জাতীয় শিক্ষানীতিতে পড়ুয়াদের পঠনপাঠনের পাশাপাশি তাঁদের কর্মদক্ষ করে তোলার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ডিগ্রিলাভ নয়, ভবিষ্যতে পেশাদারি জগতে যাতে তাঁদের কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয়, তার জন্য দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি। এ বার সেই নির্দেশ মেনে এবং পড়ুয়াদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কলকাতার লোরেটো কলেজ একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করল।
গত ৪ মার্চ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত লোরেটো কলেজ বেসরকারি সংস্থা অলটিয়াস বায়োজেনিক্স প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। কলেজের প্লেসমেন্ট সেলের কোঅর্ডিনেটার সুরঞ্জনা মিত্র বলেন, “শিক্ষা এবং শিল্পক্ষেত্রের সংযোগস্থাপনের ক্ষেত্রে এটিই কলেজের প্রথম মেমোরেন্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং বা মউ। এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের নানা ভাবে সাহায্য করবে।”
তিনি জানিয়েছেন, মূলত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এই চুক্তি স্বাক্ষর। শিক্ষা এবং শিল্পক্ষেত্রের মধ্যে এই যোগসূত্র গড়ে উঠলে এক দিকে পড়ুয়াদের গবেষণামূলক কাজের ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য হবে। অন্য দিকে, বিভিন্ন সংস্থায় হাতে কলমে কাজ শেখার, প্রশিক্ষণ গ্রহণের এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে পড়ুয়ারা পড়াশোনার পাশাপাশি কর্মদক্ষ হয়ে উঠবে। যা তাঁদের আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে এবং চাকরির সুযোগ বৃদ্ধিতে নানা ভাবে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, জাতীয় শিক্ষানীতির পাশাপাশি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মান যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল বা ন্যাক-ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের উদ্যোগকে গুরুত্ব দেবে বলে জানিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে কলেজের আইকিউএসি কোঅর্ডিনেটার অমৃতা দাশগুপ্ত বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থার যে আমূল পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে, সেখানে ছাত্রছাত্রীদের কেবল মাত্র প্রথাগত এবং পুঁথিগত বিদ্যা চর্চা নয়, প্রয়োজন পেশাদারী কর্মসংস্থানের। সেদিকে মনোযোগ দিয়েই এই উদ্যোগ। শিল্প-ক্ষেত্রের সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সরাসরি যোগাযোগ করানোর এই প্রচেষ্টা পড়ুয়াদের মেধা এবং দক্ষতা— দু’য়েরই সার্বিক বিকাশ ঘটাবে।"
শুধুমাত্র ইন্টার্নশিপ বা চাকরির সুযোগ নয়, এই চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে যৌথ গবেষণা প্রকল্পের কাজ, বক্তৃতাসভা এবং কর্মশালার আয়োজন করা হবে। যা ভ্যালু অ্যাডেড কোর্সগুলির ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের নানা ভাবে সাহায্য করবে। পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকারাও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে সচেতন হওয়ার সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুন:
সুরঞ্জনা মিত্রের কথায়, “আপাতত এক বছরের জন্য এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এর প্রথম ধাপে একটি ‘প্লেসমেন্ট ড্রাইভ’-এর কথা ভাবা হয়েছে। আগামী ১৭ মার্চ কলেজে এর আয়োজন করা হবে।” তিনি জানিয়েছেন, বিভিন্ন কর্মসূচি ঘিরে পড়ুয়াদের উৎসাহ এবং তাঁদের অংশগ্রহণের উপর নির্ভর করে ভবিষ্যতে এই মউ-এর মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।