Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

এ তিরস্কার প্রশংসনীয়, কিন্তু ক্ষতিপূরণ হয় কি?

হ্যাঁ, ক্ষতিটা বারবারই হচ্ছে। খুব বেশি অতীতচারী হওয়ার প্রয়োজন নেই।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৯ ০০:১১
Share: Save:

অত্যন্ত অসংবেদনশীল মন্তব্য। তার জন্য কঠোর তিরস্কারও। ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী হিংসা প্রসঙ্গে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা স্যাম পিত্রোদা যা বলেছেন, সে মন্তব্যকে কোনও ভাবেই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী অনুমোদন করেননি। পিত্রোদার মন্তব্যের কঠোর নিন্দা করেছেন রাহুল। বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য পিত্রোদা ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এই তিরস্কারে বা এই ক্ষমা যাচনায় আদৌ কি কিছু মেরামত হয়? ক্ষতি যা হওয়ার, তা তো হয়েই যায় বার বার।

হ্যাঁ, ক্ষতিটা বারবারই হচ্ছে। খুব বেশি অতীতচারী হওয়ার প্রয়োজন নেই। ২০১৭ সালে গুজরাত বিধানসভার নির্বাচনের আগেই এ ভাবে বেফাঁস মন্তব্য করেছিলেন আর এক কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ার। প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যে মন্তব্য মণিশঙ্কর সে সময়ে করেছিলেন, সুস্থ রাজনৈতিক রুচিতে তার স্থান নেই। সে বারও মন্তব্যটা অনুমোদিত হয়নি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব দ্বারা। মণিশঙ্কর আইয়ারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেছিলেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু আবার সেই প্রশ্নই তুলতে হচ্ছে। এই তিরস্কার বা এই সাজা কি আদৌ ক্ষতস্থান ভরাট করতে পারে? ক্ষতি যা হওয়ার, তাতো হয়েই যায়।

অসংবেদনশীল মন্তব্য যে জনমানসে ইতিবাচক ছাপ ফেলে না, তার প্রমাণ বারবার মিলেছে। কখনও দিগ্বিজয় সিংহ, কখনও শশী তারুর, কখনও স্যাম পিত্রোদা— যে সব বিতর্কিত মন্তব্য ছিটকে এসেছে এঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে, সে সব মন্তব্যকে জনসাধারণ যে ভাল চোখে দেখেননি, বিভিন্ন নির্বাচনের ফলাফলে তার প্রমাণ মিলেছে। তার মানে এই নয় যে, দিগ্বিজয় বা শশী বা অন্য কারও করা যে সব মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, সেই সবগুলো মন্তব্যই বেঠিক। যুক্তির মাপকাঠিতে বিচার করা হলে ওই বিতর্কিত মন্তব্যগুলোর কোনও কোনওটাকে আদ্যন্ত অবান্তর বলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। কিন্তু কোন কথাকে কী ভাবে রাখতে হয় জনপরিসরে, কোন যুক্তিকে কী ধরনের মোড়কের মধ্যে স্থাপন করলে জনাবেগ আহত হয় না, তাও রাজনীতিকদের বোঝা দরকার, অবশ্যই বোঝা দরকার।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন: শিখ দাঙ্গা নিয়ে মন্তব্যে চরম ক্ষুব্ধ রাহুল, ক্ষমা চাইলেন পিত্রোদা

এইসব মন্তব্যের কারণে যে ক্ষতি হওয়ার কথা বলছি, তা শুধুমাত্র কোনও একটি দলের রাজনৈতিক লাভ-লোকসানের প্রেক্ষিতে বলছি না। বলছি একটা সামগ্রিক নৈতিক ক্ষতির কথা। যাঁরা এ সব মন্তব্য করে বিতর্কে জড়াচ্ছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই সর্বভারতীয় স্তরে পরিচিত রাজনৈতিক নেতা। তাঁরা আগামী দিনেও রাজনীতিতেই থাকবেন এবং রাষ্ট্র চালনায় নানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন। তাই আরও দায়িত্ববোধের সঙ্গে মন্তব্য করা উচিত। নেতা হিসেবে গোটা দেশ যাঁদের দেখবে, রাষ্ট্র চালনায় যাঁদের ভূমিকা থাকবে, তাঁদের প্রতি চিরতরে কোনও বিরূপ ধারণা জনমানসে তৈরি হয়ে যাওয়া কখনই কাঙ্খিত নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE