Advertisement
E-Paper

লন্ডন ডায়েরি

১৮ বছর পর, সঞ্জয় এখন ভারতের সুপরিচিত অনুষ্ঠান-আয়োজক, তাঁর সংস্থা ‘টিমওয়ার্ক ফিল্মস’ জয়পুর লিটরেচার ফেস্টিভ্যালসহ বিশ্ব জুড়ে বহু ভারতীয় উৎসবের সংগঠক। ভারতের স্বাধীনতার ও এডিনবরা আন্তর্জাতিক উৎসবেরও ৭০ বছর পূর্তিতে সঞ্জয় এক দল প্রতিভাকে নিয়ে গিয়েছেন স্কটিশ রাজধানীতে।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৭ ০৬:০০

এডিনবরার মঞ্চ জুড়ে ভারতের সংস্কৃতি

সংগঠক: সঞ্জয় রায়। ডান দিকে, মাজুলি নৃত্য পরিবেশনায় শিল্পী। ছবি: দর্শন মানাক্কল।

সঞ্জয় রায় আর তাঁর স্ত্রী পুনিতা এডিনবরা ফেস্টিভ্যালে প্রথম যান ১৯৯৯ সালে। ছোট্ট একটা বিছানায় কোনও মতে থাকতেন, এক বার খেতেন আর দিন-রাত শুধু শো দেখতেন। প্রতি বছর অগস্টে অজস্র মানুষ জড়ো হন বিশ্বের এই সর্ববৃহৎ সাংস্কৃতিক উৎসবে, ১০০০০-এরও বেশি পারফরম্যান্স হয়। সঞ্জয়ের মনে হয়েছিল, না খেয়ে মরি সেও ঠিক আছে, তবু যদি অ্যাসেম্বলি রুম বা ট্রাভার্স থিয়েটার-এ নাটক দেখতে পাই! ওঁর মনে পড়ে, একটা শো হয়েছিল লিফটে, একটা ফোন বুথে, শৌচাগারের মধ্যে আর একটা! ১৮ বছর পর, সঞ্জয় এখন ভারতের সুপরিচিত অনুষ্ঠান-আয়োজক, তাঁর সংস্থা ‘টিমওয়ার্ক ফিল্মস’ জয়পুর লিটরেচার ফেস্টিভ্যালসহ বিশ্ব জুড়ে বহু ভারতীয় উৎসবের সংগঠক। ভারতের স্বাধীনতার ও এডিনবরা আন্তর্জাতিক উৎসবেরও ৭০ বছর পূর্তিতে সঞ্জয় এক দল প্রতিভাকে নিয়ে গিয়েছেন স্কটিশ রাজধানীতে। ৬০ সদস্যের ইন্ডিয়ান নেভাল ব্যান্ড রোজ রাতে পারফর্ম করছে ৮ হাজার দর্শকের সামনে। আছে মহাভারত-অনুপ্রাণিত নাটক। জোরহাটের নৃত্যশিল্পী শিল্পিকা বরদলৈ পরিবেশন করছেন অসমের মাজুলি অঞ্চলের নাচ।

রাজকাহিনি

ইংল্যান্ডে রাজপরিবারের গল্প নিয়ে অনন্ত উৎসাহ। রাজকুমারী ডায়ানার মৃত্যুর ২০ বছর পূর্তির আবহে, খবরের শিরোনামে তাঁর দুই ছেলে ও ভাই। সম্প্রতি ডায়ানার বন্ধু ও পরিবারের অনেকের বারবার নিষেধ সত্ত্বেও চ্যানেল ফোর দেখাল সেই ভিডিয়োটেপগুলো, যেগুলোয় ডায়ানা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনেক কথা বলেছিলেন। এ দিকে, জনপ্রিয় নেটফ্লিক্স-সিরিজ ‘দ্য ক্রাউন’-এর দ্বিতীয় মরশুম শীঘ্রই আসছে, ঘোষণা হল। তরুণী রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ক্লেয়ার ফয়। সিরিজে দেখা যাচ্ছে রানি গর্ভবতী, ডিউক অব এডিনবরার সঙ্গে বিশ্রামরত। রাজকুমারী মার্গারেট ও ফটোগ্রাফার অ্যান্টনি আর্মস্ট্রং-জোন্স’এর (পরবর্তী কালে লর্ড স্নোডন) রোম্যান্সও এই সিরিজের আকর্ষণ। চিত্রনাট্যকার পিটার মর্গান জানিয়েছেন, স্নোডন একাধারে আবেদনময় ও বিপজ্জনক এক চরিত্র। এই মরশুমও যে হিট হবে, বোঝাই যাচ্ছে।

চোর ধরল রকি

‘রকি’র জয়জয়কার সারা ইংল্যান্ড জুড়ে। রকি একটি টিয়াপাখি। এক ঘাগু চোরকে ধরিয়ে দেওয়ায় সাহায্য করে নায়কের মর্যাদা পাচ্ছে সে। তার মনিবের বাড়িতে ঢুকেছিল সেই চোর, চুরি করেছিল অনেক জিনিস। রকিকেও চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল, হাজার হোক দামি আফ্রিকান গ্রে প্যারট জাতের পাখি বলে কথা। রকিও সহজে ছাড়ার বান্দা নয়, চোরের হাত কামড়ে রক্ত বের করে ছাড়ে। চোর রকিকে জানলা দিয়ে ছুড়ে ফেলে পালায়। পুলিশ এসে মেঝেয় পড়ে থাকা রক্তের ফোঁটা থেকে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পর দিনই চোরকে গ্রেফতার করে। রকি কিন্তু উড়ে যায়নি, খুশিমনে নিজের ঘরে ফিরে এসেছে। ওর মনিব আর বাড়ির অন্য সবাইও তাই খুব খুশি।

দেশভাগের হাসিকান্না

সূত্রধর: অনিতা রানি।

বিবিসি দেশভাগ নিয়ে তৈরি করছে দু’পর্বের তথ্যচিত্র ‘মাই ফ্যামিলি, পার্টিশন অ্যান্ড মি: ইন্ডিয়া ১৯৪৭’। সঞ্চালক অনিতা রানি, যাঁর নিজের পরিবারও দেশভাগের শিকার। এখন ব্রিটেনে থাকা তিনটে পরিবারকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেই শহরগুলোয়, তাদের দাদু-ঠাকুরদারা যা ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। আছে বাঙালি ডাক্তার বিনীতা কেন-এর কথা, ’৪৬-এ নোয়াখালির দাঙ্গার সময় ওঁর বাবার বয়স ছিল মোটে ছয়। প্রাণ বাঁচাতে বাড়ির সবাইকে সে দিন লুকোতে হয় ধানখেতে। পরে এক মুসলমান পড়শির সাহায্যে ওঁরা নৌকোয় করে পালিয়ে আসেন পশ্চিমবঙ্গে। নৌকোর দুই মাঝিও ছিলেন মুসলমান। বিনীতার নোয়াখালিতে ফেরা স্বভাবতই ছিল আবেগময়। আশ্চর্য, খুঁজে পাওয়া গেল সে দিনের প্রাণরক্ষক দুই মাঝির এক জনকে, এখন তিনি বৃদ্ধ! আত্মহারা বিনীতা তাঁকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন, বাবার একটা ছবি দেখিয়ে বলেন, এই ছোট্ট ছেলেটাই আমার বাবা, ওঁকেই বাঁচিয়েছিলেন আপনি! তথ্যচিত্রে আছে ম্যান্ডি ডিউক-এর গল্পও, যাঁর দাদু আর্থার ওয়াইজ ছিলেন সে কালের কলকাতার নামী ব্যবসায়ী, বিপন্ন সময়েও নিজে কলকাতা ছেড়ে যাননি!

London Diaries
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy