E-Paper

আশ্বাস বিলি কীর্তির, শত্রুঘ্ন এখনও ‘খামোশ’

প্রথম জন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী কীর্তি আজাদ। দ্বিতীয় জন আসানসোলের প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্‌হা।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫৯
দুর্গাপুরে প্রচারে কীর্তি আজাদ।

দুর্গাপুরে প্রচারে কীর্তি আজাদ। নিজস্ব চিত্র।

প্রার্থী হিসেবে তাঁদের নাম ঘোষণার পরে দু’জনকেই ‘বহিরাগত’ বলে কটাক্ষ করেছিল বিরোধীরা। তাঁদের মধ্যে এক জন এ রাজ্যের কোনও আসনে প্রথম বার প্রার্থী হয়েছেন। অন্য জন ইতিমধ্যে এখান থেকে জিতে সাংসদ হয়েছেন। কিন্তু এ বার প্রচারের ময়দানে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের এই দুই প্রার্থীকে দুই রূপে দেখা যাচ্ছে বলে দাবি এলাকাবাসীর একাংশ থেকে বিরোধীদের।

প্রথম জন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী কীর্তি আজাদ। দ্বিতীয় জন আসানসোলের প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্‌হা। প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই কীর্তির দিকে বিরোধী শিবির থেকে একের পর এক তোপ এসেছে। হাত গুটিয়ে না থেকে নিয়মিত পাল্টা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তিনি। সকাল-বিকেল নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রের নানা জায়গায় প্রচারে যাচ্ছেন। ক্রিকেট খেলা থেকে ল্যাংচা ভাজা, নানা কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন নিজেকে।

গত উপনির্বাচনে তিন লক্ষের বেশি ভোটে জয়ী শত্রুঘ্নই যে এ বারও আসানসোলে প্রার্থী, তা ভোট ঘোষণার আগেই কার্যত পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলেরই একাংশের দাবি, তার পরে প্রায় দেড় মাস পেরোতে চললেও এখনও প্রচারের আঙিনায় সে ভাবে নামেননি তিনি। শুধু দলের নানা কর্মিসভা ও কিছু ইফতারের অনুষ্ঠানে জনসংযোগে দেখা যাচ্ছে তাঁকে।

শুধু প্রচারে বেরিয়ে শুধু নানা কর্মকাণ্ড নয়, এলাকার সমস্যা নিয়েও সরব হতে শোনা যাচ্ছে কীর্তিকে। তাঁর কেন্দ্রের মধ্যে থাকা ডিএসপি এবং ডিটিপিএসের উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতা করে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। জিতে সাংসদ হলে ভারী রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বাঁচানোর দাবিতে আন্দোলনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। দুর্গাপুরে দামোদর সংস্কারের বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন।

শিল্প সংক্রান্ত সমস্যা কম নয় আসানসোল কেন্দ্রেও। বন্ধ হয়ে গিয়েছে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, হিন্দুস্থান কেবল্‌স, কুলটি ইস্কোর মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। প্রায় ১৬টি খনি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বন্ধ হয়েছে আরও কয়েকটি। ধস কবলিতদের পুনর্বাসন প্রকল্পের টাকা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে কয়লা মন্ত্রকের দিকে। এ ছাড়া, নতুন কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় বিনিয়োগ না হওয়া বা বেকারত্ব বৃদ্ধির মতো সমস্যা নিয়ে চর্চা রয়েছে এলাকায়। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে তাঁদের কোনও আশ্বাসের কথা শোনাননি বলে দাবি শিল্পাঞ্চলবাসীর অনেকেরই।

তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীদের একাংশের দাবি, এখনও পর্যন্ত প্রার্থীর পথে-প্রচারে সে ভাবে না বেরোনো নিয়ে তাঁরাও এলাকায় অস্বস্তিতে পড়ছেন। বাম প্রার্থী জাহানারা খান নিয়মিত কেন্দ্রের নানা প্রান্তে প্রচারে যাচ্ছেন। সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পরে বিজেপিও কোমর বেঁধে নেমে পড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে শত্রুঘ্নের তাঁর পর্দার বিখ্যাত উক্তির মতোই ‘খামোশ’ থাকা চিন্তা বাড়াচ্ছে বলে দাবি তৃণমূল কর্মীদের অনেকের। কটাক্ষ করছে বিরোধীরাও। জাহানারার কথায়, ‘‘গত আড়াই বছর সংসদে এলাকার সমস্যা নিয়ে টুঁ শব্দ করেননি সাংসদ। এ বার প্রার্থী হয়ে এখনও কর্মী সম্মেলন ও ইফতারে যোগ দেওয়া ছাড়া আর কিছু করেছেন বলে জানা নেই।’’

পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর যদিও দাবি, ‘‘দলের আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে যোগ দিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে দেখা করছেন প্রার্থী। তাঁদের কাছে এলাকার সমস্যা ও বঞ্চনার কথাও শুনেছেন। পাশে থেকে আন্দোলনের আশ্বাসও দিয়েছেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 kirti azad

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy