জোট নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবে এআইসিসি? ভাবনায় বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্ব।
লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতে আর খুব বেশি বাকি নেই। অথচ পশ্চিমবঙ্গে জোট নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। তাই সে ভাবে ভোটে লড়াই করার প্রস্তুতিও নিতে পারছে না প্রদেশ কংগ্রেস। রবিবার বিধানভবনে এআইসিসি নেতৃত্বের কাছে দলের স্পষ্ট অবস্থান জানতে চাইল তারা। অন্য দিকে সিপিএম সূত্রে খবর, আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সোমবার পাল্টা চাপ তৈরি করে কংগ্রেসকে বলবে, তারা (কংগ্রেস) জানাক কী করবে। না হলে তাদের (বামফ্রন্ট) মতো করে যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এও খবর, বাম শরিকদলগুলো চাপ বাড়াচ্ছে সিপিএমের উপর।
রবিবার বৈঠকে বসেছিল পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের নির্বাচনী কমিটি। সেই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক জিএ মির ৪২টি কেন্দ্র নিয়েই আলোচনা শুরু করে নেতাদের মতামত জানতে চান। বৈঠকে যোগদান করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক বিপি সিংহ-সহ নির্বাচনী কমিটির সদস্যেরা।
এ ক্ষেত্রে প্রথম প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেসর বর্ষীয়ান নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। বিধান ভবন সূত্রে খবর, প্রদীপ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষককে জিগ্গেস করেন, জোট নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি দল। কার সঙ্গে কোন কোন আসনে জোট করে লড়াই করা হবে, তা নিয়ে কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা ধন্দে। তাই এ বিষয়ে আগে এআইসিসি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করুক। জবাবে মির জানিয়ে দেন, শীঘ্রই এআইসিসি জোট সংক্রান্ত কমিটি তাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দেবেন।
রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত জোট হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। সিপিএমের সঙ্গে জোট হবে কি না তা নিয়েও ধোঁয়াশা। রবিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বৈঠকে মন্তব্য করেন, জোটের আলোচনায় বিলম্ব হওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। তিনি জানান, শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় বামেদের সঙ্গে জোট আলোচনা কিছুটা এগিয়ে নিয়ে গিয়েও থমকে যেতে হয়েছে তাঁকে। সঙ্গে অধীর আরও জানান, তিনি নিজেই বহরমপুর লোকসভা থেকে প্রার্থী হবেন। তাই জোট ঘোষণায় বিলম্ব হলে তাঁকে বার বার আলোচনার জন্য কলকাতায় আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রার্থী হিসেবে তাঁর পক্ষে অসম্ভব বলেই উপস্থিত নেতাদের জানিয়েছেন।
যুব কংগ্রেস আবার এই নির্বাচনী তাদের তরফ থেকে কমপক্ষে একজনকে প্রার্থী করার আবেদন জানিয়েছে এআইসিসি নেতৃত্বের কাছে। বৈঠকে যুব সংগঠনের সভাপতি আজহার মল্লিক জানান, পশ্চিমবঙ্গের যুব সমাজকে কাছে টানতে গেলে লোকসভা ভোটে যুবদের প্রতিনিধিত্বের প্রয়োজন। তাই রাজ্য যুব সংগঠনের একজনকে ভোটে লড়াই করার সুযোগ দেওয়া হোক। সঙ্গে জোট নিয়ে তিনিও অবস্থান স্পষ্ট করার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ডিসেম্বর মাসে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের বড় অংশ বামেদের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়াইয়ের পক্ষে সওয়াল করেছেন। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলাদা করেও কথা বলেছেন পর্যবেক্ষক মির। ৪২টি আসনে কারা প্রার্থী হতে পারেন সেই নামও নেওয়া হয়েছে তাঁর তরফে। বিধান ভবনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কোনও রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে জোট না করা গেলে কংগ্রেস যাতে একক ভাবে পশ্চিমবঙ্গের ভোটে লড়াই করতে পারে, সেই প্রস্তুতিও রাখা হচ্ছে।
অসুস্থতার কারণে এ বারের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে পারবেন না মালদহ দক্ষিণের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী। তাঁর বদলে ওই আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হবেন তাঁর পুত্র তথা প্রাক্তন বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী। এ ছাড়াও, যাদের নাম পর্যবেক্ষক মিরের কাছে জমা পড়েছে তারা হলেন, দক্ষিণ কলকাতায় আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, উত্তর কলকাতা ও বারসতে রণজিৎ মুখোপাধ্যায়, রায়গঞ্জে মোহিত সেনগুপ্ত, আলিপুরদুয়ার মনি ডারনাল, পুরুলিয়া নেপাল মাহাতো, যাদবপুর সৌম্য আইচ রায়, উলুবেড়িয়া মহম্মদ মোক্তার, তমলুক লক্ষ্ণণ শেঠ, মেদিনীপুর শ্যামল ঘোষ, শ্রীরামপুর শুভঙ্কর সরকার, জঙ্গিপুর আসিফ ইকবাল, বালুরঘাট সৌরভ প্রসাদ, বীরভুমে মিলটন রশিদ প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy