E-Paper

লন্ডন ডায়েরি: প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যদের নিয়ে প্রদর্শনী

ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তার খেয়াল রাখা হয়েছিল। লন্ডনে ঘোরানো, ব্রিটেন দেখানো হয়েছিল। ক্যাম্পের সৈন্যদের দেখে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ও আমজনতার প্রতিক্রিয়াও প্রদর্শনীতে ধরা পড়েছে।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৩০
An image of London Diary

লন্ডন ডায়েরি। —ফাইল চিত্র।

১৯১৯ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি উদ্‌যাপন করেছিল ইউরোপ। অনুষ্ঠানে বিজয় কুচকাওয়াজ ও শান্তি উদ্‌যাপনে যোগ দিতে প্রায় ১৮০০ ভারতীয় সৈন্য মুম্বই থেকে লন্ডনের জাহাজে উঠেছিলেন। ২ অগস্টের অনুষ্ঠানে তাঁদের স্বতন্ত্র কুচকাওয়াজের ব্যবস্থা হয়েছিল রাজা পঞ্চম জর্জের অনুরোধে। লন্ডনের ঠিক বাইরে রাজা অষ্টম হেনরির প্রাসাদ হ্যামটন কোর্ট প্যালেসে তাঁবু খাটিয়ে থাকছিলেন তাঁরা। এই প্যালেসেরই এক প্রদর্শনীতে উঠে এল সৈন্যদের ইতিবৃত্ত। কেমন ভাবে তাঁরা প্রাসাদের মাঠে তাঁবু খাটিয়ে ছিলেন, কী খেতেন, এমনকি কী ভাবে পোশাক ধুতেন। তাঁদের ধর্মীয় প্রয়োজনীয়তার খেয়াল রাখা হয়েছিল। লন্ডনে ঘোরানো, ব্রিটেন দেখানো হয়েছিল। ক্যাম্পের সৈন্যদের দেখে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ও আমজনতার প্রতিক্রিয়াও প্রদর্শনীতে ধরা পড়েছে। প্রদর্শনীতে প্রথম বার সাজানো হয়েছে ‘ইন্ডিয়া ডে’ ব্যাজ। মহারাজা দলীপ সিংহের মেয়ে প্রিন্সেস সোফিয়া দলীপ সিংহ ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের যুদ্ধবিমানচালক ইন্দ্রলাল রায়ের মা ললিতা রায় এই পিন ব্যাজ বিক্রি করে ভারতীয় সেনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন। বিরল এই পিন ব্যাজটিতে একটি ভারতীয় হাতির ছবি রয়েছে। ব্যাজটি সম্প্রতি প্রাসাদ কর্তৃপক্ষের হাতে এসেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেনের হয়ে লড়েছিলেন ১৫ লাখ ভারতীয়, প্রাণ দিয়েছিলেন ৭৩,০০০ জনেরও বেশি।

স্মৃতি: হ্যামটন কোর্ট প্যালেসের প্রদর্শনীতে ভারতীয় সৈন্যদের ছবি।

স্মৃতি: হ্যামটন কোর্ট প্যালেসের প্রদর্শনীতে ভারতীয় সৈন্যদের ছবি।

‘লিটল টমি’র জন্মদিন

লন্ডনের এক জাদুঘরে লিটল টমি টিটলমাউস নামের ১৩.৩ সেন্টিমিটার লম্বা টেডি বেয়ারের জন্মদিন পালিত হয়। ১৯৩৩-৩৮’এর মধ্যে কেন্দ্রীয় প্রদেশগুলির গভর্নর স্যর হাইড গাওয়ান তাঁর বড় ছেলে জেমসকে প্রথম জন্মদিনে জার্মানিতে তৈরি এই খেলনা দেন। তাঁরা থাকতেন নাগপুরে। জেমস আর তার প্রিয় খেলনার জন্মদিনও এক, ২৪ নভেম্বর। ব্রিটেনে ফেরার সময় জেমসের সঙ্গে যায় টমি। ১৯৬৫-তে ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজ়িয়মের অংশ মিউজ়িয়ম অব চাইল্ডহুড-এ টেডি বেয়ারটি দিয়ে দেন জেমস। কিন্তু, তার প্রতিটি জন্মদিনে কার্ড পাঠাতেন। জেমস মারা যান ১৯৮৬-তে। অতঃপর জাদুঘর কর্তৃপক্ষ পালন করেন লিটল টমির জন্মদিন। তাকে দেখতে ভেঙে পড়ে ভিড়, জন্মদিনে আসে শয়ে শয়ে কার্ড। ইয়ং ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজ়িয়মে ইম্যাজিন গ্যালারিতে রয়েছে খেলনাটি।

উপহার: নরওয়ের পাঠানো ক্রিসমাস ট্রি।

উপহার: নরওয়ের পাঠানো ক্রিসমাস ট্রি।

বড়দিনের উপহার

ট্রাফালগার স্কোয়্যারে আলোকোজ্জ্বল যে ক্রিসমাস ট্রি দেখা যায়, ১৯৪৭ থেকে সেটি উপহার দিচ্ছে নরওয়ে সরকার, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেনের সাহায্যের কৃতজ্ঞতায়। নরওয়ের জঙ্গলে কাটা গাছ ৯০০ মাইল পাড়ি দিয়ে লন্ডনে পৌঁছয়। জানা গিয়েছে, পরিকল্পনাটি জেমস বন্ডের স্রষ্টা ইয়ান ফ্লেমিংয়ের মস্তিষ্কপ্রসূত। তিনি নৌবিভাগের গোয়েন্দা দফতরে কাজ করতেন। ১৯৪২-এ নৌবাহিনী নরওয়ের কম্যান্ডো মনস উরান্সোয়াগ-কে ব্রিটেনে আনে। নাৎসি অনুপ্রবেশের কারণে নরওয়ের রাজা সপ্তম হাকন তখন দেশ থেকে পালিয়ে উইনসরের কাছে নির্বাসনে। রাজার জন্য সৈন্য অসলো থেকে দুটো পাইন গাছ কেটে এনেছিলেন। ফ্লেমিংয়ের সঙ্গে মনস-এর সাক্ষাৎ হল, ক্লান্তি অপনোদনের জন্য এলাহি পানভোজনে গেলেন দু’জন। জিপে উঠে ফ্লেমিং ক্রিসমাস ট্রিগুলি দেখলেন। প্রস্তাব দিলেন একটি গাছ ট্রাফালগার স্কোয়্যারে রাখা যাক, অবশ্য ব্ল্যাকআউটের জন্য আলো দেওয়া যাবে না। ১৯৪২-এর এক ঘুটঘুটে রাতে, ফ্লেমিং ও সেই সৈনিক ব্রিটেন ও নরওয়ের রাজা এবং নরওয়ের স্বাধীনতার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যপান করে, সুরার মেজাজে গাছটি লাগিয়েছিলেন স্কোয়্যারে। সেই প্রথাই আজ চলছে।

কাজে লাগবে, এমন বই

র‌্যামসে ম্যাকডোনাল্ড শুরু করেছিলেন ‘প্রধানমন্ত্রীর গ্রন্থাগার’। প্রধানমন্ত্রীর দরকার হতে পারে, এমন বই ডাউনিং স্ট্রিটের লাইব্রেরিতে ভেট দেবেন ক্যাবিনেট মন্ত্রীরা। বিলুপ্ত অভ্যাসটি ফিরিয়েছিলেন বরিস জনসন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ঋষি সুনকের বিদেশমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁকে দিয়েছেন নিজের স্মৃতিকথা। ব্রেক্সিট গণভোটে হেরে ডাউনিং স্ট্রিট থেকে চলে যাওয়ার পর যা তিনি লেখেন। এই উপহার সুনকের কোন উপকারে লাগে, সেটাই দেখার।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

First world war London

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy