হাতজোড়: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মন্ত্রীর কাছে হাতজোড় করে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জুনিয়র ডাক্তারদের। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
গত কয়েকদিন ধরেই হাসপাতাল সুপারের দফতরে গিয়ে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার চাইছেন জুনিয়র ডাক্তার সৌম্যদীপ রায়, শাহরিয়ার আলমরা। অথচ তা মিলছে না বলে অভিযোগ। সোমবার পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব মেডিক্যালের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে, চিকিৎসা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে সেখানে যান। তখনই তাঁর কাছে হাতজোড় করে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা করতে বারবার অনুরোধ করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এমনকী এ দিন সকালের দিকে হাসপাতালের করোনা স্ক্রিনিং সেন্টারে মাস্ক ছাড়াই তাঁদের কয়েকজনকে রোগী দেখার কাজ করতে হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন শাহরিয়ার আলমরা। তা নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘চিকিৎসক, নার্স-স্বাস্থ্য-কর্মী যারা রোগীদের পরিষেবা দিচ্ছেন তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দেখছি। ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। আপাতত মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার বা অন্য সামগ্রী যা দরকার তা রয়েছে। পিপিই-ও জরুরি পরিস্থিতির জন্য রাখা হয়েছে। আরও আসবে। জুনিয়র ডাক্তাররা তা নিয়ে সমস্যার কথা বলছেন না। তাঁদের সঙ্গে সমন্বয়ের কোনও অভাব হয়েছে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে তারা পর্যাপ্ত সরবরাহের জন্য বলেছেন। বিষয়টি যথাযথ জায়গায় জানানো হয়েছে। তার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’ সুপার বলেন, ‘‘আপাতত কাজ চালানোর মতো মাস্ক, পিপিই রয়েছে। জুনিয়র চিকিৎসক যারা পাচ্ছেন না আমাকে বলেননি। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’
চিকিৎসকদের মধ্যে যারা করোনাভাইরাস সংক্রমণ সন্দেহে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসার জন্য তাঁদের কাছে যাচ্ছেন তাঁদের এন-৯৫ মাস্ক, পার্সোন্যাল প্রটেকটেড ইকুইমেন্ট (পিপিই) পরা জরুরি। নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এমনকী সাফাই কর্মী, খাবার দেওয়ার কর্মীদেরও যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে মাস্ক, পিপিই পোশাক পরেই আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঢুকতে হয়। করোনা স্ক্রিনিং সেন্টারেও যাঁরা রোগী দেখছেন তাঁদেরও অনেক ঝুঁকি রয়েছে। সন্দেহভাজন ওই রোগীদের মধ্যে কারও সংক্রমণ ঘটে থাকলে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। তিনি বলেন, ‘‘মাস্ক, পিপিই পর্যাপ্ত নেই বলে চিকিৎসকরা অনেকেই জানিয়েছেন। হাসপাতাল সুপারকে বিষয়টি দেখতে বলেছি। এই পরিস্থিতিতে এগুলোর যথাযথ ব্যবস্থা করা দরকার।’’
এ দিন মন্ত্রী, রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য অধ্যক্ষের ঘরে আলোচনা করতে ঢুকলে জুনিয়র চিকিৎসকরা সেখানে বিষয়টি বলতে যান। হাতজোড় করে তাঁকে অনুরোধ করতে থাকেন সমস্যার কথা শোনার জন্য। আলোচনার পরে মন্ত্রী গাড়িতে উঠে চলে যাচ্ছেন দেখে জুনিয়র চিকিৎসকরা দৌড়ে সেখানে গিয়ে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার পযাপ্ত মিলছে বলে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান।
প্রতিদিনই এক-দু’জন করে সন্দেহভাজন রোগী ভর্তি হচ্ছে আইডিতে। আজ, মঙ্গলবার জেলাশাসকের উপস্থিতিতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে ‘সমন্বয় বৈঠক’ ডাকা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy