র
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্না সেখানেই করতে হবে বলে কয়েক মাস আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এ বার রান্না করা খাবার কেন্দ্রে বসে খাওয়ার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা।
বাড়ি ফেরার সময় প্রসূতি ও শিশুদের হাতে কাঁচা ডিম ধরিয়ে দেওয়া হয়, কয়েক মাস আগে মেদিনীপুরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে এমন নালিশ শুনে থ হয়ে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। নির্দেশ দিয়েছিলেন, কোনও কিছুই কাঁচা দেওয়া যাবে না। রান্না কেন্দ্রেই করতে হবে। বৃহস্পতিবার ধনেখালিতে গিয়ে রান্না করা খাবার কেন্দ্রে বসেই খাওয়ার নির্দেশ দেন শশীদেবী।
ধনেখালি ব্লকে সুংসহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের অধীনে ৫০২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। কেন্দ্রগুলিকে নিয়ে গড়া ‘ব্লক ইউনাইটেড ফোরাম’-এর বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষ্যেই এ দিন মন্ত্রীর ধনেখালি আসা। বেলমুড়ি কমিউনিটি হলে সম্মেলনটি হয়। সেখানেই মন্ত্রী জানান, বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খাবার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খাওয়ার অভিযোগ তিনি পাচ্ছেন। তাঁর মতে, এতে শিশু যথাযথ পুষ্টি পাচ্ছে না। একটি শিশুর খাবার অনেক ক্ষেত্রে একাধিক জনকে খাওয়ানো হচ্ছে, এমন অভিযোগও তিনি শুনেছেন। এর পরেই মন্ত্রীর নির্দেশ, ‘‘৩ থেকে ৬ বছরের শিশুদের জন্য বরাদ্দ খাবার পরিবারের সদস্যেরা টিফিন বাক্স নিয়ে এসে বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন না। কেন্দ্রেই শিশুদের খাওয়াতে হবে।’’
সম্মেলনটি ধনেখালির হলেও হুগলি-সহ বিভিন্ন জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কয়েকশো সহায়ক ও কর্মী এসেছিলেন। তাঁরা নির্দিষ্ট নীল ইউনিফর্মে না-আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। ইউনিফর্ম না-পরে কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করেন। কয়েকটি ঘোষণাও করেছেন তিনি। তার মধ্যে যেমন রয়েছে বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন তৈরি, তেমনই রয়েছে কর্মী-সঙ্কট মেটানোর আশ্বাস।
রাজ্যের বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলা আকাশের নীচে বা কোনও ক্লাবের চাতালে বা ভাড়াঘরে চলে। দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যে তেমন কেন্দ্র রয়েছে ১১৯৬টি। তার মধ্যে হুগলিতে রয়েছে ৪০টি। শশীদেবী বলেন, ‘‘ওই সব কেন্দ্রগুলি যাতে শীঘ্রই বাড়ি পায়, চেষ্টা চলছে। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’’
আদালতে মামলা চলার জন্য হুগলি-সহ ন’টি জেলায় যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য নতুন করে সুপারভাইজার, সহায়িকা বা কর্মী নিয়োগ করা যাচ্ছে না, সে কথা মেনে নিয়েছেন মন্ত্রী। একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ‘‘মামলা মিটলেই দ্রুত নিয়োগ করা হবে।’’ এ ছাড়া, ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য পাবেন বলে জানান শশীদেবী।
সম্মেলনে হাজির ধনেখালির বিধায়ক তথা রাজ্যের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা দফতরের মন্ত্রী অসীমা পাত্র অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির উন্নয়নে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন। তবে, শশীদেবী কেন্দ্রগুলির উন্নয়নে কর্মীদেরই এগিয়ে আসার ডাক দেন। এ জন্য তিনি গ্রামস্তরে কমিটি গঠনে জোর দেন। কাজ বন্ধ রেখে তাঁরা যাতে কোনও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে যোগ দিতে না-যান, সে ব্যাপারেও সতর্ক করেন মন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy