Advertisement
০৮ মে ২০২৪

বিমান ধ্বংস করেছেন কো-পাইলটই, জানাল তদন্তকারী দল

জার্মানউইঙ্গসের এয়ারবাস এ৩২০ ভেঙে পড়া দুর্ঘটনা নয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিমানটিকে ধ্বংস করেছেন কো-পাইলটই। এমনই অভিযোগ আনলেন বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে নিযুক্ত ফ্রান্সের বিশেষজ্ঞরা। ভেঙে পড়ার সময়ে কো-পাইলট সজাগ ছিলেন। তিনিই বিমানটিকে নীচে নামিয়ে আনেন। তবে এটি সন্ত্রাসবাদী ঘটনা কি না তা এখনও পরিষ্কার নয়।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ১৯:৪৭
Share: Save:

জার্মানউইঙ্গসের এয়ারবাস এ৩২০ ভেঙে পড়া দুর্ঘটনা নয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিমানটিকে ধ্বংস করেছেন কো-পাইলটই। এমনই অভিযোগ আনলেন বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে নিযুক্ত ফ্রান্সের বিশেষজ্ঞরা। ভেঙে পড়ার সময়ে কো-পাইলট সজাগ ছিলেন। তিনিই বিমানটিকে নীচে নামিয়ে আনেন। তবে এটি সন্ত্রাসবাদী ঘটনা কি না তা এখনও পরিষ্কার নয়। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার-এর তথ্য বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে বিমানটি ভেঙে পড়ার সময়ে ক্যাপ্টেন ককপিটে ছিলেন না। তিনি ককপিটে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু দরজা বন্ধ থাকায় তিনি ঢুকতে পারেননি বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, ব্ল্যাকবক্সের অন্য অংশ ‘ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার’-এর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু এটির যে চিপের মধ্যে তথ্য জমা থাকে সেটি বিছিন্ন হয়ে গিয়েছে। চিপটির এখনও খোঁজ মেলেনি।

জার্মানউইঙ্গসের বার্সেলোনা থেকে ডুসেলডর্ফগামী ৪ইউ৯৫২ বিমানটি দক্ষিণ ফ্রান্সের আল্পসের পাদদেশে মঙ্গলবার ভেঙে পড়ে। বিমানটিতে ১৪৪ জন যাত্রী এবং ছ’জন বিমানকর্মী ছিলেন। আল্পসের বেশ খানিকটা অঞ্চল জুড়ে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে আছে। ছড়িয়ে আছে দেহাবশেষও। অঞ্চলটি বেশ দুর্গম এবং আবহাওয়ার মাঝেমধ্যেই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই তিন দিন ধরে উদ্ধারকারী দল ও তদন্তকারী দল খোঁজ চালাচ্ছে। বিমানটির কোনও অংশই অক্ষত নেই।

জানা গিয়েছে, শেষ সংযোগ হওয়া পর্যন্ত বিমানটি ৩৮ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়ছিল। এর পরে ১০ মিনিটের মধ্যে বিমানটি দ্রুত নীচে নেমে আসে। এ ভাবে বিমানটির নেমে আসা অস্বাভাবিক হলেও এর থেকে যান্ত্রিক গোলযোগের প্রমাণ মেলে না। পাইলটের পক্ষ থেকে কোনও যান্ত্রিক গোলযোগের খবরও দেওয়া হয়নি। এর কিছু ক্ষণ পরে ভেঙে পড়ে সেটি। এই সময়ে আবহাওয়া স্বাভাবিক ছিল। তা হলে কী ভাবে বিমানটি ভেঙে পড়ল? এই প্রশ্ন নিয়েই ধন্দে ছিল তদন্তকারী দল।

তদন্তকারী দলের পক্ষ থেকে মার্সেইল্লে-র প্রসিকিউটার ব্রিস রবিন জানান, ‘ককপিট ভয়েস রেকর্ডার’-এর তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, বিমানটি ভেঙে পড়ার সময়ে ক্যাপ্টেন ককপিটে ছিলেন না। তিনি ককপিটের ভিতরে ঢোকার জন্য প্রথমে আস্তে, পরে জোরে দরজা ধাক্কা দিচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এর পরে শব্দ শুনে মনে হচ্ছে ক্যাপ্টেন দরজা ভাঙার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ককপিটের দরজা খোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। কো-পাইলটের কোনও কথা ‘ককপিট ভয়েস রেকর্ডার’-এ পাওয়া যায়নি। শুধু তাঁর নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা গিয়েছে। এর থেকে তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা, ক্যাপ্টেন শেষ পর্যন্ত ককপিটে ঢুকতে পারেননি। দুর্ঘটনার সময়ে ককপিটে কো-পাইলট বেঁচে ছিলেন ও সজাগ ছিলেন। বিমানটি তখন ‘অটো পাইলট’-এ ছিল না। চালাচ্ছিলেন কো-পাইলটই।

রবিন জানিয়েছেন, বিমানের পাইলট নাম প্যাট্রিক এস। তাঁর প্রায় ১০ বছর বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা আছে। আর এয়ারবাস এ৩২০ উড়িয়েছেন প্রায় ছ’হাজার ঘণ্টা। অন্য দিকে, কো-পাইলট হলেন ২৮ বছর বয়সী জার্মান আন্দ্রেজ গুন্টার লিবত্জ। কিন্তি কেন তিনি বিমানটিকে ধ্বংস করলেন তা এখনও তদন্তকারীদের কাছে স্পষ্ট নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE