Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সস্তার বিরিয়ানি, সংশয়ে মালদহ

সিনেমার মতো পাঁচ টাকায় না মিললেও বাস্তবে ৫০ থেকে ৭০ টাকায় মালদহে ঢেলে বিক্রি হয় চিকেন বিরিয়ানি। শুধু চিকেনই নয়, ৯০ টাকা খরচ করলেই পাতে পড়বে মটন বিরিয়ানিও।

প্রশ্নে: ইংরেজবাজারের অলিগলিতে গজিয়ে উঠছে দোকান। নিজস্ব চিত্র

প্রশ্নে: ইংরেজবাজারের অলিগলিতে গজিয়ে উঠছে দোকান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৩৮
Share: Save:

পাঁচ টাকায় চিকেন বিরিয়ানি। সেই ‘কাউয়া বিরিয়ানি’ খেয়ে গলা দিয়ে কাকের মতো আওয়াজ বেরতে থাকে এক খরিদ্দারের। এক দশক আগের হিন্দি সিনেমার সেই দৃশ্য টিভির পর্দায় ফুটে উঠলে আজও হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে দর্শকদের। সিনেমার মতো পাঁচ টাকায় না মিললেও বাস্তবে ৫০ থেকে ৭০ টাকায় মালদহে ঢেলে বিক্রি হয় চিকেন বিরিয়ানি। শুধু চিকেনই নয়, ৯০ টাকা খরচ করলেই পাতে পড়বে মটন বিরিয়ানিও। সস্তায় এমন জিভে জল আনা খাবার পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই নানা বয়সের ভিড় লেগে থাকে ফুটপাতের উপরের দোকানগুলোয়। কিন্তু সম্প্রতি কলকাতার বিভিন্ন রেস্তরাঁয় ভাগাড় থেকে মরা পশুর মাংস সরবরাহ করা হচ্ছে বলে খবর সামনে আসতেই ইংরেজবাজার এই খাদ্যরসিক মহলেও উদ্বেগ ছড়িয়েছে।

শহরের অলি-গলিতে গজিয়ে ওঠা সস্তার বিরিয়ানির মান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। পুরসভার নজরদারিরও দাবি তুলেছেন খাদ্য রসিকেরা।

মাত্র বছর দুয়েক হল বিরিয়ানির চল শুরু হয়েছে শহরে। বিহার থেকে কর্মী নিয়ে এসে চলছে বিরিয়ানি রান্না। এক বিরিয়ানি প্রস্তুতকারক বলেন, “বিহার থেকে প্রায় ১৫০ জন যুবক এসেছে মালদহে। প্রত্যেকেই বিরিয়ানি তৈরির কাজ করেন।” রেঁস্তরাগুলোয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিরিয়ানি মিলছে, এখানে এত সস্তা দিচ্ছেন কী ভাবে? মৃদু হেসে তিনি বলেন, “কোয়ালিটির বিষয় আছে। এর বেশি কিছু বলা যাবে না।”

শহরের সুকান্ত মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারেই রয়েছে একটি বিরিয়ানির দোকান। দোকানের একটি টেবিলে বসে একদল যুবক-যুবতী। চিকেন বিরিয়ানির অর্ডার দিয়েছেন তাঁরা। সেই টেবিলেই চলছে ২০০৫ সালের অভিষেক বচ্চন-ভূমিকা চাওলা অভিনীত হিন্দি সিনেমার পাঁচ টাকার চিকেন বিরিয়ানির গল্প। কেন সেই সিনেমার গল্প? এক যুবতী বলেন, “খবরের চ্যানেলে দেখাচ্ছে ভাগাড় থেকে মরা পশুর মাংস সংগ্রহ করে একটি চক্র বিভিন্ন হোটেলে সরবরাহ করছে। হাতেনাতে ধরাও পড়েছে। তাই বিরিয়ানির টানে রাস্তার ধারের হোটেলে এলেও মনের মধ্যে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।” শুধু সুকান্ত মোড়ই নয়, ফুলবাড়ি, মকদমপুর, অতুল মার্কেট, রথবাড়ি, স্টেশন রোড, গৌড় রোড সহ শহরের অলি-গলিতে ঘুরলেই চোখে পড়ে লাল সালুতে মোড়া হাঁড়ি।

খাবারের মান যাচাই করার দায়িত্ব পুরসভার। খাবারের দোকান খুলতে গেলে প্রয়োজন পুরসভার অনুমতি। কী ভাবে দিনের পর দিন যত্রতত্র গজিয়ে উঠছে বিরিয়ানির দোকান তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। কলেজ ছাত্রী তুলিকা সরকার, রিয়া হালদারেরা বলেন, আমরা স্বাদ খুঁজি। উন্নত মানের উপকরণ পাচ্ছি কিনা তা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘পুরসভার উচিত বিরিয়ানির দোকান পরিদর্শন করা।’’ শীঘ্রই অভিযান চালানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Biriyani Malda Cheap Cost
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE