E-Paper

বাম-কংগ্রেসের যৌথ প্রচার, রইল কাঁটাও 

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ফ্লেক্সে-দেওয়ালে ‘কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট প্রার্থী’ লিখতে হবে বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের তরফে সেই শর্ত মেনে নেওয়ার পরই কংগ্রেস প্রচারে বার হওয়ার সিন্ধান্ত নেয় দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:২৪
ভোট প্রচারে সাদিকে নিয়ে বাম-কংগ্রেস জোটের মিছিল। বুধবার কৃষ্ণনগরে।

ভোট প্রচারে সাদিকে নিয়ে বাম-কংগ্রেস জোটের মিছিল। বুধবার কৃষ্ণনগরে। —নিজস্ব চিত্র।

নানা টানাপড়েনের পর অবশেষে বামেদের সঙ্গে যৌথ প্রচারে নামল জেলা কংগ্রেস। বুধবার কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি-সহ শহরের একাধিক এলাকায় দুই দলের নেতাকর্মীদের একসঙ্গে মিছিলে হাঁটতে দেখা গেল। একই ভাবে জেলার অন্য এলাকাতেও এক সঙ্গে প্রচার শুরু হবে বলে আশাবাদী দুই দলের নেতারা।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ফ্লেক্সে-দেওয়ালে ‘কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট প্রার্থী’ লিখতে হবে বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের তরফে সেই শর্ত মেনে নেওয়ার পরই কংগ্রেস প্রচারে বার হওয়ার সিন্ধান্ত নেয় দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে কৃষ্ণনগরে যৌথ প্রচার শুরু হলেও রানাঘাট কেন্দ্রে কবে থেকে তা হবে তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে এ ক্ষেত্রেও আশাবাদী সিপিএম।

কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে দু’এক বার বাদ দিয়ে বরাবরই প্রার্থী দিয়ে এসেছে কংগ্রেস। গত লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ও কংগ্রেস আলাদা প্রার্থী দিয়েছিল। তাতে ফল হয়েছিল অত্যন্ত শোচনীয়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে সিপিএম পেয়েছিল প্রায় সাড়ে আট শতাংশ আর কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র প্রায় তিন শতাংশ। সিপিএম এ বার এই কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার কথা আগেই জানিয়ে দেয়। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা মেনেও নিয়েছেন। সেই মতো সিপিএম এস এম সাদিকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করে আগেই প্রচার শুরু করে দিয়েছে।

রানাঘাট কেন্দ্র নিয়ে কিছুটা টানাপড়েনের পর এই কেন্দ্রটিও কংগ্রেস নেতৃত্ব সিপিএমকে ছেড়ে দেওয়ায় অলকেশ দাসকে প্রার্থী করে লড়াই শুরু করে দিয়েছে বামেরা। এত দিন অবশ্য সেই প্রচার কর্মসূচিতে কংগ্রেসের দেখা মেলেনি। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল যে তা হলে কি জোট কেবল খাতায়-কলমেই হল? কংগ্রেস কি তা হলে এবার ঘরেই বসে থাকবে? এ দিন সেই সমস্ত প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক করে দিয়ে বামেদের সঙ্গে রাস্তায় নামল কংগ্রেসও।

কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে হতাশ করা ফল হলেও গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে আশানুরূপ ফল করেছে সিপিএম-কংগ্রেস। জেলা পরিষদের আসনে প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে সিপিএম প্রায় ২১ শতাংশ ও কংগ্রেস পেয়েছে প্রায় সাত শতাংশ ভোট। সব মিলিয়ে বাম ও কংগ্রেস প্রায় ২৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে। আর এই ভোটের অঙ্কই এবার বামেদের যথেষ্ট উজ্জীবিত করে তুলেছে। নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছে তারা। তৃণমূল ও বিজেপির পাশাপাশি তারাও সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আর, এই লড়াইয়ে তারা সর্বতো ভাবে কংগ্রেসকে পাশে পেতে চাইছে। কারণ এ ক্ষেত্রে কংগ্রেসের হাতে থাকা ভোট যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বাম নেতৃত্ব। ফলে তাঁরা প্রথম থেকেই কংগ্রেসকে নিয়ে প্রচারে নামার চেষ্টা চালিয়ে এসেছেন।

মঙ্গলবার বিকালে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে ঘূর্ণিতে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অসীম সাহার বাড়িতে যান। সেখানে কংগ্রেসের বেশ কয়েক জন জেলা নেতার পাশাপাশি অনেক ব্লক সভাপতিও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে প্রায় দু’ঘন্টা ধরে নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়। সেখানেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ফ্লেক্স ও দেওয়ালে ‘কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট প্রার্থী’ লেখার শর্ত দেওয়া হয়। সিপিএম সেই শর্ত মেনে নেয় বলে কংগ্রেসের দাবি।

নদিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি অসীম সাহা বলেন,“আমাদের নেতাকর্মীরা সিপি‌এম প্রার্থীর হয়ে প্রচার শুরু করবেন। আমি প্রতিটি ব্লক নেতৃত্বকে সেটা জানিয়ে দিয়েছি। রাজ্য নেতৃত্বও এমনটাই নির্দেশ দিয়েছেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলছেন, “খুবই ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। সর্বত্রই বাম-কংগ্রেস কর্মীরা এক সঙ্গে প্রচার করবেন। বিধানসভা-ভিত্তিক একটি যৌথ কমিটিও তৈরি হবে।” এ দিনই অবশ্য ‘কংগ্রেস কর্মী সমর্থিত নির্দল প্রার্থী’ হিসাবে ধুবুলিয়ার বাসিন্দা আলম মণ্ডল দলীয় পতাকা ও প্রতীক নিয়ে প্রচার ও দেওয়াল লিখন শুরু করেছেন। যদিও দুই দলের নেতাদের কেউই এতে গুরুত্ব দিতে রাজি নন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 CPM Congress Election Campaign

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy