Advertisement
E-Paper

স্মৃতি আঁকড়ে বাঁচতে চান রাজেশের মা

কান্না থামেনি মমতাদেবী। এ দিনও রাজেশের পরনের জামাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন তিনি।

পাপাই বাগদি

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ০১:৫৯
ফুলে ঢাকা রাজেশ ওরাংয়ের সমাধি। নিজস্ব চিত্র

ফুলে ঢাকা রাজেশ ওরাংয়ের সমাধি। নিজস্ব চিত্র

ছেলে নেই। আছে কেবল স্মৃতি। তা আঁকড়েই বাঁচতে চাইছেন নিহত জওয়ানের মা।
তিনদিনের জনজোয়ার শেষ। নিস্তব্ধ ভূতুরা পঞ্চায়েতের বেলগড়িয়া গ্রাম। সেই গ্রামেরই ছেলে, নিহত জওয়ান রাজেশ ওরাংয়ের বাড়িতে গত কয়েকদিন ভিড় করেছিলেন চেনা-অচেনা মানুষেরা। রাজেশকে শ্রদ্ধা জানাতে। শনিবার সেই বাড়িতেই দেখা গেল বারান্দার সামনে রাখা হয়েছে রাজেশের ছবি। সাজানো হয়েছে ফুল দিয়ে। বাড়ির ভিতর শো-কেসের সামনেই রাখা হয়েছে রাজেশের শেষ স্মৃতিচিহ্ন, পরনের পোশাক, বেল্ট, টুপি ও মেডেল। সেই স্মৃতিই আঁকড়ে ধরেছেন রাজেশের মা মমতাদেবী।

কান্না থামেনি মমতাদেবী। এ দিনও রাজেশের পরনের জামাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সবই তো শেষ হয়ে গেল। ছেলেটা হারিয়ে গেল। তাই যদি প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজেশের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য গ্রামে কিছু স্মৃতিচিহ্ন করে তাহলে সকলের কাছেই বেঁচে থাকবে রাজেশ।’’

রাজেশের স্মৃতি কীভাবে রক্ষা করা যায় তা ঠিক করতেই এ দিন গ্রামবাসীদের নিয়ে আলোচনা সভায় বসেন মহম্মদবাজার ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তাপস সিংহ, কার্যকারী সভাপতি কালীপ্রসাদ বন্দোপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা শান্তনু চক্রবর্তী ও বুবাই সরকাররা। গ্রামের বাসিন্দা শিবনাথ ওরাং, বাপি ওরাং, হারাধন ওরাং, উৎপল ওরাংরা বলেন, ‘‘এতদিন এলাকার মানুষ ছাড়া কেউ চিনতো না বেলগড়িয়া গ্রামকে। রাজেশের জন্য সবাই গ্রামকে চিনেছে। তাই আমাদের দাবি সেই রাজেশকে মনে রাখার জন্য রাজেশের নামে বানানো হোক রাস্তা, খেলার মাঠ, ও প্রাথমিক বিদ্যালয়।’’ গ্রামে জলের ব্যবস্থা ও বড় আলোরও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তাপস সিংহের দাবি, সমস্ত দাবিই পূরণ করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘এই গ্রাম তৈরি হবে মডেল গ্রামে। হবে প্রাথমিক বিদ্যালয়। যার নাম দেওয়া হবে রাজেশর নামে। হবে ফুটবল মাঠ, দুটি সাবমার্সিবল পাম্প লাগিয়ে গোটা গ্রামে দেওয়া হবে জলের পাইপ লাইন। জাতীয় সড়কের মুখ থেকে গোটা গ্রামের রাস্তা পাকা করা হবে। যার নাম দেওয়া হবে রাজেশের নামে।’’ শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের সংস্কার ও আলো লাগানোর আশ্বাসও দেন তিনি।
এই আশ্বাস পেয়ে রাজেশের মা মমতাদেবী বলেন, ‘‘আমার জীবনে এখন রাজেশের স্মৃতি ছাড়া আর কিছুই নেই। তাই গ্রামবাসীদের উদ্যোগে ও প্রশাসনের সহযোগিতায় যদি এই সমস্ত স্মৃতিচিহ্ন বানানো হয় তাহলে এর থেকে খুশির আর কী হতে পারে। ছেলে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। বাড়ি থেকে বেরিয়েই যদি তার স্মৃতি দেখতে পাই সেটাই আমার কাছে এই জীবনের বড় পাওয়া।’’

India China Rajesh Orang Birbhum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy