অধীররঞ্জন চৌধুরী।
প্রশ্ন: তাহলে কি আপনিই সিরাজ?
অধীর: মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসকে খতম করতে কলকাতার নবান্ন থেকে আক্রমণ শানানো হয়েছিল। সেই আক্রমণ প্রতিহত করতে মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের সেনাপতি হিসাবে আমাকেও লড়তে হয়েছে। আমিই এখনকার সিরাজ।
প্রশ্ন: মীরজাফর কাকে বলবেন?
অধীর: এ বারে ভোটে একা কোনও মীরজাফর নেই, তবে কংগ্রেসের ‘হাত’ প্রতীকে জিতে অনেক জগৎ শেঠ, উমিচাঁদ, রায় দুর্লভ, ঘসেটি বেগম বেইমানের মতো ‘ঘাসফুল’ শুঁকছেন!
প্রশ্ন: গুরুমারা বিদ্যে কি অপূর্ব সরকারকে শেখাননি?
অধীর: এই কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী উপলক্ষ মাত্র। তাঁর বিরুদ্ধে আমার লড়াই নয়। লড়তে হয়েছে নবান্ন, নবান্নের মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর দলের বিরুদ্ধে।
প্রশ্ন: আপনি থাকতে জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদে এই ফল কেন?
অধীর: মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসকে শেষ করে দেওয়ার জন্য ২০১৬ সাল থেকে তীব্র প্রলোভন ও পুলিশ-প্রশাসনকে হাতিয়ার করে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েতে ভোট লুট করেছেন। প্রলোভন ও পুলিশ-প্রশাসনের ‘পানি কেস’ (মাদক আইন)-এর ভয়ে এ জেলার তিনটি আসনে হাজারেরও বেশি বুথে আমরা এজেন্টই দিতে পারিনি। সেই সব বুথে নিঃশব্দে ছাপ্পা দিয়েছে তৃণমূল। এ কারণে জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদে আমাদের পরাজয়। তা ছাড়া জঙ্গিপুরের বিদায়ী সাংসদের ব্যক্তিগত ভূমিকাও পরাজয়ের একটি বড় কারণ।
প্রশ্ন: দিল্লিতে কংগ্রেস প্রায় নেই হয়ে গেল। এ রাজ্যের হাল আপনি জানেন। সেখানে বিজেপি আপনাকে প্রস্তাব দিলে যোগ দেবেন?
অধীর: কেবল বিজেপি কেন? তৃণমূল থেকেও তো প্রস্তাব আসতে পারে? তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে আমার তো কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই!
প্রশ্ন: তা হলে আপনার গড়ে বিজেপি-র উত্থান মানছেন?
অধীর: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপরিণামদর্শী রাজনৈতিক পদক্ষেপ বিজেপিকে এ রাজ্য লাল কার্পেট বিছিয়ে ডেকে এনেছে।
প্রশ্ন: কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের সখ্য হয়েছিল দিল্লিতে। এ রাজ্যে বামেদের একটাও আসন না পাওয়াটা কি বিজেপি’র উত্থানের ফলেই?
অধীর: অবশ্যই।
প্রশ্ন: এই ফল দেখে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ভবিষ্যত কী মনে হচ্ছে?
অধীর: ‘ঘুঁটে পুড়ে গোবর হাসে!’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের দখলদারি রাজনীতিতে কংগ্রেস ও বামেরা প্রায় নিশ্চিহ্ন। তাঁর দেখানো পথ ধরেই এ বার বিজেপি-র দখলদারি রাজনীতি দেখবে রাজ্য। তখন মমতার মতো রাজনৈতিক ‘ঘুঁটে’ পুড়বে, আর অন্য ‘গোবর’ হাসবে। সেই দিন সমাগত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy