Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পাঙ্গা নদী দেখলেন বিশেষজ্ঞরা

দূষণের কারণ জানতে পাঙ্গা নদী এবং সংলগ্ন এলাকার জলাশয়ের জলের নমুনা সংগ্রহ করলেন সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অব ফ্রেশ ওয়াটার অ্যাকোয়া কালচারের বিশেষজ্ঞ দল। মৎস্য দফতরের আবেদনে কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সংস্থার দু’জন বিশেষজ্ঞ, পার্থপ্রতিম চট্টোপাধ্যায় এবং জলজ উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ এস মণ্ডল মঙ্গলবার দুপুরে পাঙ্গা নদী ও সংলগ্ন এলাকায় যান। পরীক্ষার জন্য জলের নমুনা সংগ্রহ করে এলাকার ছবিও তোলেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৫ ০২:৩৮
Share: Save:

দূষণের কারণ জানতে পাঙ্গা নদী এবং সংলগ্ন এলাকার জলাশয়ের জলের নমুনা সংগ্রহ করলেন সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অব ফ্রেশ ওয়াটার অ্যাকোয়া কালচারের বিশেষজ্ঞ দল। মৎস্য দফতরের আবেদনে কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সংস্থার দু’জন বিশেষজ্ঞ, পার্থপ্রতিম চট্টোপাধ্যায় এবং জলজ উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ এস মণ্ডল মঙ্গলবার দুপুরে পাঙ্গা নদী ও সংলগ্ন এলাকায় যান। পরীক্ষার জন্য জলের নমুনা সংগ্রহ করে এলাকার ছবিও তোলেন তাঁরা।

কেন মাছের মড়ক দেখা দিয়েছে সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা এ দিন অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি। তাঁরা কেবল বলেন, “জলের নমুনা পরীক্ষার পরে রাজ্য মৎস্য দফতর ও প্রশাসনের কর্তাদের কাছে দ্রুত রিপোর্ট পাঠানো হবে।” জেলা মৎস্য আধিকারিক পার্থপ্রতিম দাস বলেন, “দুজন বিশেষজ্ঞ সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখেছেন। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের রিপোর্ট দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে কেবল পাঙ্গা নদী নয়, নদী লাগোয়া বাড়ির কুয়োর জলে স্নান করায় এলাকা জুড়ে চর্ম রোগ ছড়ানোর অভিযোগও উঠেছে। এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল রানিনগর শিল্প তালুক লাগোয়া কায়েতপাড়া, বানিয়াপাড়া, ভুসাপাড়া, শুকুরপাড়া ঘুরে দেখেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, “মেডিক্যাল টিম এলাকায় পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নদীর জলে নামতে বারণ করা হয়েছে। একটি কুয়ো চিহ্নিত করে সেখানকার জল যেন কেউ ব্যবহার না করে সেটাও বলা হয়েছে।’’ ব্লক প্রশাসনকে বিকল্প পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য আর্জি জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।

কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের অনুরোধে কতটা দ্রুত কাজ হবে তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সন্দিহান। তাঁদের অভিযোগ, ব্লক প্রশাসনের কাছে কয়েক দফায় সমস্যার কথা জানিয়ে কোন লাভ হয়নি। এতদিন পরে স্বাস্থ্য দফতরের দল পাঠানো হল। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “বুধবার এলাকা ঘুরে মুখ্যমন্ত্রীকে পরিস্থিতির কথা জানাব।” তিনিও প্রশ্ন তুলেছেন কেন এতদিনেও এলাকায় বিকল্প পানীয় জলের ব্যবস্থা হল না?

জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিডিও শ্রদ্ধা সুবা বলেন, “জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মাধ্যমে পরীক্ষার জন্য কুয়োর জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ওখানে নলকূপ বসিয়ে বিকল্প পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। রিপোর্ট পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মঙ্গলবারেও এলাকার বাসিন্দাদের কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে সাইকেলে জল বয়ে আনতে দেখা গিয়েছে। সদর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি রাখি বর্মন বলেন, “বাইরে থেকে এলাকায় জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো যায় কি না সে বিষয়ে এ দিন জনস্বাস্থ্য বিভাগের সভায় আলোচনা হয়েছে।”

রবিবার সকালে কায়েতপাড়া এলাকায় পাঙ্গা নদীতে প্রচুর মাছ ভাসতে দেখে উত্তেজনা ছ়ড়ায়। ওই রাতে নদী লাগোয়া অন্তত ২০টি জলাশয়ে মাছ ভেসে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শিল্প তালুকের বর্জ্য পদার্থে নদী-সহ এলাকার ভূগর্ভস্থ জলস্তর দূষিত হয়ে ওঠায় ওই সমস্যার সৃষ্টি হয়। গত ৪ মে বর্জ্য পদার্থে নদী দূষণের অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দারা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান। কিন্তু তার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচার রিসার্চ-এর ভুবনেশ্বর শাখা সদস্য স্থানীয় বাসিন্দা কৃপাণ সরকার বলেন, “উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সোমবার এলাকার জলের নমুনা পরীক্ষা করে জানান, অক্সিজেনের মাত্রা উদ্বেগজনক ভাবে কমেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE