Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছেন ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরতেরা

মুম্বই থেকে ফেরার দিনই দাসপুরের নিজামপুরের ওই যুবকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছিল। তাঁকে একা ঘরবন্দি হয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু ওই যুবক তা মানেননি।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ০৪:২৭
Share: Save:

জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে সোমবার গভীর রাতে| ভিন্ রাজ্য ফেরত দাসপুরের বাসিন্দা ওই যুবককে মেদিনীপুর মেডিক্যাল থেকে পাঠানো হয়েছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। এই ঘটনার পরে মূলত ভিন্ রাজ্য ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বেগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। কারণ, দেখা যাচ্ছে এঁদের অনেকেই সুরক্ষার বিধিনিষেধ মানছেন না।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গোড়ায় নিয়ম মানেননি দাসপুরের করোনা আক্রান্ত যুবকও। মুম্বই থেকে ফেরার দিনই দাসপুরের নিজামপুরের ওই যুবকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছিল। তাঁকে একা ঘরবন্দি হয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু ওই যুবক তা মানেননি। বাড়ি ফিরে পরিজনেদের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন। রাতে স্ত্রীর সঙ্গে এক ঘরে থেকেছেন। ফলে বিপদ বেড়েছে পরিজনদের। ওই যুবকের পরিজনেদের এখন গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘ওই যুবক তো শুধু নিজে বিপদে পড়লেন না। বাবা, মা, স্ত্রী-পরিজনেদেরও বিপদ বাড়ালেন। তিনি বাবার সংস্পর্শেই বেশিবার এসেছেন। তাঁর বাবাকে নিয়েই এখন উদ্বেগ হচ্ছে।’’

গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকার নির্দেশ না মেনেই মূলত বিপদ বাড়াচ্ছেন ভিন্ রাজ্য ফেরতেরা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্য থেকে আসা লোকেদের এখন যে ভাবেই হোক ঘরের ভিতরে রাখতেই হবে। কেউ কেউ নির্দেশ মানছেন না। তাঁদের নির্দেশ পালন করতে বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে।’’

ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিককে ঘরে আটকে রাখা কি শুধু পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব? জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘এ জন্যই জনসচেতনতা এখন সবথেকে বেশি প্রয়োজন। স্থানীয় লোকজন তো জানেন, এলাকার কে বা কারা বাইরে থেকে এসেছেন। তাঁরাই পুলিশ-প্রশাসনকে জানাতে পারেন। অনেকে জানাচ্ছেনও।’’ পুলিশ সুপার জানাচ্ছেন, জেলায় এখনও পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাইরের রাজ্য থেকে এসেছেন। গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। বাইরের রাজ্য থেকে যাঁরা এসেছেন তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছে। পোলিয়ো অভিযানের মতোই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সব কিছুই নজরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে এই সময়ের মধ্যে ২৭ হাজারেরও বেশি ভিন্ রাজ্য ফেরত মানুষ এসেছেন। বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। ওই সূত্র জানাচ্ছে, ২৬ মার্চ পর্যন্ত জেলায় ভিন্ রাজ্য ফেরত মানুষের সংখ্যা ছিল ২০,৩১১ জন। ৩০ মার্চে পর্যন্ত জেলায় ভিন্ রাজ্য সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ২৭,১৩০। অর্থাৎ, এই ক’দিনেই নতুন করে প্রায় ৭ হাজার ভিন্ রাজ্য ফেরত মানুষকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ চিকিৎসকদের কোনও নির্দেশই মানছেন না। দিনে অনেকে ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। রাতে গ্রামের ঠেকে আড্ডা দিতে যাচ্ছেন। অনেককে না কি হাটে-বাজারেও যেতে দেখছেন স্থানীয়রা। বিভিন্ন সূত্র মারফত প্রশাসনের কাছে এমন খবর আসছে। একের পর এক অভিযোগ পেয়ে পরিস্থিতি সামলাতে কার্যত হিমসিম খাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন।

জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক মানছেন, ‘‘এই বিপুল সংখ্যক লোককে এখন ঘরে আটকে রাখার কাজটা কঠিন। কিছু ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে সামাজিক চাপ তৈরির চেষ্টা করতে হচ্ছে। স্থানীয় মানুষজনকেও সচেতনভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE