Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাখড়া কাণ্ডে গ্রেফতার বিজেপি নেতা শেখ সামাদ

সদাই শেখের পর এ বার শেখ সামাদ। বীরভূম থেকে ফের এক বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মাখড়ায় তৃণমূল কর্মী খুন, সিরশিট্টায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগ-সহ এলাকায় একাধিক অপরাধমূলক কাজের জন্য সামাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে পাড়ুইয়ে তাঁর নিজের বাড়ি থেকে বিজেপির এই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। দুপুরে তাকে সিউড়ি আদালতে তোলা হলে অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অর্ণব রায়চৌধুরী তাঁর সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অভিযুক্ত শেখ সামাদকে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অভিযুক্ত শেখ সামাদকে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ১৩:৩৫
Share: Save:

সদাই শেখের পর এ বার শেখ সামাদ। বীরভূম থেকে ফের এক বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মাখড়ায় তৃণমূল কর্মী খুন, সিরশিট্টায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগ-সহ এলাকায় একাধিক অপরাধমূলক কাজের জন্য সামাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে পাড়ুইয়ে তাঁর নিজের বাড়ি থেকে বিজেপির এই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। দুপুরে তাকে সিউড়ি আদালতে তোলা হলে অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অর্ণব রায়চৌধুরী তাঁর সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

মাখড়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত মাসের শেষ দিকে বীরভূমের মহম্মদবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয় বিজেপি নেতা সদাই শেখকে। সদাইয়ের পরে এলাকার সংগঠনকে মজবুত করার গুরুদায়িত্ব এসে পড়ে সামাদের উপর। রাজ্যে বিজেপির চলতি হাওয়ার ‘বেগ’ জেলায় বাড়াতে সফলও হচ্ছিলেন তিনি। বিজেপির অভিযোগ, সেই কারণেই গ্রেফতার করা হল সামাদকে। বাম জমানায় সামাদ ছিলেন কট্টর বাম সমর্থক। পরে অনেকের মতো শিবির বদলান, যোগ দেন বিজেপিতে।

সামাদের গ্রেফতারি নিয়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে বিজেপির জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল দাবি করেছেন, “অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার করুক এটা আমরাও চাই। কিন্তু বেছে বেছে শুধু মাত্র বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা অনুচিত। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরও গ্রেফতার করতে হবে।” বিজেপির এই অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূল। দলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মণ্ডল বলেছেন, “বিজেপির এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রশাসন সঠিক কাজই করছে। আমাদেরও বেশ কিছু নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছে।”

গত ২৪ অক্টোবর চৌমণ্ডলপুরে বোমা এবং অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের আক্রমণের মুখে পড়ে আহত হন পাড়ুই থানার ওসি প্রসেনজিত্ দত্ত। সে দিন পুলিশকে আক্রমণে সদাই শেখের সঙ্গে সামাদও নেতৃত্বে ছিলেন বলে অভিযোগ করে তৃণমূল। পুলিশ সামাদ-সদাই-সহ ৪৩ জন বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। এর দিন দু’য়েক পরে গ্রাম দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাড়ুই থানার অন্তর্গত মাখড়া গ্রাম। উভয় পক্ষের বোমাবাজি ও গুলির লড়াইয়ে নিহত হন তিন জন। তাঁদের মধ্যে দু’জন তৃণমূলকর্মী এবং একজন বিজেপিকর্মী ছিলেন। এই ঘটনার জন্যও সামাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে শাসকদল।

এই দুই ঘটনার পর থেকে রাজনৈতিক সংঘর্ষের আখড়া হয়ে উঠেছে রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তের এই জেলা। চৌমণ্ডলপুর, মাখড়া, যাদবপুর, সিরশিট্টা, ইমাদপুর— পাড়ুই থানার অন্তর্গত এই গ্রামগুলিতে রাজনৈতিক হিংসা ছড়ায়। ওই সব গ্রামগুলিতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বীরভূম জেলা বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ তোলেন, পুলিশ বেছে বেছে বিজেপি সমর্থকদেরই গ্রেফতার করছে। তল্লাশির নামে পুলিশের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগও তোলে বিজেপি।

এ দিনের গ্রেফতারির পরও একই অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের অভিযোগ, চৌমণ্ডলপুর থেকে মাখড়া— সব ক্ষেত্রেই বারবার জড়িত থাকার অভিযোগ্ উঠেছে জাফারুল ইসলাম, শেখ মোস্তাফা এবং নুরুল ইসলাম নামে তিন তৃণমূলকর্মীর। তাদের আরও অভিযোগ, পুলিশের খাতায় এই তিন জনের নাম থাকলেও শাসক দলের চাপে ওই তিন জনকে ধরা হচ্ছে না। এ দিন ফের এক বিজেপি নেতার গ্রেফতারের পর সেই বিতর্ক আরও উস্কে দিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE