Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Abhishek Banerjee

‘২০২১-এর থেকেও বাংলায় খারাপ ফল করবে বিজেপি’, রাজভবনে নালিশ জানিয়ে বেরিয়ে বললেন অভিষেক

সোমবার রাতে রাজ্যপালে সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বেরিয়ে অভিষেক দাবি করেন, ২০২১ সালের থেকেও খারাপ ফল হবে বিজেপির। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও আঙুল তুললেন তিনি।

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের প্রতিনিধিদল।

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ২২:৫৮
Share: Save:

এত দিন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করেছে। এ বার নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করছে। তার পরেও ২০২১ সালের থেকেও খারাপ ফল করবে বিজেপি। সোমবার রাতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাজভবন থেকে বেরিয়ে এমনটাই দাবি করলেন অভিষেক। বিজেপির পাশাপাশি আঙুল তুললেন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও। অভিযোগ, বিজেপির বশ্যতা স্বীকার করেছে তারা। মেরুদণ্ড বিকিয়ে দিয়েছে।

দিল্লিতে সোমবার নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের ১০ জনের প্রতিনিধি দল। কমিশনের কাছে নিজেদের অভিযোগ এবং দাবি জানিয়ে বাইরে এসে ধর্নায় বসে তারা। সেই ধর্না তুলে পুলিশ তৃণমূল নেতাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তৃণমূলের অভিযোগ, ‘হেনস্থা’ করা হয়েছে তাঁদের। তা নিয়ে রাতে কলকাতায় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক-সহ তৃণমূলের ১১ জন নেতানেত্রী। রাজভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনে দিল্লির ঘটনার নেপথ্যে কমিশনকেই দুষেছেন তিনি। অভিযোগ করেন, কমিশন মেরুদণ্ড বিকিয়ে দিয়েছে। কেন এ কথা বলছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তিও দেন। এই প্রসঙ্গে তিনি জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র এসপি ধনরাম সিংহের বাড়িতে বিজেপি নেতা জিতেন তিওয়ারির যাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। অভিষেকের অভিযোগ, তার পরেই ধড়পাকড় শুরু হয়েছে রাজ্যে। তাঁর কথায়, ‘‘২৬ তারিখ (মার্চ) এনআইএ-র এসপি ধনরামের সঙ্গে বৈঠক হয় জিতেনের। ২৭ তারিখ নোটিস এল গ্রেফতারি নিয়ে। নোটিস কেন আগে এল না? কেন জিতেনের সঙ্গে বৈঠকের পর নোটিস এল।’’ এর পরেই তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেন সেই এনআইএর প্রধান বদল হবে না।’’ তিনি আবারও জানান, তাঁদের অভিযোগ আসলে কমিশনেরই বিরুদ্ধে। বিজেপির বিরুদ্ধে নয়।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

এর পরেই অভিষেক দাবি করেন, ২০২১ সালের থেকেও খারাপ ফল হবে বিজেপির। তাঁর কথায়, ‘‘ভোর ৪টে গিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করে এনআইএ। স্থানীয় পুলিশকে খবর দেওয়া হয় ৫টা ৪৫ মিনিটে। আর সংবাদমাধ্যমকে গ্রেফতারির কথা আগেভাগে জানিয়ে রেখেছে ভোর ৪টের সময়। সাধারণ মানুষকে বোকা ভাবছেন? ২০২১-এর থেকেও খারাপ পরিণতি হবে বিজেপির।’’ তৃণমূল সেনাপতির আরও কটাক্ষ, এত দিন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করেছে বিজেপি। এ বার কমিশনকে ব্যবহার করেছে। ৪৮ ঘণ্টায় দু’বার রাজ্যের ডিজি বদল করা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এনআইএর এসপি কেন বদল হবে না?’’ এর পরই অভিষেক জানান, দিল্লিতে যে ঘটনা হয়েছে, তাতে তিনি বিজেপিকে দোষ দিচ্ছেন না। কারণ, দেশে এখন নির্বাচনী আচরণবিধি জারি রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা এখন কমিশনের অধীনে। তাদের নির্দেশেই এ সব করেছে দিল্লি পুলিশ। অভিষেক জানিয়েছেন, দু’সপ্তাহ আগে তৃণমূল সাংসদ দোলা সেনের পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁকে ‘অমানবিক ভাবে’ ভ্যানে তুলেছে পুলিশ। সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকেও টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছে ভ্যানে। তাঁর কথায়, ‘‘গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে কমিশন।’’

অভিষেক জানিয়েছেন, রাজ্যপাল বোস আশ্বস্ত করেছেন তাঁদের। কমিশনের সঙ্গে বোস কথা বলবেন বলেও তাঁদের জানিয়েছেন। এ নিয়ে তৃণমূলকে জানানো হবে ইমেলে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান না হলে আবার মঙ্গলবার রাজভবনে আসবেন তাঁরা। অভিষেকের খোঁচা, ‘‘কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে এখন বিজেপি মাঠ ফাঁকা করতে চাইছে। ভোটটা কে দেবে? সিবিআই, ইডি এনআইএ না কি সাধারণ মানুষ। তাতে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের থেকেও খারাপ হবে।’’

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপি দাবি করেছিল, রাজ্যে ২০০ আসন পেয়ে সরকার গড়বে তারাই। যদিও শেষ পর্যন্ত ৭৭টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। সেই প্রসঙ্গ তুলেছেন অভিষেক। পাশাপাশি মনে করিয়ে দিয়েছেন, এখনও দু’টি আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি— ডায়মন্ড হারবার এবং আসানসোল। ঘটনাচক্রে, ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের প্রার্থী তিনি নিজেই। অভিষেক কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘মেঘনাদের মতো মেঘের আড়াল থেকে না লড়ে ইডি, এনআইএ ডিরেক্টরকে বলুন ওই দুই আসনে লড়তে। দেখি বাংলার মানুষ শেষ কথা বলে না কি ইডি, সিবিআই!’’

সোমবার তৃণমবলের প্রতিনিধি দল কমিশনের কাছে আরও একটি আর্জি জানিয়েছে। ঝড়বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য কমিশনের অনুমতি চেয়েছে তারা। সেই প্রসঙ্গ তুলেছেন অভিষেক। কেন অনুমতি দিচ্ছে না, তা-ও জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কমিশন জানে, অনুমোদন দিলে বাড়ি তৈরির কাজ হবে। তাতে বাংলার মানুষ মমতাকে বুকে আগলে রাখবে। সে জন্য অনুমোদন দিচ্ছে না। ১৫০০ লোকের বাড়ি হয়নি, রাজ্যপাল কি কেন্দ্রকে লিখেছেন? তিনি তো গিয়েছেন ওখানে। এটাই মোদীজির নতুন ভারত। কমিশন এনআইএর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে না। বিজেপি অভিযোগ করেছে বলে ডিজি বদল হবে।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE