মাংসের চেয়ে মাছের দোকানেই ভিড় ছিল বেশি। —নিজস্ব চিত্র।
কমলবাবুর জামাইয়ের আবদার ছিল জামাইষষ্ঠীর পাতে চিতল মাছের ঝোল। প্রথম জামাইষষ্ঠী, তাই জামাইয়ের আবদার রাখতে মরীয়া কমলবাবু গোটা হলদিয়ার বাজার তন্নতন্ন করে খুঁজেও চিতল মাছের খোঁজ পাননি। ফলে জামাই আপ্যায়নে খামতি থেকে যাওয়ায় তাঁর মন খারাপ। বললেন, ‘‘জামাইয়ের আবদার মেটাতে পারলে ভাল লাগত, তবে ইলিশ-কচুর মেনু দিয়ে সেটা মেকআপ করার চেষ্টা করেছি।’’
জামাই ষষ্ঠী মানে সকলের কাছে চেনা ছবি—মাংস। কিন্তু এ বছর প্রচণ্ড গরম এবং ভাগাড় কাণ্ডের জেরে বহু বাড়িতেই জামাই আপ্যায়নে মাংসকে পিছনে ফেলেছে মাছ। হলদিয়ার দেরোশোভারামপুরে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন কলকাতার বাসিন্দা কর্পোরেট সংস্থার কর্মী রজত দত্ত বসু। তাঁর দাবি, মাংস তো সারা বছর খাই। যা গরম পড়েছে, তাতে মাংস না খেয়ে চিতল মাছ খাব বলেছিলাম।’’ শুধু রজতবাবু নন, মাংস ভুলে নানা সুস্বাদু মাছের পদে জামাই ষষ্ঠীর ভোজন সেরেছেন এমন জামাইয়ের সংখ্যাই বেশি।
তবে কী ভাগাড় কাণ্ডের রেশ!
প্রশ্ন শুনে অনেক শ্বশুরমশাই জানিয়েছেন, প্রচণ্ড গরমে পেট খারাপের ভয় রয়েছে। তাই জামাইরা মাছের বায়না করেছিলেন। আর সেই বায়নায় শিল্প শহর তথা বন্দর হলদিয়া থেকে জেলা সদর তমলুক—সর্বত্রই জামাই ষষ্ঠীতে বাজিমাত করেছে ইলিশ। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিকিয়েছে ৬০০ টাকা কেজি দরে। পমফ্রেট, গলদা মোটের উপর বিক্রি হলেও, খাসি কিংবা মুরগির মাংসের দোকান ছিল কার্যত ফাঁকা।
হলদিয়ার মাখনবাবুর বাজারে দীর্ঘদিন ধরে মাছ ব্যবসা করেন প্রদীপ বর্মন। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু ইলিশ নয়, অন্য মাছের চাহিদাও এত বেশি হবে ভাবতে পারিনি।’’ মাছ বিক্রেতাদের দাবি, এ দিন ইলিশের চাহিদা অন্য বছরের চেয়ে অনেকটাই বেশি ছিল।
এগরার মাছ বিক্রেতা নিমাই সিংহ জানান, জামাই ষষ্টীতে ইলিশের দাম বাড়লেও এ বার চাহিদাও ছিল ভালই। জামাইয়ের জন্য ইলিশ কিনতে এসেছিলেন দুলাল মাইতি। তাঁর কথায়, ‘‘বাজারে প্রথম ইলিশ তাই নিতেই হল। দাম একটু বেশিই। তবে জামাই-মেয়ের কথা ভেবে এটুকু সহ্য করাই যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy