Advertisement
E-Paper

আজ উত্তীর্ণ না হলে কিন্তু ভবিষ্যৎ কঠিন

বিরোধী দলগুলি চায়নি, আজ ভোট গ্রহণ হোক। এ ভাবে গোটা রাজ্যে এক দফাতেই ভোট হয়ে যাক, সে তো আরওই চায়নি। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল প্রত্যেকটি বিরোধী দল।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৮ ০০:২৩
ঝড়ে চলে গিয়েছে আলো। অগত্যা মোমবাতিই ভরসা। রবিবার এগরার একটি বুথে। ছবি: গোপাল পাত্র।

ঝড়ে চলে গিয়েছে আলো। অগত্যা মোমবাতিই ভরসা। রবিবার এগরার একটি বুথে। ছবি: গোপাল পাত্র।

প্রতিশ্রুতি রয়েছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের। বাতাবরণে রয়েছে সন্ত্রাস। এই দুইয়ের লড়াইতে জয়ী হবে কে? আভাস বোধ হয় দিয়ে দিল ভাঙড় থানার রবিবারের ছবি। সদ্য গ্রেফতার হয়েছেন শাসক দলের ‘তরতাজা’ নেতা আরাবুল ইসলাম। নির্দল প্রার্থীদের সমর্থনে যে মিছিল বেরিয়েছিল ভাঙড়ে, সেই মিছিলে ভয়াবহ হামলা হয়েছে, ভাঙড় ফের রক্তাক্ত হয়েছে, প্রাণহানি পর্যন্ত হয়েছে। সেই হামলায় নেতা আরাবুল, অভিযোগ তেমনই। তীব্র জনরোষে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। অতএব গ্রেফতার করতে হল আরাবুলকে।

কিন্তু তার পরে কী হল?

তার পরে যা হল, তাতে ভোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় গাঢ় হল। কারণ জনরোষের কারণে নিজের এলাকাতেই যে আরাবুলের ঢোকার উপায় নেই বলে শোনা যাচ্ছে, ভাঙড় থানায় পুলিশ পাহারার মধ্যে বসে সেই আরাবুলকে এ দিনভর অনুগামীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করতে দেখা গেল, ভোটের ঘুঁটি সাজাতে দেখা গেল। একটা পরীক্ষার মুখে রয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পরীক্ষার মুখে রাজ্য সরকারও। বিপুল হিংসা পেরিয়ে এসে পঞ্চায়েতের ভোট গ্রহণ আজ।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

বিরোধী দলগুলি চায়নি, আজ ভোট গ্রহণ হোক। এ ভাবে গোটা রাজ্যে এক দফাতেই ভোট হয়ে যাক, সে তো আরওই চায়নি। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল প্রত্যেকটি বিরোধী দল। মামলা কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য প্রশাসন হাইকোর্টকে জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। আশ্বাস দিয়েছে, এক দফায় ভোট হলেও সম্পূর্ণ অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হবে ভোট গ্রহণ। অতএব নির্বাচনকে সন্ত্রাসমুক্ত রাখার দায় আজ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের, আর দায়িত্ব রাজ্য প্রশাসনের। এই পরীক্ষায় কিন্তু দু’জনকেই উত্তীর্ণ হতে হবে আজ। না হলে আদালতের সামনে আরও বড় জবাবদিহির মুখে পড়তে হতে পারে। সে কথাটা মাথায় রাখা জরুরি।

আরও পড়ুন
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের ইতিহাস গড়ে পৌনে ২ কোটি ভোটারকে বঞ্চিত করা হল

ভোটের আগের রাত থেকেই সন্ত্রাস নতুন চেহারা নিতে শুরু করেছে গ্রাম-গ্রামান্তরে। অভিযোগ বিরোধীদের। গ্রাম-বাংলার সেই আর্তনাদ কমিশন ও প্রশাসনের কানে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ কতটুকু করা হয়েছে, স্পষ্ট নয়। পদক্ষেপ করার ইচ্ছা কি আদৌ রয়েছে প্রশাসনের? সংশয় গভীর। খুনের মামলায় সদ্য ধৃত আরাবুল ইসলাম যদি ভাঙড় থানাকে নিজের ‘কন্ট্রোল রুম’ বানিয়ে ফেলার সুযোগ পান, তা হলে সে সংশয় বাড়ে বৈ কমে না।

রাতভর বোমার শব্দ, বাইক-বাহিনীর তাণ্ডব, দুষ্ক়ৃতী-দৌরাত্মের খবর। বাতাসে সন্ত্রাসের আঁচ। তার মধ্যেই আজ ভোটে বাংলা। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু খুব কঠিন কমিশন ও প্রশাসনের পক্ষে। উত্তীর্ণ না হলে শাসক দলের দাপট আরও বাড়বে পঞ্চায়েতের ফলাফলে, সন্দেহ নেই। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের পথটা কণ্টকাকীর্ণ হয়ে উঠবে, তা নিয়েও যেন সন্দেহ না থাকে।

Newsletter Anjan Bandyopadhyay West Bengal Panchayat Elections 2018 অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy