এবি তাণ্ডব। ছবি: এএফপি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দেখলেই কি জ্বলে ওঠেন আব্রাহাম বেঞ্জামিন ডি’ভিলিয়ার্স? শুক্রবারের পর সেই প্রশ্নটাই ঘুরছে ক্রিকেট মহলে। মাস খানেক আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে করেছিলেন দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি এবং সেঞ্চুরির রেকর্ড। আর শুক্রবার করলেন দ্রুততম দেড়শোর রেকর্ড। আর সেই রেকর্ডের ধাক্কায় ধরাশায়ী হতে হল গেইল-হোল্ডারদের।
সিডনিতে এ দিন টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের ম্যাচে ভারতের কাছে হারের পর এ দিন জিততে মরিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা নেমেছিল ডুমিনি, ফিল্যান্ডার এবং পার্নেলকে ছাড়া। এদের মধ্যে আবশ্য আগের ম্যাচেই চোট পান ফিল্যান্ডার। তবে ইনিংসের প্রথম দিকে কুইন্টন ডি’ককের উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই ছিল প্রোটিয়ারা। এমনকী দ্বিতীয় উইকেটে আমলা-দু’প্লেসি বিশ্বকাপে দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ (১২৭) করলেও ম্যাচের অবস্থান ছিল ৫০:৫০। ম্যাচের ৩০তম ওভারে দু’জনকেই আউট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ভাল অবস্থায় নিয়ে যান গেইল। তবে সেই ‘ভাল’ অবস্থা যে কতটা ক্ষণস্থায়ী তার প্রমাণ পাওয়া গেল কিছু পরেই। ক্রিজে এসে সেট হতে পাঁচ ওভার মতো সময় নিয়েছিলেন রিলি রসো এবং ডি’ভিলিয়ার্স। তার পরই শুরু হয় পাল্টা মার। ৩৪ ওভারের শেষে প্রোটিয়া বাহিনীর রান ছিল ১৭৬। সেই স্কোর যে ৪০০ পেরোবে, সেটা বোধহয় অতি বড় দক্ষিণ আফ্রিকান সমর্থকও ভাবতে পারেননি। শেষ ১৬ ওভারে উঠল ২৩২ রান। তার মধ্যে শেষ ৩.২ ওভারে ওঠে ৮০! এর মধ্যে অধিনায়ক একাই করেন ৬৮। ১৭টি চার এবং ৮টি ছয় মেরে ৬৬ বলে ১৬২ করেন ডি’ভিলিয়ার্স একাই। করলেন দ্রুততম দেড়শোর রেকর্ড। ঠিক কতটা ‘নিষ্ঠুর’ ব্যাটিং করেছেন এবি? একটা ছোট্ট নমুনা দেওয়া যাক। প্রথম স্পেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৫ ওভার, ২ মেডেন, ৯ রান এবং এক উইকেট। ওয়ান ডে ক্রিকেটের ভরা বাজারে যা যথেষ্ট ঈর্ষণীয়। সেই হোল্ডার পরের পাঁচ ওভারে দিলেন ৯৫ রান। সৌজন্যে অবশ্যই ডি’ভিলিয়ার্স। রাসেল-টেলর-বেন— প্রোটিয়া অধিনায়কের ‘বিষ নজর’ থেকে বাঁচলেন না কেউই।
শেষ ১৮ ম্যাচে মাত্র এক বার দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চারশোর উপর স্কোর উঠে যাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার জেতাটা ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। একমাত্র রক্ষাকর্তা যিনি হতে পারতেন, সেই গেইল করলেন ৩ রান। মাত্র ৩৩ ওভার স্থায়ী হল ক্যারিবিয়ান ইনিংস। সর্বোচ্চ স্কোর ন’নম্বরে নাম জেসন হোল্ডারের। লেগ স্পিনার ইমারান তাহির নিলেন পাঁচ উইকেট।
ডি’ভিলিয়ার্সের ব্যাটিং দেখে ইংল্যান্ডের স্পিনার গ্রেম সোয়ানের উক্তি, “এবি মানুষ নয়। নিশ্চই ও টার্মিনেটর জাতীয় কিছু। ওর শরীর কাটলে রক্ত নয়, তরল ধাতু বের হবে।” আর এক বার এই ধরনের ইনিংস খেললে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তরফ থেকেই না এই দাবি তোলা হয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy