আহত অর্জুন সিংহ।—ছবি পিটিআই
অকর্মণ্যতা এবং অপদার্থতার নজির তৈরি করছে প্রশাসন। মাসের পর মাস চেষ্টা করেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না ব্যারাকপুরে। ঠিক কী ঘটছে? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না? না কি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা হচ্ছে না? প্রশ্ন আজ প্রায় গোটা রাজ্যের।
লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকে অশান্ত ব্যারাকপুর। উত্তপ্ত নির্বাচন পর্ব মেটার পর শুরু হল ভোট-পরবর্তী হিংসা। একনাগাড়ে রক্তপাত, প্রাণহানি, বোমা-গুলি, অগ্নি সংযোগ, ভাঙচুর চলছিল উত্তর চব্বিশ পরগনার এই শিল্পাঞ্চল জুড়ে। স্বাভাবিক জনজীবন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পুরোপুরি। দুই রাজনৈতিক দলের লাগামছাড়া সঙ্ঘাতের জেরেই যে শিল্পাঞ্চলের অনর্গল রক্তস্নান চলছিল, তা কারও অজানা নয়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনার দাবি তুলে অন্যান্য দলও পথে নামল তার পরে। বিশিষ্ট নাগরিকরা পথে নামলেন। কেন্দ্রীয় দল এল। রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা ছুটলেন। পুলিশ কমিশনার বদল হল। অবশেষে, জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরতে শুরু করল।
আজ মনে হচ্ছে, ওই স্বাভাবিকতা আসলে একটা সাময়িক সংঘর্ষ বিরতি ছিল। মাসখানেকের মধ্যে ফের ব্যারাকপুর অশান্ত হয়ে উঠল। আবার রক্তপাত শুরু হল। যেন বিশ্রামের সুবাদে নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করে নতুন উদ্যমে রণাঙ্গনে ফিরল দুই যুযুধান শিবির।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
ব্যারাকপুরের দিকে তাকালে মাঝে মধ্যে ভুলে যেতে হচ্ছে যে আমরা একটা গণতান্ত্রিক বন্দোবস্তের মধ্যে থাকি। ব্যারাকপুরের দিকে তাকালে মনে হচ্ছে, এ যেন গৃহযুদ্ধে দীর্ণ-ক্লান্ত কোনও ভূখণ্ড। বার বার পুলিশের বিরুদ্ধে অনিরপেক্ষতা এবং দলদাসত্বের অভিযোগ উঠছে, বার বার পরিস্থিতি আগুন হয়ে উঠছে। দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের এই রক্তক্ষয়ী সঙ্ঘাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তাঁরা আকুল হয়ে পুলিশ-প্রশাসনেই ভরসা খোঁজার চেষ্টা করছেন। কিন্তু, শিরদাঁড়ার অধিকাংশটাই বন্ধক দিয়ে ফেলা সরকারি বাহিনী আদৌ সে ভরসার যোগ্য কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে নাগরিকরা। ফলে, পরিস্থিতি ফের অবনতির মুখে।
অশান্তি, হিংসা, রক্তপাত থামাতে পারুক বা না পারুক, পুলিশ কিন্তু বীরপুঙ্গব। হিংসা আটকানো না গেলেও, হিংসার খবর যে আটকে দেওয়া যেতেই পারে, সে কথা মাথায় ঢুকে গিয়েছে ব্যারাকপুরের পুলিশের। তাই কর্তব্যরত সাংবাদিকদের পেটাচ্ছেন পুলিশকর্তা। তীব্র প্রতিবাদেও উচ্চতর প্রশাসনের তরফ থেকে এই ঘটনার নিন্দা করে কোনও বার্তা আসছে না।
এই ভাবে গণতন্ত্র ফেরাবেন ব্যারাকপুরে? গণতন্ত্রের অন্য স্তম্ভগুলো তো আগেই কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল ব্যারাকপুরে। এ বার চতুর্থ স্তম্ভটাকেও পিষে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হল। গণতন্ত্র রক্ষা পাবে বইকি!
আরও পড়ুন: দফায় দফায় বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, বিজেপির বন্ধ ঘিরে উত্তেজনা ব্যারাকপুর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy