Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
প্রবন্ধ ২

কংগ্রেস বহু দিন বিপর্যয়ের বীজ বুনছিল

কোনও সিনেমা দেখতে যাওয়ার আগে তার নামটা দেখেই যদি ভেবে ফেলা যায় পর্দায় গিয়ে কী কী দেখব, আর তার পর দেখতে বসে যদি সেটা একদম লাইনে লাইনে মিলে যায়, কেমন লাগে? টিকিটের পয়সাগুলোর জন্য মনটা কেঁদে ওঠে না? ঠিক তাই হল কাল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি মিটিংয়ের কারবার দেখে।

সেমন্তী ঘোষ
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৪ ০০:১২
Share: Save:

কোনও সিনেমা দেখতে যাওয়ার আগে তার নামটা দেখেই যদি ভেবে ফেলা যায় পর্দায় গিয়ে কী কী দেখব, আর তার পর দেখতে বসে যদি সেটা একদম লাইনে লাইনে মিলে যায়, কেমন লাগে? টিকিটের পয়সাগুলোর জন্য মনটা কেঁদে ওঠে না? ঠিক তাই হল কাল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি মিটিংয়ের কারবার দেখে। ভোটে বেদম হার হয়েছে, দলের মুখে চুনকালি পড়েছে, তাই দল চালনা ও দলের প্রচারের ভার যাঁদের উপর ছিল, সেই মা-ছেলে জুড়ি গ্রাম্ভারি ভাবে পরাজয়ের দায় নিতে চাইবেন, অন্যরা বলবে, না না সে কী করে হয়, শুনে তাঁরা প্রবল ঔদার্যে সব আপত্তি মেনে নেবেন এবং অসঙ্কোচ সাবলীলতায় নিজেদের পদমর্যাদার সমধিক সুরক্ষায় মন দেবেন— এটাই তো আমরা বলাবলি করছিলাম। সোমবার সন্ধেয় মনে হল আমরা যেন এক এক জন পেশাদার ভবিষ্যদ্বক্তা! কী কাণ্ড! মা-ছেলের যে ‘বডি-ল্যাঙ্গোয়েজ’ মনে আঁকছিলাম, সেটা পর্যন্ত মিলে গেল? নিজেদের দূরদৃষ্টি দেখে মন আনন্দে নাচার বদলে কাঁদো কাঁদোই হয়ে গেল— চুয়াল্লিশটা আসন খরচের কথা ভেবে!

অনেকেই এই প্রসঙ্গে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বের ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক ব্যাখ্যায় মন দিয়েছেন। সেটার খুব দরকার আছে বলে মনে হয় না। রাহুল গাঁধী কতটা অপ্রাসঙ্গিক ও অপ্রয়োজনীয় তাঁর দল ও দেশের কাছে, তা আঙুলে আঙুলে প্রমাণিত। দরকার তাঁর দলকে বোঝা, যে দল এ হেন রাহুল গাঁধী ছাড়া আর কোনও নেতা অতীত-বর্তমানে খুঁজে পায়নি, ভবিষ্যতেও পাবে বলে মনে হচ্ছে না। এ দেশের জনগণ যা যা পছন্দ করে না, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, বুদ্ধিহীনতা, দৃষ্টিক্ষীণতা, আতুপুতুপ্রিয়তা ইত্যাদি, তার স্পষ্ট প্রতিমূর্তি যে চল্লিশোর্ধ্ব নায়ক, তাঁকে নিয়ে তাঁর দল যে কিছুই করে উঠতে পারে না, সেটাই এই একশো ঊনত্রিশ বছর বয়সী প্রবীণ দলটির ভীমরতির স্পষ্ট প্রমাণ।

স্ববিরোধ

ভীমরতিতে স্ববিরোধের অন্ত থাকে না। আর সেই স্ববিরোধ বিষয়ে নিজের বিশেষ ধারণাও থাকে না। গোটা ভোটনাট্য জুড়ে অন্য দলগুলি যখন নিজেদের সমস্যা ও দুর্বলতা ঢেকেঢুকে রাখার চেষ্টায়, কংগ্রেস তখন কী করছে? নির্বিকার নির্ভয়ে নিজের একটার পর একটা স্ববিরোধকে ঠেলেঠুলে বাজারে চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশ্বের বিস্ময়— কেবলমাত্র পরিবার-মাহাত্ম্যে যে রাহুল তাঁর দলের মধ্যে অকারণেই অতুল নেতৃত্বের অধীশ্বর, তিনিই আবার ভোট-প্রচারে দলের এবং নিজের গভীর গণতন্ত্রের কমিটমেন্টের কথা তুলে স্কোর করতে চান। বিভিন্ন রাজ্যে নাকি সেই গণতন্ত্র-ভূমি তৈরি করছে যুব-সংগঠনগুলি। সিকিম ছাড়া সব রাজ্যে নাকি যুব কংগ্রেস প্রস্তুত, যেখানে মুক্ত পদ্ধতিতে উঠে আসবে দলীয় নেতৃত্ব। যদি এই সংবাদে খানিক যথার্থতা থাকেও, তাতেও কি ভবী ভুলবার? তত-খবর-রাখেন-না, এমন ভোটাররাও কি হেসে ওঠেন না ভূতের মুখে গণতন্ত্র শুনে? প্রাক্-স্বাধীনতা যুগ থেকে প্রায় তিন দশক এক ছোট রাজনৈতিক অলিগার্কি বা গোষ্ঠী-পরিবার এবং তার পর গাঁধী-পরিবার, এই দিয়েই তো কংগ্রেসের সচেতন ও সযত্ন আগাপাছতলা নির্মাণ। রাহুল ও তাঁর উপদেষ্টা-বাহিনী এই হাসি দেখতে পান না, কেননা দলের অভ্যন্তরের বাস্তবই তাঁদের তা দেখার অবকাশ দেয় না, কেবল কতকগুলো ভিত্তিসংযোগহীন ‘রেটরিক’ তৈরির তাড়নায়।

কেবল পরিবারকেন্দ্রিকতা নয়, অসুখটা আরও অনেক ব্যাপক। একটা নামে ধরতে হলে বলতে হয় সংযোগহীনতার অসুখ। সেই কারণেই স্ববিরোধিতার ছড়াছড়ি। রাহুল গাঁধীর নির্দেশে যুব কংগ্রেসে এবং ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া-য় শুরু হয়েছে প্রাইমারি ধাঁচে প্রত্যক্ষ পদ্ধতিতে নেতা নির্বাচন। কিন্তু যেহেতু কোনও স্পষ্ট আদর্শ বা উদ্দেশ্য এই তরুণ সমাজের সামনে পেশ করা হয়নি, ব্যাপারটা কেবল লক্ষ্যহীন গোষ্ঠীবাজিই থেকে গিয়েছে, অন্তঃকলহের তৃণমূলীকরণ ছাড়া যার অন্য কোনও বিবরণ দেওয়া মুশকিল। এটা খুব তাৎপর্যপূর্ণ যে, রাহুল গাঁধীর ‘প্রাইমারি’ পথে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা সবাই হেরেছেন।

আদর্শ বা উদ্দেশ্য যদি অল্পবয়সিদের বোঝাতে হয়, তবে জ্যেষ্ঠ বা বরিষ্ঠ নেতাদের ভার নিতে হয় পরবর্তী প্রজন্মকে বোঝানোর জন্য। মুশকিল হল, দিগ্বিজয়-সিব্বল-চিদম্বরমের মতো জ্যেষ্ঠ নেতারা ঘেমেনেয়ে কোনও জনসংযোগ করছেন, এই অপবাদ অতি-বন্ধুও দিতে পারবে না। আর রাহুলের মতো জন্ম-বরিষ্ঠরা শহর-গঞ্জে পা রাখলেও সভায় বসে অনাগ্রহী আনত মুখে মোবাইল নিয়ে খুটখুট করে যাবেন, যেন তাঁরা ‘অন্য কোথা, অন্য কোনওখানে।’ এ যদি গণতন্ত্র হয়, ফল অনুমেয়। দশ বছর ইউ পি এ রাজত্বে ক’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কত বার প্রদেশ এবং জেলা সফরে বেরিয়েছেন, পরিবার-পদলেহন না করে ওয়ার্কিং কমিটি সেই হিসেবটা করতে পারত।

এই সংযোগহীনতার কারণেই, যে পুনর্বণ্টনের রাজনীতি ছিল কংগ্রেস সভাপতি ও তাঁর সন্তানের মতে এ বারের তুরুপের তাস, সেই পুনর্বণ্টন ঠিক কেন, কী, কোথায়, সেটাও অধরা থেকে গেল। একে তো এই ধরনের সংস্কারের (দায়িত্ব ও) কৃতিত্ব অনেকটাই রাজ্য সরকারের ওপর বর্তায়, কেন্দ্রের পক্ষে সরাসরি সুফল পাওয়া মুশকিল। তার মধ্যে কংগ্রেসের নেতা বা বক্তারা এগিয়ে এসে তাঁদের সংস্কারের মুখ তুলে ধরছেন, এমন দৃষ্টান্ত প্রায় অদেখা। সামাজিক কর্মসূচি নিয়ে ইউপিএ-১ যা লাভ করার করেই ফেলেছিল, ইউপিএ-২ পর্বে তার আর তেমন প্রচার হল না। যাদের জন্য এই কর্মসূচি, তাদের কাছে এর দাম কমেই গেল। ‘আমরা সবাই রাজা’ গোছের নির্বাচনী প্রচার কিছু হল বটে, কিন্তু লোকে তাতে বিশেষ পাত্তা দেয়নি, দেওয়ার কথাও নয়। ২০০৪-০৯, ‘আম আদমি’ রাজনীতির যে আশা জেগেছিল, তার খর্বীকরণেই সম্ভবত এর উত্তর লুকিয়ে আছে।

আশাভঙ্গের পিছনে নিশ্চয়ই দুর্নীতি-ঘূর্ণির ভূমিকা আছে, বিজেপি থেকে বাম থেকে আপ, সকলের আত্যন্তিক কংগ্রেস-বিরোধী প্রচারের প্রভাবও আছে। কিন্তু তার চেয়ে অনেক গভীরে আছে কংগ্রেসের নিজের স্ববিরোধ। ভাবা দরকার ছিল, সত্যিই দরিদ্রবান্ধব সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শের ভিত্তিতে সংস্কারগুলির নৈতিক প্রতিষ্ঠা কতখানি সম্ভব, যেখানে নিয়ো-লিবারেল বিশ্বাসও এই দলের মধ্যে প্রায় সমান প্রাবল্যে বিরাজ করে, বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনায় কর্পোরেট গোষ্ঠী বা স্থানিক ক্ষমতাবান গোষ্ঠীর প্রাধান্য নিঃশর্তে ও নিঃশব্দে স্বীকৃত হয়, দরিদ্র-সাধনার ঢাকঢোলের পিছনে থাকে দেশময় অসাম্যের হু-হু বৃদ্ধি। দুর্নীতি কেলেঙ্কারিগুলির মূল ধাক্কাটা এখানেই পড়েছিল— দুর্নীতির কলঙ্কের থেকে নীতির দ্বিচারিতাটাই বড় ধস তৈরি করল। এত বড় ধস কি খাদ্য সুরক্ষা বিল দিয়ে বোজানো যায়? তাই কংগ্রেস যে সবচেয়ে বড় কর্পোরেট-বন্ধু, সেই অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও কংগ্রেস যে সবচেয়ে খাঁটি ‘আম-আদমি’ দল, এই আত্ম-বিজ্ঞাপন প্রমাণ করা অসম্ভব হয়ে উঠল।

দশ বছর আগে যখন বিরোধী পক্ষের ‘শাইনিং ইন্ডিয়া’-র প্রচার মুখ থুবড়ে পড়ে, তার চেয়েও অনেক গুণ বড় কংগ্রেসের এই ‘ইনক্লুসিভ গ্রোথ’ স্লোগানের ব্যর্থতা। কেবল উপরের কতগুলি শ্রেণির দেখভাল করার দাম চোকাতে হয়েছিল সে দিন বিজেপি-কে। কিন্তু কংগ্রেসকে চোকাতে হল আরও বড় দাম। ‘সকলকে নিয়ে চলা’র নামে বহুমুখী অসততা ও অসঙ্গতি দশ-দশ বছর দেশকে দিয়ে সহ্য করানোর দাম। এক দিকে বাজারদরের আকাশমুখিতা, অন্য দিকে আদর্শ, টু-জি, কোলগেট ইত্যাদির প্রবাহ: সর্বজনীন অর্থনীতির প্রেক্ষিত হিসেবে খুব গোলমেলে। কেবল ভোটের প্রচার হিসেবেও ইনক্লুসিভ গ্রোথ ও পুনর্বণ্টনকে তাই শক্ত জমিতে দাঁড় করানো গেল না। ওগুলো ‘রেটরিক’ই থেকে গেল, ‘আদর্শ’ হয়ে উঠতে পারল না।

পুনর্বণ্টন নীতিকে দলের অবদান হিসেবে বিশ্বাসযোগ্য করতে হলে দরকার ছিল সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধিও। কেবল যুব কংগ্রেস তৈরি করলেই সেটা হয়ে যায় না। রাজ্য রাজনীতিতে স্থানীয় দলগুলির সঙ্গে পাল্লা দেওয়াটাও জরুরি— হয় সরাসরি রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা, নয়তো স্ট্র্যাটেজিক চুক্তি। এ ক্ষেত্রে দলের দুর্বলতা চোখ-ধাঁধানো। বিভিন্ন শ্রেণি, বিভিন্ন ভাষাভাষী সমাজ, বিভিন্ন জাতপাতের সংযোগ দলীয় সংগঠনে আনার ন্যূনতম চেষ্টা না করেও যে একটি দল ক্রমাগত নিজেকে একক মহাদল ও মহৎ আদর্শের ফিরিওয়ালা মনে করে আসছে, এটাই সম্ভবত সবচেয়ে ‘ক্লাসিক’ স্ববিরোধ।

ঐতিহাসিক

এই সর্বশেষ স্ববিরোধটি কংগ্রেসের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার। একক সংগঠন হওয়ার ব্যাপারে তার উচ্চাশা ও অক্ষমতা, দুটোই অনেক পুরনো। আঞ্চলিক রাজনীতিতে কংগ্রেসের অসাফল্যের বেশ একটা ধারাবাহিক ইতিহাস আছে, স্বাধীনতা-পূর্ব কালে আঞ্চলিক মুসলিম লিগই হোক, আর স্বাধীনতা-পরবর্তী কালে আঞ্চলিক আইডেন্টিটি-নির্ভর দলগুলোই হোক, কংগ্রেসের জয়রথ ঘটা করে থামিয়ে দিতে পেরেছে। কংগ্রেস নিজেকে কোনও দিনই দেশের শিকড়ের সন্ধানে ছড়িয়ে দিতে পারেনি, কেননা শিকড়ের কাছাকাছি যে সত্তাভিত্তিক রাজনীতির প্রবণতা, সে খেলায় কংগ্রেস প্রথম থেকেই হেরে বসে আছে। গত শতাব্দীর শুরু থেকে কংগ্রেস নিজেকে ‘আমব্রেলা অর্গানাইজেশন’ বা বৃহচ্ছত্র রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখতে চায়, যে কোনও ভাবেই হোক নানা ভাষা নানা মত নানা শ্রেণিকে একটিমাত্র দল-রাজনীতির তলে নিয়ে আসতে চায়। সে স্বপ্ন স্বাধীনতার আগেই ধাক্কা খেতে শুরু করে, দেশের নানা কোণে যত আইডেন্টিটির সংস্কৃতি ও রাজনীতি বিকশিত হয়, ততই সে ধাক্কা প্রবল হয়। তবু সেখানে সাম্রাজ্যবিরোধিতা ছিল, নেই-নেই করেও একটা ‘জাতীয়তা’র অলঙ্কার ছিল। স্বাধীনতার পর ক্রমে সেই জাতীয়তা-অলঙ্কারও বিবর্ণ হয়ে গেল। বহুমুখী বহু-আদর্শী রেটরিক ভারতের রাজনীতিতে আর কার্যকর থাকল না। কেবল কংগ্রেস কেন, কোনও বড় জাতীয় দলের পক্ষেই আজ আর ভারতে কেবলমাত্র সর্বসমাজ-সমন্বয়ের স্লোগান নিয়ে সফল হওয়া কঠিন।

তা হলে? তা হলে অত্যন্ত জরুরি হয়ে ওঠে ব্যক্তি-নির্ভরতা বা ‘পরিবার’-নির্ভরতা। কংগ্রেস অবধারিত সেই পথে পা বাড়াল, বিশেষত উনিশশো পঁচাত্তরের পর। একটা সময় ছিল, যখন তেমন তেমন ব্যক্তি পেতে অসুবিধে হয়নি, সে-সব ব্যক্তির বিয়োগের সুবিধেটুকুও পাওয়া গেছে। কংগ্রেসের দুর্ভাগ্য, সেই সব ব্যক্তি-মহিমা আজ সুদূরবিগত। দুই দিক থেকেই কংগ্রেসের সংকট তাই আজ বড় তীব্র। বৃহৎ আদর্শের স্বপ্ন এমনিতেই চয়ন করা দুরূহ, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির কাছে সেই স্বপ্নের প্রাসঙ্গিকতা তৈরি করা আরও দুরূহ। অন্য দিকে, ব্যক্তি দিয়ে ভোটবাজি খেলায় ব্যক্তিই যদি নড়বড়ে হয়, তবে তো খেলায় নামার আগেই হার নিশ্চিত।

কিন্তু আশা চিরকুহকিনি, তাই মাথায় আকাশ ভাঙলেও পার্টি-লাইন মচকায় না। স্ববিরোধ নামক গুরুতর ব্যাধিটি তাই কংগ্রেসের শরীরে দুর্মর। ভেতরে ভেতরে দিব্যি জানা আছে যে, আদর্শ নয়, নীতি নয়, পদ্ধতি নয়, ব্যক্তি-নেতাই এ দলের চিরকালীন জিয়নকাঠি, তাই সংকট-মুহূর্তেও অভ্রান্ত ভাবে জরুরি ‘ব্যক্তি’দেরই বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওয়ার্কিং কমিটি। সুতরাং পরাজয়-পর্যালোচনা মানে পরিবর্তনের সাহস নয়, সাংগঠনিক সংস্কার নয়, গভীর আত্মমন্থনের সূত্র নয়, কেবল নিতান্ত নিপাট নির্দায় নেতার সুরক্ষার সুবন্দোবস্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

semanti ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE