Advertisement
E-Paper

লিখতে লিখতে থামছে কলম! ‘রাইটার্স ব্লক’ সমস্যার সমাধান লুকিয়ে কোন মন্ত্রে?

লেখকদের কাছে ‘রাইটার্স ব্লক’ খুব চেনা শব্দ। লেখালেখি করতে ভালবাসেন, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও এই সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু কেন?

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:১৫
লেখার ধরন বুঝতে কী সমস্যা হয়?

লেখার ধরন বুঝতে কী সমস্যা হয়? — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

সাহিত্য নিয়ে চর্চা, ইতিহাস নিয়ে গবেষণা কিংবা অঙ্কের জটিল সূত্রের সরলীকরণ— লেখার হাজার একটা বিষয়বস্তু রয়েছে। পড়াশোনার সঙ্গে লেখালেখির অভ্যাস রয়েছে, এমন পড়ুয়ার সংখ্যা কম নয়।

কেউ কেউ এই অভ্যাসকে শখ হিসাবে লালন পালন করেন, কেউ আবার শব্দের পরে শব্দ জুড়ে লেখক হওয়ার ভাবনাতে শান দেন। কিন্তু লিখতে লিখতেও কখনও কখনও কলম থেমে যায়! কোনও শব্দই সাদা কাগজে লেখা যায় না। ডায়েরি, জার্নাল কিংবা গবেষণাপত্র, এমনকি পরীক্ষার খাতায় লেখার ক্ষেত্রেও এই সমস্যার ভোগেন অনেকেই। এই সমস্যাকে ‘রাইটার্স ব্লক’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞেরা।

লেখা আসে না কেন?

লেখা আসে না কেন? — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

কেন হয় এমন?

সময়ের মধ্যে লেখা শেষ না হওয়া, মনের মতো লেখা লিখতে না পারা, প্রয়োজনের তুলনায় কম তথ্য পাওয়ার মতো একাধিক অনুঘটক রয়েছে ‘রাইটার্স ব্লক’-এর নেপথ্যে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক সায়ন্তন দাশগুপ্তের মতো, নতুন প্রজন্মের পড়ুয়াদের মধ্যে জীবন, সম্পর্ক নিয়ে দুশ্চিন্তার প্রভাব অনেক বেশি প্রকট। তার জেরে একই বিষয় নিয়ে কাজ করতে গিয়ে কলম থমকে যায়।

বর্তমানে সাহিত্য, গবেষণামূলক লেখায় নতুনত্বের অভাব লক্ষ্য করেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। তাঁদের মতে, অস্থির সময়ে কালজয়ী সাহিত্য রচনার ইতিহাসের সাক্ষী বাংলা। অথচ, আজকাল আর তেমন সাহিত্য রচনা হচ্ছে না। এর নেপথ্যেও ইঁদুরদৌড়ে শামিল হওয়া এবং উপস্থাপনার দক্ষতার অভাব স্পষ্ট বলে মনে করেন তাঁরা।

এ প্রসঙ্গে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সুখেন বিশ্বাস বলেন, “ভাল লেখার জন্য যে ধরনের সাধনার প্রয়োজন, তার অভাব রয়েছে নতুন প্রজন্মের মধ্যে। রাতারাতি জনপ্রিয়তার পিছনে ছুটতে গিয়ে গল্প বা সাহিত্য কী ভাবে লিখতে হবে, কেমন করে তা পেশ করতে হয়— তার কোনও স্পষ্ট দিশা থাকছে না।”

থেমে গেলে কী করণীয়?

থেমে গেলে কী করণীয়? — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

সমস্যার সমাধান?

বিশেষজ্ঞদের মতে, সমাজমাধ্যম, প্রযুক্তি নির্ভর যুগে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে সৃজনশীল ভাবনায় ছেদ পড়ছে। বিশেষত, পরীক্ষার সময় আগে থেকে তৈরি করে রাখা উত্তর লেখার অভ্যাসের কারণে যা শিখেছেন, তা লিখতে না পারার মতো সমস্যা দেখা যায় পড়ুয়াদের মধ্যে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সায়ন্তন দাশগুপ্ত বলেন, “একই রকম বিষয়ে অনেকগুলি লেখা লিখতে হবে, এমনটা ভেবেই মন দিয়ে পড়াশোনা এবং লেখার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। অতিরিক্ত চাপ, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলে হালকা ভাবে বিষয়টি নিয়ে ভাবা প্রয়োজন। এতে স্বাধীন ভাবে নিজের ছন্দে লেখা সম্ভব।”

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সুখেন বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রতিনিয়ত চর্চা এবং অভ্যাসের হাত ধরেই লেখার বাঁধন শক্ত হতে পারে। নিয়মিত দেশি এবং বিদেশি বই, প্রবন্ধ পড়া এবং তা নিয়ে ভাবনা চিন্তার হাত ধরে ই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

বাসন্তীদেবী কলেজের অধ্যাপক সঞ্চিতা মুখোপাধ্যায়ের মতে, “ভাবনার আলো সব সময় উজ্জ্বল হয়ে থাকবে, তা কিন্তু হয় না। তাই যে কোনও সময় খাতা-কলম নিয়ে বসে শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে নিতে পারলেই লিখতে না পারার আড় ভাঙতে পারে।” তিনি এই প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সাহিত্যিক উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ, ভার্জিনিয়া উলফ, ফিলিপ সিডনি-র লেখনির কথা উল্লেখ করেন, যাঁরা সাহিত্য সৃষ্টির সহজ পথের সন্ধান দিয়েছেন।

Write up Research Work Bengali Literature Tips For Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy