E-Paper

প্রচারে ‘সিঁদ কাটছে’ সিপিএম

মাটি বা দেওয়াল খুঁড়ে ঘরে চুরি করাকে 'সিঁদ কাটা চুরি’ বলা হয়। একসময়ে গ্রামেগঞ্জে বাড়িতে ‘সিঁদ কেটে’ চুরির ঘটনা ঘটত আকছার।

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:১৫
গোয়ালতোড়ের গোহালডাঙা এলাকায় অলচিলি হরফে দেওয়াল লিখন সিপিএমের।

গোয়ালতোড়ের গোহালডাঙা এলাকায় অলচিলি হরফে দেওয়াল লিখন সিপিএমের। নিজস্ব চিত্র।

'সিঁদ কাটা' প্রচারে জোর দিচ্ছে সিপিএম! যার প্রাথমিক লক্ষ্য প্রতি বাড়িতে যাওয়া। সিপিএম সূত্রে খবর, যেখানে যেমন ভাবে যাওয়া সম্ভব, সেখানে তেমন ভাবে গিয়েই দলের বার্তা পৌঁঁছে দেওয়ার কাজ করছেন দলের কর্মীরা। ছবিটা শালবনি ও গড়বেতা বিধানসভা এলাকায়।

মাটি বা দেওয়াল খুঁড়ে ঘরে চুরি করাকে 'সিঁদ কাটা চুরি’ বলা হয়। একসময়ে গ্রামেগঞ্জে বাড়িতে ‘সিঁদ কেটে’ চুরির ঘটনা ঘটত আকছার। ইদানীং আর তেমনটা হয় না বললেই চলে। এবার সেই কৌশলই ফিরে এল, তবে অন্য ভাবে। গড়বেতার এক প্রবীণ সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘আগেকার দিনে গৃহস্থের বাড়িতে সিঁদ কেটে চুরি হত। অতি সন্তর্পণে হত সেই কাজ। এখন শাসকদলের সন্ত্রাস, পুলিশের অত্যাচার থেকে বাঁচতে দলের কর্মীরা গোপনে প্রচার চালাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে। এটাকেই কর্মীরা বলছেন সিঁদ কাটা প্রচার।" সিপিএম কর্মীরা বলছেন, আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় আদিবাসী পার্টিকর্মীরা গ্রামের প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। সংখ্যালঘু এলাকায় মুসলিম সম্প্রদায়ের কর্মীরা তাঁদের মতো করে দলের কথা বলছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী দলের পতাকাও ব্যবহার করা হচ্ছে। এইভাবে গ্রামে গ্রামে প্রত্যেক শ্রেণির মানুষের কাছে তাদের কথা পৌঁছে দিতে চাইছে সিপিএম। দলের এই প্রচার কৌশল নিয়ে বিস্তারিত ভাঙতে নারাজ সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। তাঁর কথায়, "ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে দলের প্রার্থী সোনামণি মুর্মুকে জেতাতে গড়বেতা ও শালবনি বিধানসভা এলাকার পার্টিকর্মীরা প্রচারে আছেন। আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি বাড়িতে যাওয়া। প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা।"

সিপিএম সূত্রে খবর, উনিশের লোকসভা ভোটে শালবনি বিধানসভায় সিপিএম প্রার্থী ভোট পেয়েছিলেন ১১ হাজারের মতো। গড়বেতা বিধানসভায় ১০ হাজারের কিছু বেশি। গত পঞ্চায়েত ভোটেও সেভাবে দাগ কাটতে পারেনি সিপিএম। তবে দু’টি বিধানসভায় গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে কয়েকটি আসনে জেতে তারা। দলের জেলা কমিটির এক নেতা বলছেন, "গত পাঁচ বছরে পার্টির শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে। মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতাও বেড়েছে। ফলে এবার আমাদের প্রচারের গতিও বাড়ছে।" সিপিএমের গোয়ালতোড় এরিয়া কমিটির গোহালডাঙা, টাঙাশোল প্রভৃতি আদিবাসী অধ্যুষিত কিছু কিছু গ্রামে সিপিএম প্রার্থী সোনামণি মুর্মুকে জেতানোর আবেদন জানিয়ে অলচিকি হরফে দেওয়াল লেখা চোখে পড়ছে। ওই এরিয়া কমিটির সম্পাদক তপন পাল বলেন, "পার্টির আদিবাসী সম্প্রদায়ের কর্মীরা অলচিকি হরফে দেওয়াল লিখে আদিবাসী গ্রামগুলিতে প্রচার করছেন।"

যদিও কোনও ফুলই সিপিএমের প্রচারকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ লোধার দাবি, "সিপিএমের আর উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই। তৃণমূল যতই ওদের অক্সিজেন দিক, লাভ হবে না।" তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার কটাক্ষ, "রাম-বাম একে অপরের সহযোগী হয়ে কাজ করছে। আমাদের লড়াই ড়গ্রাম কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জেতানোর।’’

সিপিএমের লড়াই হৃতসম্মান ফেরানোর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 CPIM Goaltore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy