Advertisement
০৫ মে ২০২৪
National news

শুধু সীমান্তের নয়, গণতন্ত্রেরও প্রহরী তাঁরা, প্রমাণ করল সেনা

রাজা তোর কাপড় কোথায়? জিজ্ঞাসা করার সাহস কারও হচ্ছিল না। দু’একটা কণ্ঠস্বর বিক্ষিপ্ত দুঃসাহসে মাথা তোলার চেষ্টা অবশ্যই করেছিল। কিন্তু স্বঘোষিত দেশভক্তকুল ‘দেশপ্রেম’-এর আদালতে তৎক্ষণাৎ প্রমাণ করে দিয়েছিল, ওই সব কণ্ঠস্বর আসলে দেশদ্রোহীদের। তবু সত্যটা চাপা দেওয়া গেল না।

ভারতীয় সেন।

ভারতীয় সেন।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৫৭
Share: Save:

রাজা তোর কাপড় কোথায়? জিজ্ঞাসা করার সাহস কারও হচ্ছিল না। দু’একটা কণ্ঠস্বর বিক্ষিপ্ত দুঃসাহসে মাথা তোলার চেষ্টা অবশ্যই করেছিল। কিন্তু স্বঘোষিত দেশভক্তকুল ‘দেশপ্রেম’-এর আদালতে তৎক্ষণাৎ প্রমাণ করে দিয়েছিল, ওই সব কণ্ঠস্বর আসলে দেশদ্রোহীদের। তবু সত্যটা চাপা দেওয়া গেল না। কাপড় যে অঙ্গ থেকে খসে গিয়েছে, খুব বলিষ্ঠ এক কণ্ঠস্বর থেকে সে সত্যের স্পষ্ট উচ্চারণ আর রোখা গেল না।

ভারতের স্বনিয়োজিত ‘রক্ষাকর্তা’রা বলছিলেন, বলিউডের যে ছবিতে পাক অভিনেতা কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন, ‘দেশভক্তি’র গাঙে ভরা জোয়ারের মরশুমে সে ছবিকে কিছুতেই মুক্তি পেতে দেওয়া চলে না। অনেক অনুনয়-বিনয়ে মুক্তির পথ খুলল, কিন্তু প্রায়শ্চিত্তের শর্তে। প্রায়শ্চিত্ত কী? সেনা কল্যাণ তহবিলে ৫ কোটি টাকা।

সেনা কল্যাণ তহবিলে অনুদান নিঃসন্দেহে মহত্ বিষয়। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে হয়তো জরুরিও। কিন্তু অনুদান আদায়ের এ কোন প্রক্রিয়া? অনুদানের নিদান যাঁরা দিচ্ছেন, তাঁরাই বা প্রায়শ্চিত্তের প্রয়োজনীয়তা এবং শর্ত নির্ধারণের কর্তৃত্ব কোথা থেকে পেয়েছেন? প্রশ্নগুলো সজাগ ছিল হয়তো আমাদের অনেকেরই মনে। কিন্তু উচ্চারণ সম্ভব হয়ে উঠছিল না সর্বাংশে। উহ্য থাকছিল অনেক কিছুই। শাসক-বিরোধীর মধ্যে প্রবল বিতণ্ডা-কোলাহলের মাঝেও রাজনৈতিক রং নির্বিশেষে সমগ্র ভারতবাসীর সমীহ ও সম্মানের কেন্দ্রবিন্দুতে যাঁরা, সেই সেনাবাহিনী কিন্তু জরুরি উচ্চারণটা শুনিয়ে দিল। ভারতের সশস্ত্র বাহিনী রাজনীতির অংশ হতে চায় না, অনুদানের নামে তোলাবাজিকেও প্রশ্রয় দিতে চায় না— জানিয়ে দিলেন সশস্ত্র বাহিনীর একাধিক প্রবীণ-নবীন।

বহুবার দেশকে গৌরবান্বিত করেছে সেনা। সীমান্তে তাঁদের অতন্দ্র প্রহরা ভারতবাসীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে। প্রতিপক্ষের সামনে তাঁদের অমিতবিক্রম এ দেশের সার্বভৌমত্বের নিশ্চয়তা দিয়েছে। সেই সশস্ত্র বাহিনীই আজ আবার ভারতের মুখ উজ্জ্বল করল। দেশের আসল সৈনিকরা প্রমাণ করলেন, শুধু সীমান্তের প্রহরী নন, এ দেশের গণতন্ত্রেরও অতন্দ্র প্রহরী তাঁরা। গৌরবে আজ আবার উঁচু মাথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE