একটা সময় ছিল যখন কোনও বড় ঘটনার খবরের জন্য অপেক্ষা করতে হত রেডিয়ো সম্প্রচার অথবা পরের দিনের খবরের কাগজের। কিন্তু এখন বিশ্বায়নের যুগে উন্নতি হয়ছে প্রযুক্তির। মুঠোফোনের সাহায্যেই এক নিমেষে ভারত-পাকিস্তানের মতো বড় ঘটনার খবর মুহূর্তের মধ্যেই পাওয়া যায়। ডিজিটাল সাংবাদিকতার জেরেই এই অগ্রগতি। এখন বহু ডিজিটাল খবরের চ্যানেল খবর সম্প্রচার করে থাকে। কিন্তু অনেকের মতে, ডিজিটাল সাংবাদিকতার আড়ালে ক্রমশ বাড়ছে ফেক নিউজ় বা ভুয়ো খবরের বাড়বাড়ন্ত। আদৌ কি এই যুক্তি সঠিক! এই নিয়ে বিশেষ বিতর্কসভার আয়োজন করলেন মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের পড়ুয়ারা।
প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের উদ্যোগে মূলত আয়োজিত হয় এই সভার। ‘ডিজিটাল সাংবাদিকতা মানেই ফেক’— এর উপর ভিত্তি করেই চলে তর্ক-বিতর্ক। সভার পক্ষে ছিলেন ষষ্ঠ সিমেস্টারের বিদায়ী ছাত্র অর্কপ্রভ চক্রবর্তী, আকাশ দাস, সায়ন বসাক। সভার মতের বিপক্ষে বক্তব্য রাখেন দ্বিতীয় ও চতুর্থ সিমেস্টারের ছাত্রী রাজন্যা চক্রবর্তী, শীলা রাজবংশী এবং বৃষ্টি সেনগুপ্ত। টান টান উত্তেজনার মধ্যে চলে তর্ক-বিতর্ক। উঠে আসে একাধিক তথ্যসমৃদ্ধ বক্তব্য। বক্তাদের কথায় কখনও উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এবং সাধারণ মানুষের কাছে কী ভাবে অতি দ্রুত ডিজিটাল সাংবাদিকতা গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে, এমন বিষয়। কেউ আবার বললেন, আগামী দিনের ডিজিটাল সাংবাদিকতার পুঁজি ও বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে। ফেক নিউজ় বা ভুয়ো খবর রোখার ক্ষেত্রে সেন্সরশিপ ও প্রেস আইনের কথাও ওঠে সভায়। এ ছাড়াও ভোট রাজনীতি, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি-সহ আরও প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমেই বিস্তর আলোচনা চলে। সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক বিশ্বজিৎ দাস বলেন ‘‘সাংবাদিকতার ছাত্রছাত্রীদের এমন বিতর্ক উৎসাহ জোগাবে। তারা বিশ্লেষণ করতে শিখবে। যুক্তি সাজাতে শিখবে।’’
আরও পড়ুন:
এই বিতর্ক সভার সুবাদে সংবাদিকতা বিভাগে শুরু হচ্ছে ডিবেট ক্লাস। যেখানে প্রতি তিন মাস অন্তর ডিবেট ক্লাস করানো হবে। যেখানে শুধু ছাত্রছাত্রীরাই নন, বিশিষ্ট সাংবাদিকেরাও অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ।
কলেজে আয়োজিত এই বিতর্ক সভার বিচারক ছিলেন কলেজের অধ্যাপক এবং অধ্যাপিকারা। বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে বৃষ্টি সেনগুপ্ত পেয়েছেন সেরা বক্তার মুকুট। শেষমেষ ডিজিটাল সাংবাদিকতা মানেই যে ‘ফেক’ বা ভুয়ো, এই বক্তব্যকে যুক্তি সহকারে ভুল প্রমাণ করেছেন বিপক্ষের অংশগ্রহণকারীরা।