Advertisement
E-Paper

তৃণমূলে ডানা আরও ছাঁটা হল মুকুলের

ডানা ছাঁটার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল আগেই। শনিবার তাতে কার্যত আনুষ্ঠানিক সিলমোহর পড়ল। তৃণমূলের অন্দরে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়কে আরও গুরুত্বহীন করে দিয়ে সাংগঠনিক রদবদল ঘটালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২০:৪১
শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠকের শেষে পার্থ চট্টোপাধায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সৌগত রায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: প্রদীপ আদক।

শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠকের শেষে পার্থ চট্টোপাধায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সৌগত রায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: প্রদীপ আদক।

ডানা ছাঁটার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল আগেই। শনিবার তাতে কার্যত আনুষ্ঠানিক সিলমোহর পড়ল। তৃণমূলের অন্দরে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়কে আরও গুরুত্বহীন করে দিয়ে সাংগঠনিক রদবদল ঘটালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হল দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে। দলের প্রতিষ্ঠাতা রাজ্য সভাপতিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ার পাশাপাশি এ দিন তৃণমূল নেত্রী দলে সহ-সভাপতির পদটিও তৈরির কথা ঘোষণা করলেন। ওই পদের দায়িত্বে এলেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী ও সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে তাঁর প্রশংসায় রাজনৈতিক মহলে বেশ কিছু দিন ধরে তাঁকে নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। দীনেশ যাতে দলবিরোধী কোনও পদক্ষেপ না করতে পারেন, তা আটকাতেই তাঁকে দলের সহ-সভাপতি পদের দায়িত্ব দেওয়া হল বলে তৃণমূলের সূত্রের ব্যাখ্যা। প্রসঙ্গত, রাজীব গাঁধীর সভাপতিত্বে কংগ্রেসে প্রথম বার সর্বভারতীয় স্তরে সহ-সভাপতির পদটি তৈরি হয়েছিল। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সঙ্গে মতবিরোধ নিরসনে সে সময় অর্জুন সিংহকে ওই পদে বসানো হয় বলে দলীয় সূত্রে খবর।

বিভিন্ন জেলার সভাপতিদের নিয়ে এ দিন তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা। আসন্ন পুরভোট নিয়ে বৈঠক ডাকা হলেও এ দিন দলের সাংগঠনিক রদবদলই মুখ্য হয়ে ওঠে। বৈঠকে মমতা নিজে জানান, অন্য রাজ্যেও তিনি দলকে সম্প্রসারিত করতে চান। সে জন্যই সংগঠনের কিছু পদে নতুন অন্তর্ভুক্তি করতে হচ্ছে।

বৈঠকের পরে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দলের বর্ষীয়ান দুই নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সৌগত রায় এবং সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে বলেন, “জাতীয় স্তরে আমাদের দলের ভূমিকা বিস্তৃত হচ্ছে। সবাই চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে বিভিন্ন রাজ্যে নিজে যান। সে দিকে খেয়াল রেখেই জাতীয় স্তরে দলের কিছু পদে নতুন অন্তর্ভুক্তি হয়েছে।” বক্সি ও দীনেশের নতুন দায়িত্বভারের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েনকে জাতীয় স্তরে সমমনোভাবাপন্ন দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। জাতীয় সম্পাদকমণ্ডলীতে ফিরহাদ হাকিম, কাকলি ঘোষদস্তিদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

এত দিন উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব ছিল মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের উপর। সব্যসাচীর বদলে এখন থেকে ত্রিপুরার দায়িত্ব সুব্রত মুখোপাধ্যায়, অসমে শুভেন্দু অধিকারী দলের দায়িত্ব সামলাবেন বলে মমতা ঘোষণা করেন। উত্তর-পূর্বের বাকি রাজ্যগুলি এবং কেরলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছেন ডেরেককে। তা হলে কি সব্যসাচীকে উত্তর-পূর্বের দায়িত্ব থেকে একেবারে সরিয়ে দেওয়া হল? এর জবাবে দলের এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য: “নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হলে পুরনোদের তো সরে যেতেই হয়!”

চলতি বছরের শুরু থেকে দলের সদস্যকরণ অভিযান চলছে। সেই কাজ আরও ত্বরান্বিত করার ব্যাপারেও এ দিনের বৈঠকে দলের জেলা সভাপতিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। পুরভোটে দলের সাংগঠনিক তত্‌পরতা বাড়াতে জেলা ও রাজ্যস্তরে দু’টি কমিটি গড়ে দিয়েছেন মমতা। প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে সার্বিক পুরভোট পরিচালনার প্রক্রিয়া পর্যালোচনার কাজ এই দুই কমিটিকে করার নির্দেশ দেন মমতা। প্রাথমিক বাছাইয়ের পরে অবশ্য প্রত্যাশিত ভাবেই চূড়ান্ত প্রার্থী-তালিকা অনুমোদন করবেন দলনেত্রী স্বয়ং।

mukul roy tmc mamata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy