জেন অস্টিন আর দশ পাউন্ডের নোট
শ্রদ্ধার্ঘ্য: ইংল্যান্ডে দশ পাউন্ডের নোটের উপর জেন অস্টিন-এর ছবি
নীরদ সি চৌধুরীর প্রিয় লেখক ছিলেন জেন অস্টিন, আর প্রিয় বই প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস। জেন অস্টিনের মৃত্যুর দুশো বছর পেরিয়েছে, সেই উপলক্ষে ইংল্যান্ডে ১০ পাউন্ডের নোটের উপর প্রকাশিত হয়েছে ওঁর ছবি। নীরদবাবু দেখে খুশি হতেন নিশ্চয়ই। নোটে অস্টিনের ছবির নীচে একটা উদ্ধৃতি, যার বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘‘(বই) পড়ার মতো উপভোগ্য অভিজ্ঞতা আর কিছুই নয়, এই আমার ঘোষণা।’’ উপন্যাসের অন্যতম নারী চরিত্র, মিস বিংলে বলছে ডার্সিকে। কিন্তু আসল সত্যিটা ছিল এই, মিস বিংলে মোটেই পড়তে ভালবাসতেন না। নোটের উপর এই উদ্ধৃতি দেখে তাই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে মন্তব্যের বান ডেকেছে— ব্যাংক অব ইংল্যান্ড না জেনে একটা ভুল উদ্ধৃতি দিয়ে ফেলেছে। তবে ব্যাংকের গভর্নর মার্ক কার্নি বলেছেন, ওই উদ্ধৃতিটি ব্যবহার করা হয়েছে ওই শ্লেষটুকু মাথায় রেখেই, কেননা অস্টিনের কলমে শ্লেষ দুর্দান্ত খুলত! এই উদ্ধৃতি তাই ওঁর লেখনীর সঙ্গে মানানসই। অস্টিনের সময় ১০ পাউন্ড মানে অনেক টাকা। বাবা বেঁচে থাকাকালীন অস্টিন তাঁর কাছ থেকে যা মাসোহারা পেতেন, ১০ পাউন্ড তার অর্ধেক! আবার অস্টিনের প্রথম উপন্যাস সুসান-এর (পরে যে বইটি নর্থ্যাঞ্জার অ্যাবি নামে পরিচিত ও বিখ্যাত হয়েছিল) জন্য ওঁর প্রকাশক অস্টিনকে ১০ পাউন্ডই দিয়েছিলেন!
নতুন ‘ডক্টর হু’
বিবিসি জানাল, নতুন ‘ডক্টর হু’ এক জন নারী। ৩৪ বছর বয়সি অভিনেত্রী জোডি হুইটেকার অভিনয় করবেন এই চরিত্রে। সোশ্যাল মিডিয়া এই খবরে তোলপাড়। ওঁর আগে আরও বারো জন এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন, কিন্তু জোডিই প্রথম নারী যিনি ‘ডক্টর হু’ হবেন। ‘ডক্টর হু’ বিবিসির অতি জনপ্রিয় কল্পবিজ্ঞান সিরিজ, যার মূল চরিত্র মানুষের মতো দেখতে এক ভিন্গ্রহী, নাম ডক্টর হু। বন্দুক না, একটা সনিক স্ক্রুড্রাইভার তার অস্ত্র। ১৯৬৩ সালে প্রথম ‘ডক্টর হু’ সিরিজের পরিচালক ছিলেন এক তরুণ ভারতীয়, ওয়ারিস হুসেন। মাঝে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, ২০০৫ থেকে ফের চালু হয় এই সিরিজ। জোডি ভক্তদের আশ্বস্ত করেছেন, ডক্টর হু-র আদর্শ থেকে চ্যুত হবেন না!
ক্রিকেটের রানিরা
মানী: ঈশা গুহ। ছবি: গেটি ইমেজেস
এমন সময় ছিল, যখন লর্ডস ক্রিকেট মাঠের ‘লং রুম’-এ মেয়েরা ঢুকতে পারত না। সে সব এখন অতীত। এমসিসি এ সপ্তাহে মেয়ে ক্রিকেটারদের অবদানকে সম্মান জানিয়েছে ৩৭ জন প্রাক্তন মেয়ে-ক্রিকেটারকে স্মরণ করে, যাঁরা খেলেছেন ১৯৫৪-২০১৬ পর্যন্ত। ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবের সদস্যপদও দেওয়া হয়েছে তাঁদের। তালিকায় আছেন বেশ কয়েক জন ভারতীয়— প্রাক্তন ক্যাপ্টেন ডায়ানা এডুলজি, সন্ধ্যা অগ্রবাল, গার্গী বন্দ্যোপাধ্যায়, শিল্পা গুপ্তা, শান্তা রঙ্গস্বামী, সুধা শাহ, শুভাঙ্গী কুলকার্নি। আছেন ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন, বাঙালি মেয়ে ঈশা গুহও। এমসিসি-র আজীবন সদস্যপদ পেয়ে আপ্লুত ঈশা স্মরণ করেছেন ব্যারনেস হিহো ফ্লিন্ট-কে, মেয়ে ক্রিকেটারদের সদস্যপদ পাওয়ার ব্যাপারে যাঁর কার্যকরী ভূমিকা ছিল। এমসিসি বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় ক্রিকেট ক্লাব, ১৮০০০ পূর্ণ সদস্য ও ৫৫০০ সহযোগী সদস্য তাদের। লর্ডস মাঠের মালিক এই ক্লাবই। সেই মাঠেই আজ মেয়েদের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল।
মেয়েদের ফুটবল
গতি এসেছে মেয়েদের ফুটবলেও। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মেয়েদের ফুটবলে জোয়ার আসে, কারণ ছেলেদের ফুটবল লিগ তখন বন্ধ ছিল। প্রেস্টন শহরের ‘ডিক, কার অ্যান্ড কোং’ সংস্থা তৈরি করেছিল দুর্দান্ত এক মেয়ে ফুটবল-দল, ‘দ্য ডিক, কার লেডিজ এফসি’। যুদ্ধের সময় ২০-৩০ হাজার দর্শকের সামনে মেয়েদের এই দল বহু ম্যাচ খেলেছিল। ছ’ফুট লম্বা লিলি পার ছিলেন দলের তারকা। ১৯২১ সালে ইংল্যান্ডে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন মেয়েদের খেলা বন্ধ করে দেয়, নিষেধাজ্ঞা উঠে যায় ’৭০-এর দশকে।