Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
TMC

পিঠোপিঠি সভা, তেতে কেশপুর

বৃহস্পতিবার বিজেপির সভায় থাকার কথা শুভেন্দু অধিকারী, ভারতী ঘোষদের।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৩৪
Share: Save:

বিজেপি এবং তৃণমূল। যুযুধান দুই দলের পিঠোপিঠি সভা হতে চলেছে কেশপুরের আনন্দপুরে। আর তা ঘিরে শীতেও হাওয়া গরম হতে শুরু করেছে এই এলাকায়।

পরশু, বৃহস্পতিবার বিজেপির সভায় থাকার কথা শুভেন্দু অধিকারী, ভারতী ঘোষদের। পর দিন, শুক্রবার একই মাঠে সভা তৃণমূলের। সেখানে থাকার কথা অজিত মাইতি, মানস ভুঁইয়াদের। শুভেন্দুদের সভা শুরুতে ঠিক ছিল, ১৬ জানুয়ারি হবে। পরে ঠিক হয়েছিল, ২০ জানুয়ারি সভা হবে। পরে ফের দিন পিছিয়ে ২১ জানুয়ারি সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই মাঠে ২২ জানুয়ারি সভা করবে তৃণমূল।

তৃণমূলের অবশ্য দাবি, তারা পাল্টা কোনও কর্মসূচি করছে না। ২২ জানুয়ারির সভা পূর্ব নির্ধারিত। দলের এক সূত্রে যদিও খবর, রবিবার মেদিনীপুরে জেলা তৃণমূলের বৈঠকেই কেশপুরের সভার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়েছে। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আনন্দপুরে ২১ জানুয়ারি আমাদের সভার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।’’ রবিবারই সভার মাঠ পরিদর্শন করেছেন অন্তরারা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন এলাকায় আমরা সভা করছি। আনন্দপুরে ২২ জানুয়ারির সভা পূর্ব নির্ধারিত। এখানে পাল্টার কিছু নেই। বিজেপিকে নিয়ে আমরা ভাবছি না।’’ সভার প্রস্তুতি হিসেবে সোমবার কেশপুরে তৃণমূলের এক বৈঠক হয়েছে।

বাম-আমলে কেশপুর ‘লালদুর্গ’ ছিল। তখন থেকেই গ্রাম দখলের সংঘর্ষ, সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের দাপট, একবগ্গা রাজনীতি দেখে অভ্যস্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের এই জনপদ। রাজ্যে পালাবদলের পরে সিপিএম এখানে ক্ষয়িষ্ণু হতে শুরু করে। দাপট বাড়ে তৃণমূলের। গত কয়েক বছরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে এলাকা। গত লোকসভা ভোটের পর থেকে শক্তিবৃদ্ধি হচ্ছে বিজেপিরও। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেই পিঠোপিঠি সভা হতে চলেছে বিজেপি এবং তৃণমূলের। অশান্তি এড়াতে সভার দু’দিনই কেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশি নজরদারি থাকতে পারে।

কেশপুরের শুভেন্দু-অনুগামীদের অবস্থান নিয়ে অবশ্য ধন্দ রয়েছে। এক সময়ে চুটিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় দলহীন জনসংযোগে সামাজিক কর্মসূচি করেছেন শুভেন্দু-অনুগামীরা। কেশপুরে অবশ্য এমন কর্মসূচি দেখা যায়নি। তবে কি কেশপুরে শুভেন্দু-অনুগামী নেই? তৃণমূলের অতি বড় সমর্থকও মানছেন, এখানেও ‘দাদার অনুগামী’ রয়েছেন। তবে পুলিশি হেনস্থার ভয়ে তাঁরা প্রকাশ্যে কর্মসূচি নেননি। তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি উত্তম ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘কেশপুরে বিজেপির তেমন সংগঠনই নেই। আমাদের পাকাপোক্ত সংগঠন রয়েছে। কেশপুরের মানুষও তৃণমূলের পাশে রয়েছেন।’’ আর ‘দাদার অনুগামী’? উত্তমের মন্তব্য, ‘‘প্রকাশ্যে তো কিছু নেই। ভিতরে ভিতরে কে অনুগামী কী করে বলি!!’’

গত বছর সঞ্জয় পানকে সরিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি করা হয় উত্তমকে। সঞ্জয় শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। পদ হারিয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন সঞ্জয়। তৃণমূলের কর্মসূচিতে তাঁকে তেমন দেখা যায় না। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে? সোমবার সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমার পেশা ব্যবসা। রাজনীতি নয়। রাজনীতি করে যাঁদের খেতে হয়, তাঁরা দলবদল করেন।’’ তাহলে তৃণমূলেই থাকছেন? সঞ্জয়ের কৌশলী জবাব, ‘‘আমি এখন আমি- তেই আছি! অন্য কিছুতে নয়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Keshpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE