রাহুল গান্ধী। — ফাইল চিত্র।
বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে বেছে বেছে ইডি-সিবিআইকে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনেক দিনের অভিযোগ। এ বার নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরে অভিযোগ উঠেছে, সিবিআই-ইডি-আয়কর দফতরের ভয় দেখিয়ে বিজেপি কর্পোরেট সংস্থার থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে,কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির অপব্যবহার রুখতে আইনে সংশোধন করা হবে বলে লোকসভা ভোটের ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতি দিতে চলেছে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে মোদী সরকার একগুচ্ছ নতুন ধারা যোগ করে তা বিরোধী নেতা, শিল্পপতিদের জেলে ঢোকানোর ভয় দেখাতে কাজে লাগাচ্ছে। কংগ্রেসের ইস্তাহারে এই সব বিতর্কিত ধারা তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে শিল্পমহলের পাশাপাশি আঞ্চলিক দলগুলিকেও বার্তা দেওয়া হবে।
পাঁচ বছর আগে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের ইস্তাহারের প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল ‘ন্যায়’ বা ‘ন্যূনতম আয় যোজনা’। ক্ষমতায় এলে গরিবতম পরিবারকে বছরে ৭২ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা হয়েছিল। তাতে অবশ্য লাভ হয়নি। এ বার কংগ্রেস একটির বদলে পাঁচটি ন্যায় নিয়ে ভোটে নামছে। কৃষক, যুবক, মহিলা, শ্রমিক ও অনগ্রসর—এই পাঁচ শ্রেণির জন্য রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা থেকে পাঁচটি ন্যায় ঘোষণা করেছেন। এই প্রতিটি ন্যায়-এর আওতায় পাঁচটি করে, মোট পঁচিশটি ‘গ্যারান্টি’ রয়েছে। যেমন যুবকদের জন্য ৩০ লক্ষ সরকারি পদ পূরণ, চাষিদের জন্য ফসলের দামের আইনি ‘গ্যারান্টি’ , অনগ্রসরদের জন্য আর্থ সামাজিক জাতগণনার ‘গ্যারান্টি’ থাকছে। এই পঁচিশটি ‘গ্যারান্টি’ ই লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের প্রধান অস্ত্র হতে চলেছে।
আজ কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ইস্তাহারের খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত তা চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে।
কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, কর্নাটক, তেলঙ্গানায় কংগ্রেস নানা ‘গ্যারান্টি’ দিয়েই ভোটে জিতেছিল। নরেন্দ্র মোদীর কাছে তার জবাব ছিল না। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের অভিযোগ, মোদী কংগ্রেসের গ্যারান্টির স্লোগান চুরি করেছেন। কংগ্রেসের বক্তব্য, ‘মোদীর গ্যারান্টি’-র জবাবে কংগ্রেস ‘ঘরে ঘরে গ্যারান্টি’ বলে প্রচারে যাবে।
প্রশ্ন উঠেছে, কংগ্রেস ক্ষমতায় আসবে না বুঝেই কি ইস্তাহারে অবিশ্বাস্য প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে? কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপালের জবাব, কংগ্রেস কর্নাটক, তেলঙ্গানায় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা ক্ষমতায় এসে পূরণ করেছে। পি চিদম্বরমের নেতৃত্বে কংগ্রেসের ইস্তাহার কমিটিও বাস্তবসম্মত প্রতিশ্রুতিরই খসড়া তৈরি করেছে। যেমন ৩০ লক্ষ অনুমোদিত সরকারি পদ খালি পড়ে। সেই হিসেব করেই ৩০ লক্ষ চাকরির গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, ইস্তাহারে সরকারি কর্মীদের পুরনো পেনশন প্রকল্প ফিরিয়ে আনা, জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফেরত, লাদাখের জন্য বিশেষ মর্যাদার কথাও থাকবে।
কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি, সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন ও তাঁদের মূল স্রোতে তুলে আনার জন্য সাচার কমিটির সুপারিশ এখনও পুরোপুরি রূপায়িত হয়নি। তা পুরোপুরি কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি ইস্তাহারে রাখা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy