Advertisement
E-Paper

মিশরের শান্তি প্রস্তাবে রাজি নয় হামাস, আবার হামলা ইজরায়েলের

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ১৯:৪৩
হামাস শান্তির প্রস্তাবে রাজি না-হওয়ায় গাজায় ফের ইজরায়েলি হামলা। ছবি: এপি।

হামাস শান্তির প্রস্তাবে রাজি না-হওয়ায় গাজায় ফের ইজরায়েলি হামলা। ছবি: এপি।

গাজায় আবার আঘাত হানল ইজরায়েল। এর আগে মিশরের দেওয়া শান্তি চুক্তির প্রস্তাব মেনে নিয়েছিল ইজরায়েলের নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাবিনেট। কিন্তু হামাসের সামরিক বিভাগ, কোয়াসিম ব্রিগেড, প্রস্তাবটি মানতে নারাজ। এ দিন তারা ৪৭টি রকেট ছুঁড়েছে বলে ইজরায়েলের অভিযোগ। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানেয়াহুর নেতৃত্বে এক জরুরি বৈঠকে শান্তি চুক্তি মানার সিদ্ধান্ত হয়। সোমবার কায়রোতে আরব লিগের বৈঠকে মিশর এই শান্তি প্রস্তাব দেয়।

গত সাত দিন ধরে গাজায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইজরায়েল। প্রধানত বিমান আক্রমণ চালানো হচ্ছে। হামলায় প্রায় ১৯০ জন প্যালেস্তিনীয়র মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। সংঘর্ষ থামাতে নানা কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছিল। আরব লিগের নেতারা কায়রোতে আলোচনা করছিলেন। সেখানেই মিশরের বিদেশ মন্ত্রক এই প্রস্তাব দেয়। এর আগে ২০১২-এ ইজরায়েল ও প্যালেস্তিনীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে মিশর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। এ বারের শান্তি প্রস্তাবে আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু করার কথা বলা হয়েছিল। ঠিক ছিল, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্যালেস্তিনীয় ও ইজরায়েলের প্রতিনিধি দল কায়রো যাবেন। তাঁরা আলাদা আলাদা ভাবে আরব লিগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। সেখানে পারস্পরিক বিশ্বাস অর্জনের জন্য কী কী পদক্ষেপ করা যায় তা আলোচিত হতে পারে বলে জানা গিয়েছিল।

আগে শান্তি প্রস্তাব মেনে নিয়ে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানেয়াহু-র আশা প্রকাশ করেছিলেন, এই সুযোগে হামাস গাজা থেকে অস্ত্র সরিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু এর পরেও হামাস হামলা না থামালে আবার ইজরায়েলের আক্রমণ শুরু হবে। সে ক্ষেত্রে ইজরায়েলের পদাতিক সেনা গাজায় প্রবেশ করতে পারে বলে তিনি হুমকি দেন। অন্য দিকে, প্রস্তাবটি নিয়ে প্রথম থেকেই ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি হামাস। হামাসের সামরিক বিভাগ প্রস্তাবটি তক্ষণাৎ বাতিল করে দেয়। তারা আক্রমণের তীব্রতা বাড়ানোর হুমকি দেয়। যদিও হামাসের রাজনৈতিক বিভাগ প্রস্তাবটি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে বলে জানিয়েছিল। গাজার অন্য প্যালেস্তিনীয় সংগঠনগুলিও প্রস্তাবটি বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছিল। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে প্যালেস্তিনীয় প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস রক্তপাত বন্ধ করতে হামাসকে প্রস্তাবটি বিবেচনা করার জন্য আবেদন করেছিলেন।

এ দিকে হামাসের তরফে দাবি করা হয়েছিল, শান্তি ফেরাতে অবিলম্বে ইজরায়েলকে গাজার অবরোধ হঠাতে হবে। সাত বছর আগে গাজায় নির্বাচনের মাধ্যমে হামাস ক্ষমতায় আসার পরে ইজরায়েল এই অবরোধ শুরু করে। অবরোধে গাজার অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে বলে হামাসের অভিযোগ। পাশাপাশি, ইজরায়েলে বন্দি থাকা প্যালেস্তিনীয়দের মুক্তির দাবিও তারা করেছিল। অন্য দিকে, মুসলিম ব্রাদারহুডের সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মিশরের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পরে রাফা সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয় এই অঞ্চলের সুড়ঙ্গগুলিও। এই সীমান্ত দিয়ে গাজায় রসদ ও অস্ত্র আসত বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। হামাসের তরফে এই সীমান্ত খোলারও আবেদন জানান হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে শান্তি প্রস্তাবে কিছু বলা হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে মিশরের আল সিসি সরকারের সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক ভাল নয়। সিসি সরকার মনে করে হামাস মুসলিম ব্রাদারহুডের অনুগামী। তা ছাড়া হামাস সিনাই উপদ্বীপে বিদ্রোহীদের মদত দেয় বলেও মিশরের অভিযোগ। ফলে মিশরের পক্ষ থেকে শান্তি প্রস্তাব আসায় বিশ্ব-রাজনৈতিক মহল কিছুটা হলেও বিস্মিত হয়েছিল। এই পারস্পরিক অবিশ্বাস শান্তি চুক্তি মানার অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরির এ দিন মধ্যপ্র্যাচ্য সফরে আসার কথা ছিল। কিন্তু মিশরের দেওয়া শান্তি প্রস্তাবের ফলাফল দেখার জন্য তিনি সফর কিছুটা পিছিয়ে দিয়েছেন। এই শান্তি প্রস্তাবে সুফল মিলবে বলে জন কেরি আশা প্রকাশও করেন।

gaza air strike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy