Advertisement
E-Paper

লন্ডন ডায়েরি

আকরামের শেষ পরিবেশনাটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয়দের কাহিনির উপরে আধারিত। ৪৩ বছর বয়সি নৃত্যশিল্পী পরিবেশন করবেন ‘জ়েনস’— এক তরুণ গ্রামবাসীর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগদান ও যুদ্ধের বিপুল ধ্বংসলীলা নিজের চোখে দেখার কাহিনি।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০০:০০

বাঙালি নৃত্যশিল্পী আকরাম খানকে যাঁরাই মঞ্চে দেখেছেন তাঁরা জানেন, কবিতা আর শরীরী বিভঙ্গকে তিনি মেলান অনায়াসে। ব্রিটেনের অগ্রগণ্য নর্তকদের অন্যতম আকরামকে আগামী সপ্তাহে পূর্ণ সময়ের অনুষ্ঠানে দেখা যাবে শেষ বারের মতো, কারণ নাচের মতো শিল্পকর্মে যে শারীরিক পরিশ্রম হয়, তাঁর শরীর তা আর সহ্য করতে পারছে না। আকরামের শেষ পরিবেশনাটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয়দের কাহিনির উপরে আধারিত। ৪৩ বছর বয়সি নৃত্যশিল্পী পরিবেশন করবেন ‘জ়েনস’— এক তরুণ গ্রামবাসীর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগদান ও যুদ্ধের বিপুল ধ্বংসলীলা নিজের চোখে দেখার কাহিনি। সেই সৈন্যটি যুদ্ধের সময় আটকে পড়ে একটি ট্রেঞ্চে। আকরাম তারই গল্প বলবেন প্রমিথিউস-মিথের রূপকে। আকরাম বলছেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেনের হয়ে যুদ্ধ করা ৪০ লক্ষেরও বেশি ঔপনিবেশিক সেনার মধ্যে ১৫ লক্ষ ছিলেন ভারতীয়, মূলত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের কৃষিজীবী মানুষ। যুদ্ধে ইউরোপ, আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার নানা স্থানে এঁরা মারা যান। বহু সেনাকে সমাধিস্থ করা হয় বিদেশের মাটিতেই, আর যাঁঁরা দেশে ফিরেছিলেন, তাঁরা বাকি জীবন কাটিয়েছিলেন স্বভূমে পরবাসী হয়ে। ‘জ়েনস’-এর গল্প পুব ও পশ্চিম, অতীত ও বর্তমান, পুরাণ ও প্রযুক্তির সীমান্তে দাঁড়িয়ে-থাকা মানবতার কথা বলে। আকরামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন পাঁচ আন্তর্জাতিক শিল্পী— তালবাদ্যে বি সি মঞ্জুনাথ, কণ্ঠে আদিত্য প্রকাশ, বেস গিটারে নিনা হ্যারিস, বেহালায় অ্যান্ডু ম্যাডিক, স্যাক্সোফোনে তামার অসবর্ন। কত্থক বিশেষজ্ঞ আকরাম কৈশোরে পিটার ব্রুকস-এর ‘মহাভারত’ দলের সঙ্গে বিশ্ব ঘুরেছেন। ২০১২-র লন্ডন অলিম্পিক্সের উদ্বোধন-অনুষ্ঠানে তাঁর দল নৃত্য পরিবেশন করেছিল। বেড়ে ওঠা উইম্বলডনে, এখনও থাকেন সেখানেই।

শুভেচ্ছা

ব্রিটেনে ‘রাজকীয় বিয়ে’ নিয়ে সবাই যে খুব উত্তেজিত, এমনটা নয়। লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বিয়ের উৎসব দেখেননি মোটেই। তাঁর দল একটি অর্থনীতির সম্মেলন আয়োজন করেছিল, করবিন সেখানেই ছিলেন। অবশ্য নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি। এ-ও বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে রাজতন্ত্র তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী নন আদৌ।

ইনি এবং উনি

জুলাইয়ে ব্রিটেন সফরে এসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রানি-দর্শন হবে চায়ের আসরে। তবে রাজপরিবারের এক জন সদস্যের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন না— ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কল। অভিনেত্রী মেগান ট্রাম্পকে বলেছিলেন ‘নারীবিদ্বেষী’, ‘বিভেদকামী’; ওঁর ‘রাজত্বকাল’ মেগানের আমেরিকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ, এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ছ’মাস আগে মেগান মজা করে বলেছিলেন, তিনি বরং কানাডায় থেকে যাবেন, ওখানে ওঁর টিভি-সিরিজ় ‘স্যুটস’-এর শুটিং চলছিল। মার্কিন নাগরিকের ব্রিটেনের রাজপরিবারে বিয়ে হওয়া নিয়ে ট্রাম্প কিছু বলেননি। টিভি চ্যাট শোয়ের সঞ্চালকের জোরাজুরিতে তাঁর মন্তব্য, ‘‘জুটি হিসেবে ওঁরা দারুণ। সত্যিই চাই ওঁরা ভাল থাকুন।’’

বাগানে ক্রিকেট

নান্দনিক: চেলসিতে ‘ইন্ডিয়ান গার্ডেন’

লন্ডনে বার্ষিক ‘চেলসি ফ্লাওয়ার শো’ দেখতে আসেন বহু মানুষ, স্বয়ং রানি আসেন প্রথম দিনেই। চেলসি হাসপাতাল প্রাঙ্গণ তখন ভরে যায় নতুন, বিচিত্র সব ফুল আর গাছে, সেলেব্রিটিদের নামে নাম রাখা হয় নতুন গোলাপদের। এ বছর ব্রিটিশ কাউন্সিল তৈরি করেছে ‘ইন্ডিয়ান গার্ডেন’, বিশেষ একটি বিভাগে সিলভার গিল্ট পদক পুরস্কারও জিতেছে তা। ভারতের তরুণ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে, ভারত-ব্রিটেনের ক্রিকেটপ্রীতিই এই বাগানের থিম। সারা এবের্লে-র পরিকল্পনায় তৈরি এই বাগান সাজানো হয়েছে বিশাল ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে, আছে হিমালয়ান পপি, জুঁই, বিচিত্র অর্কিড। বিরাট বিলবোর্ড-পেন্টিংয়ে বাচ্চাদের ক্রিকেট খেলার ছবি, আছে সতেরো ও আঠারো শতকে ভারতে ব্রিটিশদের করা উদ্ভিদ-অনুসন্ধান প্রদর্শনীর ছবিও। সচিন তেন্ডুলকরের প্রতি শ্রদ্ধায় এবের্লে বাগানে রেখেছেন নীল পপি। বাগানসজ্জায় ধ্রুপদী মার্বেলের কাজের পাশেই আছে এ কালের ভারতীয় শিল্পীদের আঁকা ছবি। এবের্লেকে সাহায্য করেছেন কলকাতার মনস্বিতা শীল ও কোয়েম্বাত্তুরের অনুপ্রত্ন রবিচাঁদ, ব্রিটেন উড়ে গিয়ে ন’দিনে ওঁরা তৈরি করেছেন বাগান।

London Diaries
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy