মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হওয়ার পরে জ্ঞানেশ কুমার রাজনৈতিক দলগুলির শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে শুরু করেছিলেন। এরই মধ্যে বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে বিবাদ তৈরি হয়েছে। ফলে নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ নিয়ে দরবারও শুরু হয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে এমনই অভিযোগ জানাতে এসে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতানেত্রীরা নির্বাচন কমিশনের সামনে ফুটপাতে ধর্নায় বসে পড়েছিলেন। তাঁদের পুলিশ ডেকে আটক করতে হয়েছিল। এ বার আর নির্বাচন কমিশনের কর্তারা কোনও ঝুঁকি নেননি। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এলেই কমিশনের সামনে অশোক রোডের ফুটপাত লোহার ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দিচ্ছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশের বাস, মহিলা পুলিশ বাহিনীও তৈরি থাকছে। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা কমিশন থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন কমিশনের পাশে মহাদেব রোড পেরিয়ে উল্টো ফুটপাতে গিয়ে। নির্বাচন কমিশনের সামনের ফুটপাতে ফিঙে পাখিরও ঢোকার অনুমতি নেই।

নিশ্ছিদ্র: নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
লিচু ও পালাবদল
বিজেপি সদর দফতরে এখন পালাবদলের সুর। প্রায় পাঁচ বছর ধরে বিজেপির জাতীয় সভাপতির পদ সামলানোর পরে সরে যাওয়ার মুখে জে পি নড্ডা। ফি দিন দফতরের বিভিন্ন শাখার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে পাঁচ বছরের সাহায্যের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন নড্ডা। সভাপতি পরিবর্তন হলে পাল্টে যাবে তাঁর অধীনে থাকা দলও। বদলে যাবেন দলের সাধারণ সম্পাদক থেকে সংবাদমাধ্যম শাখা দেখার দায়িত্বপ্রাপ্তরাও। বিজেপির বর্তমান মিডিয়া শাখার অন্যতম ভারপ্রাপ্ত নেতা বিহারের সঞ্জয় ময়ূখ। মুজ়ফ্ফরপুরের এক ঝুড়ি লিচু তাঁর নামে আসায় সাংবাদিক-সহ দলের অন্য নেতাদের বিলি করছিলেন। সকলেরই প্রশ্ন, “এ কি সঞ্জয়ের বিদায়ী সৌজন্যমূলক লিচু?” সঞ্জয় বলছেন, না খাওয়ালেও দোষ, আবার খাওয়ালেও দোষ! বিলি না করলে লিচু নষ্ট হয়ে যেত।
নব্য সভাপতির আগমনী
ভূপেন্দর যাদব রাজনীতি শুরু করেছিলেন ছাত্র রাজনীতি থেকে। সঙ্ঘ পরিবারের আইনজীবী সংগঠন অখিল ভারতীয় অধিবক্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। দীর্ঘ দিন বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে কাজ করেছেন। বর্তমানে অলওয়ারের এই লোকসভা সাংসদ কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রী। জগৎ প্রকাশ নড্ডার পরে বিজেপির জাতীয় সভাপতি হওয়ার দৌড়ে ভূপেন্দরের নাম বার বার উঠে আসছে। জুনের শেষ দিনে ভূপেন্দর ৫৬-য় পা দিলেন। এ বার তাঁর জন্মদিনে, নির্বাচনী কেন্দ্র অলওয়ারে বৃক্ষরোপণ হল। হাসপাতালে গিয়ে তাঁর অনুগামীরা রোগীদের ফল বিলি করলেন। গোশালায় গরুদের খাওয়ানো হল। সবই চলল ভূপেন্দর যাদবের বিজেপি সভাপতি হওয়ার কামনায়। এখন শিকে ছেঁড়ে কি না, তারই অপেক্ষা।
যোগীকে নিয়ে সিনেমা
উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের এখনও দেড় বছরেরও বেশি বাকি। কিন্তু গেরুয়া শিবিরে আসর গরমের আয়োজন শুরু। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের জীবন অবলম্বনে তৈরি হিন্দি ছবি অজেয় দি আনটোল্ড স্টোরি অব আ যোগী— মুক্তি পাচ্ছে ১ অগস্ট। ছবিটিকে ঘিরে শুরু হয়েছে প্রচার ও ভাষ্য তৈরির প্রয়াস। গাড়োয়ালের পঞ্চুর গ্রামে জন্ম নেওয়া অজয় মোহন সিংহ বিস্তের যোগী আদিত্যনাথ হয়ে ওঠার রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত যাত্রাপথ রয়েছে এই সিনেমায়। বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও হয়েছে লখনউতে। শান্তনু গুপ্তের দ্য মঙ্ক হু বিকেম চিফ মিনিস্টার বইটি থেকে তৈরি হয়েছে ছবি। ট্রেলার সৌজন্যে একটি সংলাপ উত্তরপ্রদেশের মাঠে ময়দানে মুখে মুখে ঘুরছে: ‘বাবা আতে নহী, প্রকট হোতে হ্যায়!’

নায়ক: রুপোলি পর্দায় যোগীর জীবন।
কল্যাণের সাফ কথা
পর পর দু’বার নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী হওয়ার প্রস্তাব পেলেন তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনী তালিকা ঘিরে অভিযোগ জানাতে মঙ্গলবার কল্যাণের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল গিয়েছিল নির্বাচন কমিশনে। যুক্তিগ্রাহ্য আপত্তি তুলে ধরার পরেই তাঁকে কমিশনের নিজস্ব আইনজীবী করার প্রস্তাব আসে। আগেও কল্যাণকে ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কল্যাণের পাল্টা জবাব, কমিশনের হয়ে মামলা লড়তেই পারেন। কিন্তু তিনি তৃণমূলের সাংসদ। তাই পশ্চিমবঙ্গের সরকারের বিরুদ্ধে কমিশন মামলা করলে যোগ দেবেন না।
,অনমিত্র সেনগুপ্ত, অগ্নি রায়
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)