চাকরিহারাদের জন্য জরুরি ঘোষণা করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার সরাসরি নবান্ন থেকে এই ঘোষণা করা হবে। সে কথা নিজের সমাজমাধ্যমেও জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। কিন্তু তার আগেই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক চেয়ে চিঠি পাঠালেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। এ দিন দুপুরে ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’র তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে ইমেলে।
নতুন করে পরীক্ষা না দিয়ে সরকার তাঁদের পুনর্বহালের জন্য কী ব্যবস্থা করছে, তার জবাব চাইতেই মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান চাকরিহারারা। ‘যোগ্য’রা জানান, তাঁরা নতুন করে আর পরীক্ষা দেবেন না। এ বিষয়ে সরকার কী ভাবে উদ্যোগী হচ্ছে, তা দু'জনের কাছ থেকেই জানতে চান তাঁরা। সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী-সহ সচিব পর্যায়ে দাবি জানানো হয়েছে।
চিঠিতে মোট পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন চাকরিহারারা। এই দাবির অন্যতম, ‘রিভিউ পিটিশন’-এ তাঁদের জিতিয়ে আনতে হবে সরকারকে। পাশাপাশি রয়েছে, পরীক্ষা না দিয়েই শিক্ষক পদে পুনর্বহালের দাবি এবং ‘সুপারনিউমারি পোস্ট’ তৈরি করে তাঁদের নিয়োগ করা দাবিও।
সোমবার ছিল রাজ্যের শিক্ষাসচিবের সঙ্গে চাকরিহারাদের বৈঠক। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর অনুপস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন শিক্ষকরা। দেড় ঘণ্টা বৈঠকে একাধিক প্রশ্ন রাখলেও কোনও সদুত্তর মেলেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। এর পরই আন্দোলনকে দিল্লিমুখী করার হুমকি দেওয়া হয় সংগঠনের তরফে। সরকারি তরফে অবশ্য শিক্ষাসচিবের সঙ্গে বৈঠককে ইতিবাচক বলেই দাবি করা হয়।
বিকাশ ভবনের সামনে ২১ দিন ধরে ধর্না দিচ্ছে চাকরিহারাদের একাংশ। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি পেশ করার জন্য সরকারকে সোমবার পর্যন্ত সময়সীমাও বেঁধে দেন তাঁরা। সেই দাবি মেনেই চাকরিহারাদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সোমবার বিকাশ ভবনে বৈঠক করেন শিক্ষাসচিব বিনোদ কুমার এবং সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রকল্পের ডিরেক্টর শুভ্র চক্রবর্তী।
বৈঠকে একাধিক বিষয় তুলে ধরেন চাকরিহারারা। তাঁদের দাবি, পরীক্ষা না দিয়ে চাকরিতে ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের বহাল রাখুক সরকার! বৈঠক শেষে চাকরিহারাদের পক্ষে বৃন্দাবন ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারের তরফে পুনর্বিবেচনা মামলার জন্য যে খসড়া করা হয়েছে, তা আমরা দেখেছি। আমরা পুরো বিষয়টি দেখেছি। দেখে ঠিকই মনে হয়েছে।’’
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ৩১ মে-র মধ্যে নতুন করে পরীক্ষায় বসার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চলেছে শিক্ষা দফতর। তবে তাতে আপত্তি রয়েছে চাকরিহারাদের। তাঁদের দাবি, ‘যোগ্য’দের কী ভাবে চাকরিতে পুনর্বহাল করা যায়, তা দেখুক সরকার। বৃন্দাবনের কথায়, ‘‘রিপ্যানেল করে চাকরি নিশ্চিত করা হোক।’’