বিটি রোডে স্বাভাবিক রয়েছে যান চলাচল। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
দলীয় নেতৃত্বকে মারধর করার প্রতিবাদে ১০ ঘণ্টা কামারহাটি বন্ধের ডাক দিয়েছিল সিপিএম। বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া সেই বন্ধে মিশ্র সাড়া মিলেছে। কোথাও দোকানপাট খোলা রয়েছে তো কোথাও আবার বন্ধ। তবে যে এলাকার গণ্ডগোলকে ঘিরে এই বন্ধের ডাক দিয়েছিল সিপিএম, সেই বেলঘরিয়া এলাকার প্রায় সব দোকানপাটই খোলা রয়েছে। জনজীবনও কার্যত স্বাভাবিক।
গত সোমবার রাতে স্থানীয় এক সিপিএম নেতার বাড়িতে দেওয়াল লিখনকে ঘিরে গণ্ডগোলের সূত্রপাত। আক্রান্ত হন এলাকার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়-সহ স্থানীয় নেতা নন্দলাল বসু, সিটু নেতা সুভাষ মুখোপাধ্যায়, এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবজ্যোতি দাসেরা। তাঁদের ব্যাপক মারধর করা হয়। অভিযোগের আঙুল ওঠে তৃণমূলের দিকে। আহত সিপিএম নেতাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন ১২ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দেয় সিপিএম।
এ দিন সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আংশিক ভাবে বন্ধ রয়েছে আড়িয়াদহ, ফিডার রোড এবং দক্ষিণেশ্বর মিউনিসিপ্যাল মার্কেট। তবে, বেলঘরিয়া-সহ বাকি এলাকার বেশির ভাগ দোকানপাটই খোলা রয়েছে। যান চলাচল থেকে শুরু করে জনজীবনে বন্ধের কোনও প্রভাব পড়েনি ওই সব এলাকায়।
বন্ধ নিয়ে কী বলছে সিপিএম?
দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বন্ধ কোনও ভাবেই ব্যর্থ নয়। কিছু কিছু জায়গায় বেশ ভালই সাড়া মিলেছে। আসলে শাসকদল আমাদের কোনও প্রচার করতে দেয়নি।’’ মঙ্গলবারই জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়ে দিয়েছিলেন, এলাকায় কোনও বন্ধ করতে দেবেন না তাঁরা। তবে, এ দিন সকাল থেকে এলাকায় কোনও দলেরই কর্মী-সমর্থককে পথে নামতে দেখা যায়নি।
বিরোধীদের উপর আক্রমণের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন স্থানীয় বাদামতলায় একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সিপিএম। এ দিন দুপুরে বাদামতলার সেই সভামঞ্চে গিয়ে দেখা যায়, মঞ্চ বাঁধার কাজ চলছে। সেখানে রয়েছেন দলের বেশ কয়েক জন কর্মী এবং কামারহাটি থানার কয়েক জন পুলিশ কর্মী। যে জায়গায় এই মঞ্চ বাঁধার কাজ চলছে, তার সামনের প্রায় সব দোকানপাট খোলা রয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক নেপাল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের তো এই এলাকাতেই করে খেতে হবে। ওঁরা তৃণমূলের ভয়ে দোকান খুলতে বাধ্য হয়েছেন।’’ তবে দোকানদের বক্তব্য, তাঁরা কোনও রাজনীতির ভেতর যেতে চান না।
যে দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা তথা বিধায়কের কথায় এক কালে কামারহাটি উঠত-বসত, সেই মানসবাবুর মার খাওয়ার ঘটনায় স্থানীয় মানুষ তেমন ভাবে সাড়া দিলেন না কেন?
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, মানসবাবুরা এক কালে যে অত্যাচার চালিয়েছেন মানুষ সেটা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারেনি। তাই, এখন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে তিনি মার খাওয়ায় এলাকার মানুষের মনে কোনও প্রভাব পড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy