Advertisement
E-Paper

পরীক্ষা

পরীক্ষার মরসুম। মন কি বাত-এ প্রধানমন্ত্রী পরীক্ষার কথা বলিতেছিলেন, বাজেট নামক পরীক্ষা। বাজেট শেষ, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দলের পরীক্ষা শেষ হয় নাই। বাজেট অপেক্ষা কঠিনতর পরীক্ষা এখন ভারতীয় জনতা পার্টির সামনে। মার্চ মাসের গোড়াতেই জম্মু ও কাশ্মীরের সরকার গঠন করা সেই রাজ্যের দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বিজেপির দায়িত্ব।

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৬ ০০:৪১

পরীক্ষার মরসুম। মন কি বাত-এ প্রধানমন্ত্রী পরীক্ষার কথা বলিতেছিলেন, বাজেট নামক পরীক্ষা। বাজেট শেষ, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দলের পরীক্ষা শেষ হয় নাই। বাজেট অপেক্ষা কঠিনতর পরীক্ষা এখন ভারতীয় জনতা পার্টির সামনে। মার্চ মাসের গোড়াতেই জম্মু ও কাশ্মীরের সরকার গঠন করা সেই রাজ্যের দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বিজেপির দায়িত্ব। বৎসরখানেক প্রথম সংখ্যাগরিষ্ঠ দল পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সহিত হাত মিলাইয়া সরকার চালাইবার পর পিডিপি মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সইদের মৃত্যুর ফলে রাষ্ট্রপতির শাসন কায়েম হইয়াছিল। এ বার আবার রাজনৈতিক দলগুলিকে বোঝাপড়া করিয়া সরকার গঠনের সময় আসিয়াছে। কাশ্মীরের রাজনীতি লইয়া বিজেপি আপাতত সাঁড়াশি সংকটের মুখে। পিডিপির সহিত বেশি দরাদরি করিতে নামিলে জম্মু ও কাশ্মীরের মাটি পায়ের তলা হইতে সরিয়া যাইতে পারে। আবার, অন্য দিকে, রাজ্যে শরিকি সরকার গড়িবার আগে পিডিপি আগের বারের অপেক্ষা কঠিনতর শর্ত বিজেপির সামনে তুলিয়া ধরিতে পারে। সেই সব শর্ত হজম করা কি উত্তরোত্তর কট্টরবাদী হইতে থাকা বিজেপির পক্ষে সম্ভব হইবে? বিশেষত, কাশ্মীরি উগ্রপন্থার প্রতীকী মুখ আফজল গুরুকে কেন্দ্র করিয়া দেশজোড়া এত জাতীয়তাবাদী টঙ্কারধ্বনি তুলিবার পর?

সম্প্রতি জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আফজল গুরুর নামে যাহা ঘটিল, তাহাতে জম্মু ও কাশ্মীরে কেবল বিজেপির সংকট বাড়িল না, পিডিপিরও বাড়িল। বস্তুত পিডিপির সংকটের কারণেই বিজেপির পরিস্থিতি আরও সংকটজনক, সন্দেহ নাই। যে পিডিপি প্রথমাবধি আফজল গুরুর অপরাধ, বিচার, শাস্তিদান, ফাঁসি, কোনও কিছুই সমর্থন করে নাই, এমনকী বিধানসভায় সরকারি ভাবে তাহাদের মত নথিভুক্ত করাইয়াছে, নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে এই বিষয়ে নতিস্বীকার না করিবার জন্য দায়বদ্ধ রহিয়াছে, তাহাদের পক্ষে কি এত লঙ্কাকাণ্ডের পর বিজেপির হাত ধরিয়া অনায়াসে বিধানসভায় প্রবেশ করা সম্ভব? উপত্যকায় রক্তবন্যা বহিয়া যাইতে পারে এই উপলক্ষে। যে হিংসা ও সন্ত্রাস ঠেকাইবার জন্য নির্বাচন ও সরকার গঠনের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া, তাহা আবার নিদারুণ প্রাবল্যে ফিরিয়া আসিতে পারে। আগে বিজেপি-র সহিত হাত মিলাইবার বিষয়ে কাশ্মীরি সমাজের অসন্তোষ ছিল। জেএনইউ কাণ্ডের পর সেই অসন্তোষ এখন প্রবল ক্রোধ ও বিক্ষোভে পরিণত। এমতাবস্থায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কন্যা, সম্ভাব্য পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী, মেহবুবা মুফতির পক্ষে কি কঠোর শর্ত আরোপ ভিন্ন এক পা-ও অগ্রসর হওয়া সম্ভব?

খেয়াল করিতে হইবে, পরিস্থিতির কঠিনতা সত্ত্বেও কিন্তু মেহবুবা মুফতি শরিক সরকার গঠনের ভাবনাটি পিছনে ঠেলিয়া দেন নাই। তাঁহার মতে, পিতা মুফতি সইদ মনে করিতেন ঐক্যের পথেই স্থিতি, তাই বিজেপির মতো বিপ্রতীপ মেরুর দলের সহিত হাত মিলানো যায়। ইউ-টার্ন-এও তাঁহার বিশ্বাস ছিল না, অগ্রগমনে তাঁহার বিশ্বাস। পিতার মত মানিয়াই কন্যার নেতৃত্বে পিডিপি হাঁটিবে: মুখ্যমন্ত্রীর আসনের দিকে তাকাইয়া নয়, উপত্যকার স্থিতির লক্ষ্যে, বলিয়াছেন মেহবুবা। তাঁহার হাতটি বাড়ানোই আছে, বিজেপি তাহা ধরিতে পারিবে কি না, ইহাই দেখিবার। দেখিবার ইহাও যে, মেহবুবা মুফতি ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়াতেও বিজেপির সামনে প্রধানত যে সব অর্থনৈতিক উন্নয়নের শর্ত রাখিবেন ভাবিয়াছিলেন, মার্চের গোড়ায় সে সব পাল্টাইয়া রাজনৈতিক শর্তে পরিণত হইয়া যায় কি না। তেমন ঘটিলে বলিতে হইবে, জেএনইউ কাণ্ডে সর্বাপেক্ষা ক্ষতি হইল কাশ্মীরের। কাশ্মীরিয়তের।

union budget modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy