রেজিস্ট্রারের ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ঘর ছিল তালা দেওয়া। সুজিতের দাবি, তিনি এখনও রেজিস্ট্রার পদে রয়েছেন। বিষয়টি উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে উপাচার্যকে ই-মেল করে জানানো হয়েছে। অথচ তাঁকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, “আমি নিয়ম মতো দফতরের নির্দেশে কাজ করতে গিয়েছি। আমাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে।”
যদিও, উপাচার্য শঙ্করকুমার নাথের দাবি, সরকারি তরফে স্পষ্ট ব্যাখ্যা না পাওয়া পর্যন্ত তিনি কোনও ভাবেই অবসরপ্রাপ্ত সুজিতকুমার চৌধুরীকে রেজিস্টার পদে বসতে দেবেন না। এ দিন অবশ্য উচ্চশিক্ষা দফতরের ই-মেল পাওয়ার কথা স্বীকার করেন উপাচার্য। বলেন, “আগে কোনও ই-মেল পাইনি, তবে গতকাল পেয়েছি। কিন্তু যে সব বিষয় আমরা জানতে চেয়েছিলাম তার পূর্ণাঙ্গ উত্তর সেখানে নেই। আমি আবারও উচ্চশিক্ষা দফতরকে চিঠি দিয়েছি।” এ প্রসঙ্গে উপাচার্য তুলে এনেছেন আদালতের কথাও। বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন, তাই আইনানুগো পদক্ষেপের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছর জানুয়ারিতে। নিয়ম অনুযায়ী ৬০ বছর বয়স হলেই রেজিস্ট্রারের অবসর নেওয়ার কথা। কিন্তু কেউ আগ্রহী হলে দু'বছর অতিরিক্ত কাজ করতে পারেন। সেই মতো সুজিতকুমার চৌধুরীও ৬২ বছর অবধি কাজ করার আবেদন জানিয়েছিলেন শিক্ষা দফতরের কাছে। সেই অনুমতি এসে পৌঁছোয় ৩১ জানুয়ারি ২০২৫-এর পর। শুরু হয় জটিলতা। অনুমতি না পাওয়ায় অবসর নিতে বাধ্য হন সুজিত।
সুজিতবাবুর দাবি, ২০২৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে একটি ই-মেল পাঠিয়ে তাঁকে ৬২ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি চালিয়ে যেতে বলা হয়। সেই নির্দেশ মেনে তিনি ৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে রেজিস্ট্রার পদে দায়িত্ব পুনরায় গ্রহণ করতে চান। কিন্তু অভিযোগ, উপাচার্য তাঁকে দায়িত্ব নিতে বাধা দেন।
তত দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্টার পদে নিযুক্ত হয়েছেন অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি সামলাচ্ছিলেন দায়িত্ব। ৭ সেপ্টেম্বরের পর থেকে অবশ্য তিনি আর রেজিস্ট্রারের দফতরে বসেননি। এই ঘর তালা দেওয়াই রয়েছে।
ইতিমধ্যেই থানা পুলিশ হয়েছে। মামলা গড়িয়েছে হাই কোর্ট পর্যন্ত। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কে? এই প্রশাসনিক টানাপোড়েনের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকর্মও প্রভাবিত হচ্ছে।