সংশয়: এনআরসি নিয়ে চর্চা চায়ের দোকানেও। মালদহে। নিজস্ব চিত্র
‘‘বাপ ঠাকুর্দার ভিটে ছেড়ে কি ফের উচ্ছেদ হতে হবে?’’— বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে কাটাতারে ঘেরা হাড়িপুকুরের ছোট চাষি মজিবর রহমানের মতো এমন প্রশ্ন তুললেন এলাকার অনেকেই। উজাল, পূর্ব আপতোর, গোবিন্দপুরের বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া কাঁটাতারের বেড়ার ও পারের গ্রামগুলিতেও কানাঘুষো ছিল এমনই।
২৪ ঘন্টা আগে সংসদে পাশ হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে এ দিন সীমান্তের ওই গ্রামগুলিতে উদ্বেগ টের পাওয়া গেল। গোবিন্দপুরের কৃষক আব্দুল মিঁয়া জানান, ভারতীয় ভূখন্ডের বাসিন্দা হয়েও তাঁদের কার্যত কাঁটাতারের বেড়ায় বন্দি হয়ে দিন কাটাতে হয়। দিনরাত বিএসএফের পাহারা ও পরীক্ষার পরে কাঁটাতারের গেট পেরিয়ে মূল ভূখণ্ডে প্রবেশের ছাড়পত্র পান সকলে। এ ভাবেই চলে ব্লক, পঞ্চায়েত ও সরকারি দফতরে কাজকর্ম, পড়ুয়াদের স্কুল, ফসল বিক্রি থেকে অন্য রোজনামচা।
বাংলাদেশের দিকে উন্মুক্ত ভারত ভুখণ্ডে অবস্থিত ওই এলাকাগুলি। আন্তর্জাতিক নিয়মে সীমান্তের ‘জিরো পয়েন্ট’ থেকে ১৫০ মিটারের পরে কাঁটাতারের বেড়া বসে যাওয়ায় এমনই পরিস্থিতিতে রয়েছেন ওই সব বসতির বাসিন্দারা। তার উপরে এনআরসি ও নাগরিক সংশোধন বিলের জেরে দেশ হারানোর আতঙ্ক চেপে বসেছে বাসিন্দাদের মধ্যে।
এলাকাবাসীর অনেকের বক্তব্য, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরে তাঁদের বাপ-ঠাকুর্দা এপারে থেকে যান। অনেকে পূর্ব পাকিস্তানে (অধুনা বাংলাদেশ) থাকতে না পেরে এপারে এসে বসবাস শুরু করেন। ভয় ছড়িয়েছে, নাগরিকত্ব বিলের কোপে তাঁরাও কি পড়তে চলেছেন?
ওই আশঙ্কা দূর করতে এখনও পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সেখানে যাননি বলে অভিযোগ। এ দিন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস মজুমদার বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে খুব দ্রুত জনমত গড়ে তুলতে আন্দোলন হবে।’’ বিজেপির জেলা নেতা বাপি সরকারের কথায়, ‘‘সীমান্তবাসীর অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বরং নাগরিক সংশোধন বিল পাশ হওয়ার পরে শাসকদল গুটিয়ে গিয়েছে।’’ গ্রামগঞ্জে গিয়ে মানুষকে বিষয়টি নিয়ে বোঝানোও হচ্ছে বলে বাপি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy