কেশপুরে তৃণমূল কর্মীদের হুমকি ভারতী ঘোষের। —নিজস্ব চিত্র।
শোনা যায়, উর্দি পরে তিনি আসলে শাসক দলের হয়ে কাজ করতেন। শোনা যায়, তাঁর গায়ে উর্দি থাকাকালীন তাঁর কর্মক্ষেত্রে সন্ত্রস্ত থাকতেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নেতা-কর্মীরা। শোনা যায়, উর্দি থাকাকালীন তিনিই ছিলেন পুলিশ, তিনিই ছিলেন নেতা, তিনিই দিতেন ধমক-চমক-হুমকি-শাসানি।
এখন তিনি উর্দিতে নেই আর। শিবিরও বদলেছেন। রাজ্যের শাসককে ছেড়ে দেশের শাসকের দিকে এখন। কিন্তু ধমক-চমক-হুমকি-শাসানির সেই পুরনো অভ্যাস সম্ভবত যায়নি।
প্রকাশ্যে এসেছে একটা ভিডিয়ো। তাতে দেখা যাচ্ছে কর্মী-সমর্থক, লোক-লস্কর পরিবৃত হয়ে ভারতী ঘোষ শাসাচ্ছেন তৃণমূলের কিছু কর্মী সমর্থককে। কী ভাবে ঘর থেকে টেনে বার করবেন, কী ভাবে মারবেন, কী ভাবে উত্তরপ্রদেশ থেকে এক হাজার ছেলে এনে নিজের দাপট বুঝিয়ে দেবেন, কী ভাবে তৃণমূলকে ঘরে ঢুকিয়ে দেবেন— আস্ফালনের ভঙ্গিতে সে সব বলতে দেখা যাচ্ছে ঘাটাল কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে।
এক জন আইপিএস অফিসার ছিলেন ভারতী ঘোষ। এখন হয়েছেন রাজনৈতিক নেত্রী, সামিল হয়েছেন দেশের আইনসভায় যাওয়ার দৌড়ে। এই রকম এক জন কী ভাবে আইনকানুনের এই চূড়ান্ত লঙ্ঘন ঘটালেন! বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন ভারতী ঘোষরা। কোনও অজুহাতেই কি এই রকম অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপে নেমে পড়া সাজে? কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ যদি থাকে তাঁর, আইনানুগ পথে পদক্ষেপ করার সুযোগ রয়েছে। তা না করে আইনকে নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। এই ভূমিকা অত্যন্ত নিন্দনীয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে এসে যাবতীয় গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ভেঙে দেওয়া যায় কী ভাবে!
এ দেশের রাজনীতিতে বিভিন্ন দলের মধ্যে তিক্ত সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু দায়িত্বশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হলে সে সব তিক্ততার অবসান ঘটানোর লক্ষ্যেই কাজ করা উচিত। যে পর্যায়ের রাজনৈতিক অসৌজন্য ভারতী ঘোষ দেখালেন, তা সমর্থনযোগ্য তো নয়ই, অপরাধমূলকও।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে বার করে কুকুরের মতো মারব, তৃণমূল কর্মীদের হুমকি দিলেন ভারতী ঘোষ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy