Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’মেলা, বন্ধ নির্দেশে

যাবতীয় মেলা-খেলা বন্ধের নির্দেশ আগেই জারি হয়েছে।

অসচেতন: মেলায় নাচ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

অসচেতন: মেলায় নাচ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত সরকার
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ০৬:৩৫
Share: Save:

দেশ জুড়ে বাড়ছে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। প্রাণহানিও বাড়ছে। এর মধ্যে মেলা!

যাবতীয় মেলা-খেলা বন্ধের নির্দেশ আগেই জারি হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরের বিখ্যাত মতুয়া মেলা বন্ধের জন্য পুলিশকে আইনি পদক্ষেপ করতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। হুগলির উত্তরপাড়ায় দু’টি মেলা ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়েছে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে। তারকেশ্বর, বাঁশবেড়িয়ার হংসেশ্বরীর মতো মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ সব সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার পান্ডুয়ায় শীতলা পুজোর মেলা কী ভাবে চালু হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পরে অবশ্য প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়। কিন্তু পুজো বন্ধ হয়নি।

মেলাটি ৫০ বছরের বেশি পুরনো। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সংক্রমণ এড়াতে সরকারি এভং বেসরকারি স্তরে যখন যথাসাধ্য চেষ্টা হচ্ছে, তখন পুরনো মেলার ‘অজুহাতে’ কী ভাবে তা আয়োজন হয়, সে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক চিকিৎসক এবং পরিবেশপ্রেমী। তাঁদের মতে, এ ঘটনা উদ্যোক্তাদের ‘কাণ্ডজ্ঞানহীনতা’। মেলায় লোক সমাগম হবে জেনেও তাঁরা ওই আয়োজন করেছেন।

বিষয়টি কানে আসার পরেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। বিডিও স্বাতী চক্রবর্তী মেলা বন্ধের নির্দেশ দেন। দিনভর মেলা চলার পরে সন্ধ্যার পরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে মেলার দোকানপাট বন্ধের তোড়জোড় শুরু হয়। বিডিও বলেন, ‘‘করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতার জন্য ব্লকে সভা করে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এলাকায় কোনও মিটিং, মিছিল, খেলা, মেলা, সভা করা যাবে না। কোথাও যাতে মানুষের জমায়েত না হয়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। তা সত্ত্বেও ওখানে মে‌লা বসেছে। মেলা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে প্রশাসনের তরফে পদক্ষেপ করা হবে।’’

কেন তাঁরা মেলার আয়োজন করেছিলেন? মেলা কমিটির সদস্য রাহুল রায়ের দাবি, ‘‘প্রস্তুতি এক বছর আগে থেকেই চলে। করোনাভাইরাসের জন্য সরকারি নির্দেশ পেয়ে মেলাটি বন্ধ করে দেওয়া হল।’’

খন্যানে পঞ্চায়েত ভবনের কাছেই জিটি রোডের দু’ধারে ওই মেলা বসেছিল। মেলা চলার কথা ছিল চার দিন। এ দিন বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুজোর ডালি নিয়ে মহিলাদের লাইন পড়েছে। বাজনা বাজছে। বাজি ফাটছে। রাস্তার ধারে বাদাম, জিলিপি থেকে মহিলাদের সাজগোজের জিনিসের সম্ভার সাজিয়ে অন্তত শ’খানেক অস্থায়ী দোকান বসেছে। সেখানে মানুষের ভিড়।

প্রশাসনের ওই নির্দেশের পরে ইটাচুনা-খন্যান পঞ্চায়েত প্রধান তরুণকান্তি চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লোকজন সেখানে যান। মেলার দোকানপাট তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়। বেশ কিছু দোকানের সামনে ত্রিপল টাঙিয়ে দেওয়া হয়। পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরা জানান, মেলা বসবে না। এলাকার সব মাইকও খুলে নেওয়া হবে। তবে পুজো চলবে।

স্থানীয় হরিদাসপুরের বাসিন্দা মিতা দাস এ দিন মেলায় এসেছিলেন। তিনি মনে করেন মেলা বন্ধ করে প্রশাসন ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সারা বছর এই মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। তবে এ বার মেলায় এলেও করোনাভাইরাসের জন্য ভয় লাগছে। মেলা বন্ধ করে ঠিক সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE