শ্রীরামপুর শহরে সম্প্রতি ডেনিশ মিউজ়িয়ামের আর্থিক সহায়তায় সেন্ট ওলাভ চার্চ, ডেনিশ গভর্নরস হাউস, ডেনমার্ক ট্যাভার্ন-এর সংস্কার হয়েছে এবং এগুলি নতুন রূপে সেজে উঠেছে। ডেনিশ সমাধিক্ষেত্রটিরও সংস্কার হচ্ছে। কিন্তু দুঃখের কথা উইলিয়াম কেরি এবং তাঁর সহযোগীরা— যাঁরা শিক্ষার প্রসার, বাংলা হরফ নির্মাণ ও প্রথম বাংলা ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা, স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করে বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতিকে চিরঋণী করে গিয়েছেন, তাঁদের সমাধিক্ষেত্রটি অশ্রদ্ধায়, অবহেলায় শহরের এক কোণে পড়ে আছে। স্মৃতিফলকগুলিতে উৎকীর্ণ নামগুলি পড়া যায় না, এলাকাটি অপরিষ্কার ও জংলি ঘাসে ভরা। বোঝা যায় তাঁরা ডেনিশ না হওয়ায় ডেনিশ অর্থানুকূল্য এখানে পৌঁছয়নি। শ্রীরামপুর কলেজ এবং পুরসভার আশু কর্তব্য সমাধিক্ষেত্রটি এবং ফলকগুলি সংস্কার করা।
এ ছাড়াও বাংলা এবং ইংরাজিতে সেই সময়কার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস পরিষ্কার করে লেখা থাকা উচিত সমাধিক্ষেত্রটিতে।
ত্রিদিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়
শ্রীরামপুর, হুগলি
এই নামগুলো...
‘পশ্চিমে বঙ্গ’ ক্রোড়পত্রে প্রাচীন দুই প্রযোজনা সংস্থা বোম্বে টকিজ় এবং নিউ থিয়েটার্স নিয়ে পৃথক লেখা না থাকাটা বিস্মিত করেছে। তেমনই আহত করেছে চলচ্চিত্রকার হিসেবে অসিত সেনের নাম কোথাও না থাকাটা। আমাদের তো ‘সফর’ বা ‘মমতা’ ইত্যাদি ছবির নাম এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়ার কথা নয়। বোম্বে টকিজ়ের কর্ণধার হিমাংশু রায়ের বিপুল অবদানের কথা বিস্মৃত হয়ে খুব দায়সারা ভাবে তাঁর উল্লেখ করা হয়েছে একটা লেখায়। বোম্বে টকিজ় ছাড়া ভারতীয় ছবির গোড়ার দিক নিয়ে যে কোনও আলোচনাই অসম্পূর্ণ।
কাননদেবীর সর্বভারতীয় নক্ষত্র (গায়িকা-নায়িকা) হয়ে ওঠার কথা সংক্ষেপে উল্লিখিত হয়েছে অথচ ‘নিউ থিয়েটার্স’ ও তার কর্ণধার বি এন সরকারের অবদানের আলোচনা বাদ থেকে গিয়েছে। নিউ থিয়েটার্স-এ নির্মিত হিন্দি ছবিগুলি (মূলত দ্বিভাষিক) সর্বভারতীয় স্তরে প্রশংসিত হওয়াতেই কাননদেবী-সায়গল-পাহাড়ী সান্যালদের সর্বভারতীয় খ্যাতি জুটেছিল।
‘ভুবন সোম’ (মৃণাল সেন) কি হিন্দি ছবির ইতিহাসে সম্পূর্ণ এক নতুন ধারার সৃষ্টিকারী ছবি হিসেবে পৃথক আলোচনার দাবি করে না? ছবি হিসেবে ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’-র (সত্যজিৎ রায়) উল্লেখও থাকবে না, ‘কল্পনা’ (উদয়শঙ্কর) করতে পারিনি।
‘গায়ক’ কিশোরকুমার যথাযথ মর্যাদা পেলেও ‘নায়ক’ কিশোরকুমার (‘চলতি কা নাম গাড়ি’, ‘ঝুমরু’ ইত্যাদি) কেমন চাপা পড়ে থাকলেন। অথচ এক সময় নায়ক কিশোরকুমারের জনপ্রিয়তা দিলীপকুমার-রাজ কপূরের জনপ্রিয়তাকেও চ্যালেঞ্জ জানাত। তেমনই সুরকার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের ঠেলায় ‘গায়ক’ হেমন্তকুমার কেমন চুপসে রইলেন। অথচ রাজেশ খন্না-কিশোরকুমারের জুটির মতো দেব আনন্দ-হেমন্ত জুটিও (‘হাউস নম্বর ৪৪’, ‘জাল’, ‘পতিতা’ ইত্যাদি) জনপ্রিয় ছিল।
শেষে একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘বাদ’ পড়ার কথা উল্লেখ করি। বলিউডে বাঙালিরা চিত্রনাট্যকার হিসেবেও প্রতিষ্ঠালাভ করেছেন। সেই কোন কালে হিমাংশু রায়ের আহ্বানে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বোম্বে টকিজ়ের সঙ্গে গল্পকার ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন সময়ে নব্যেন্দু ঘোষ, শচীন ভৌমিকরা এই শাখাটিকে সমৃদ্ধ করেছেন। স্বয়ং ঋত্বিক ঘটক, বিমল রায় পরিচালিত ‘মুসাফির’ এবং ‘মধুমতী’ ছবি দু’টির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন। তা ছাড়া হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় ও অসিত সেন নিজেদের ছবির চিত্রনাট্য নিজেরাই লিখতেন।
সোমনাথ রায়
কলকাতা-১৫
ছট পুজোর দূষণ
মিহির ভট্টাচার্যের ‘তখন তো প্রশ্ন নেই’ (২০-১১) পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানাই, আমি তিন বার (১৯৬৭, ’৭৬ ও ’৯৪) বারাণসীতে গিয়েছি। সন্ধ্যায় গঙ্গাপাড়ে ঘুরেও বেড়িয়েছি। দেশি-বিদেশি বেশ কিছু পর্যটকের ও স্থানীয়দের জমায়েতও দেখেছি। কিন্তু গঙ্গাদূষণ (‘গঙ্গাবক্ষে ভাসমান অসংখ্য প্রদীপের দৃশ্য’) উপভোগ করতে ‘লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থীর আবেগাপ্লুত সমাবেশ’ দেখিনি। বিশেষ ভাবে ‘লক্ষ লক্ষ’ কথাটির উপর জোর দিচ্ছি। কিন্তু যদি তা সাম্প্রতিক কালে হয়েও থাকে, তাকে যুক্তি হিসেবে খাড়া করে পশ্চিমবঙ্গে ছট পুজোর আরাধনা গঙ্গাবক্ষে বা রবীন্দ্র সরোবরে হওয়াকে সমর্থন করা যায় কি? মনে রাখতে হবে, গঙ্গাদূষণ রোধে সম্প্রতি এক পরিবেশকর্মী: অধ্যাপক জি ডি আগরওয়াল ১১১ দিন অনশন করে প্রাণ দিয়েছেন। আর রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো নিয়ে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল (এনজিটি)-র যে রায় আছে, তা লেখকের মতকে সমর্থন করে না। দু’বছর আগে রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজোর উপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেও এনজিটি তার রায়ে পরবর্তী ক’বছর এই শর্তে ছাড় দিয়েছিল যে, ২০১৮ সাল থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে হবে। তা না করা হলে, জবাবদিহির দায় আইনরক্ষকদের উপরেই বর্তায়।
রবি রায়
কোন্নগর, হুগলি
পাখিরা?
কলকাতায় সামান্য যে ক’টি জলাশয় আছে যেখানে এই সময়েই পরিযায়ী পাখি আসে, রবীন্দ্র সরোবর তার অন্যতম। যদিও যে কোনও জলাশয়েই দূষণ কাম্য নয়, কিন্তু গঙ্গা নদীর প্রবহমান জলে দূষিত পদার্থের লঘুকরণ হয়ে তার প্রভাব কমে যায়, কিন্তু একটি বদ্ধ জলাশয়ে তা কী ভাবে সম্ভব? তা ছাড়া ছট পুজোর সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানো হয়েছে। যেখানে আমরাই শব্দবাজির প্রকাণ্ড আওয়াজে অতিষ্ঠ হয়ে উঠি, সেখানে পাখিদের কী অবস্থা হতে পারে! এই ঘটনার পর ওখানে পাখির সংখ্যা শুধু বিপুল কমেই যায়নি, বেশ কিছু পাখি মারাও যায়। যে সব পাখি এখনও কলকাতার নোংরা খাল, বড় নর্দমাতেও নিজেদের বাঁচিয়ে রেখেছে, সেই সব বকও (Indian pond heron) ওখানে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে পারেনি।
তন্ময় দত্ত
কলকাতা-৬৫
জেল হোটেল
‘তারকা-হোটেলের সঙ্গে নয়া জেলের তুলনা টানলেন মন্ত্রী’ (১৫-১১) শীর্ষক খবরটি পড়ে হতবাক হলাম। বারুইপুরে ধোপাগাছিতে ১৮ একর জলা জমিতে একটি সংশোধনাগার তৈরি হয়েছে এবং মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী দূর থেকে উদ্বোধনও করেছেন। কারা উপদেষ্টা বংশীধর শর্মার মতে এ জন্য ১৩টি বড় পুকুরও ভরাট করতে হয়েছে। জলাভূমি সংরক্ষণ আইন আমাদের দেশে এখনও বলবৎ আছে বলে জানি। উন্নয়ন করতে গিয়ে সরকার আইনের তোয়াক্কা করল না কেন? তা ছাড়া কোনও সংশোধনাগার জনগণের দর্শনীয় স্থান হয় কি?
পদ্মলোচন মাহাতো
ফুলতলা, বারুইপুর
যদি বার বার
নতুন জেল তারকা হোটেলের মতো হলে, দুষ্কৃতীরা বার বার দুষ্কর্ম করার জন্য উৎসাহী হবে না তো? সমাজে দুষ্কর্ম করে যারা সাজাপ্রাপ্ত তারা যদি এত সুখে তারকা-হোটেলে থাকতে পারে, তাও একেবারেই বিনা খরচায়, কী মজা বলুন তো!
হেম নাথ দাস
কলকাতা-১৫০
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
ভ্রম সংশোধন
‘বিরাট শীর্ষেই, চারে উঠে এলেন পূজারা’ (খেলা, পৃ ১৬, ১২-১২) শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে স্টিভ স্মিথের পয়েন্ট ৯৪৭, চেতেশ্বর পূজারার ৮৮৮। যা হবে ৯০১ ও ৮৪৬। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy