E-Paper

কীর্তির বলে বোল্ড দিলীপ

তৃণমূল সূত্রের দাবি, গলসি, ভাতার, বর্ধমান শহরের মতো কয়েকটি জায়গা তৃণমূলের অন্দরে ‘দ্বন্দ্ব’ ছিল।

সৌমেন দত্ত , সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪ ০৫:৩৫
শংসাপত্র হাতে কীর্তি আজাদ।

শংসাপত্র হাতে কীর্তি আজাদ। ছবি: উদিত সিংহ।

প্রচার পর্বে চালিয়ে খেলেছিলেন তিনি। তবে ভোটের পরে ব্যাট হাতে বোল্ড হয়ে যান মাঠে নেমে। ফলাফলেও কি তেমনটাই হবে, প্রশ্ন উঠেছিল তখনই। বিশ্বকাপ জয়ী প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদের কাছে ভোটের মাঠে কার্যত বোল্ড আউটই হয়ে গেলেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ।

লক্ষাধিক ভোটে দিলীপের হারে অনেকটাই অবাক বিজেপি শিবির। তৃণমূল নেতারা অবশ্য দাবি করছেন, তাঁদের প্রার্থী কীর্তি জিতবেন, তা প্রচার-পর্বেই আঁচ পেয়েছিলেন তাঁরা। টানা প্রায় আড়াই মাস এলাকায় থেকে কার্যত একেবারে নিচুতলায় গিয়ে প্রচার করেছিলেন কীর্তি। গিয়েছেন বাড়ি বাড়ি। মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তৃণমূলের অনেকেরই দাবি, দিলীপ প্রচারে চমক দিয়ে শিরোনামে আসার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন, কিন্তু নিচুতলায় প্রচারে তেমন জোরছিল না।

তৃণমূল সূত্রের দাবি, গলসি, ভাতার, বর্ধমান শহরের মতো কয়েকটি জায়গা তৃণমূলের অন্দরে ‘দ্বন্দ্ব’ ছিল। নানা সময়ে নেতৃত্ব বৈঠক করলেও মেটেনি। কিন্তু কীর্তি প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমে সব পক্ষকে এক সঙ্গে প্রচারে নামাতে সফল হন। তাই ভোটে দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েনি বলে মনে করছে তৃণমূলের নিচুতলা। পক্ষান্তরে, বিজেপির একাংশ মনে করছে, তাদের প্রচারে সেই জোর ছিল না। বুথভিত্তিক সংগঠন দুর্বল হওয়ায় ভোটারদের কাছে পৌঁছনোয় খামতি ছিল। সেই জায়গাতেই টেক্কা দিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। এর সঙ্গে দিলীপের বার বার কুকথাও এলাকার মানুষ ঠিক ভাবে নেননি বলে অনুমান অনেকের।

যে বর্ধমানে গরুর দুধে সোনা খুঁজে পেয়েছিলেন, সেখানে হারলেন কী ভাবে? দিলীপের জবাব, ‘‘গত বার এই কেন্দ্রে তৃণমূল ধোঁকা খেয়েছিল। এ বার আমরা ধোঁকা খেয়েছি।’’ দলের দ্বন্দ্বেই হার কি না, সে প্রশ্নে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সেটা বলার মতো সময় এখনও আসেনি।’’ এ দিন গণনায় প্রতি রাউন্ডেই হেরেছেন দিলীপ। লোকসভা কেন্দ্রের যে সব এলাকা নিজেদের শক্ত ঘাঁটি বলে মনে করেছিলেন দিলীপ, সেই বর্ধমান দক্ষিণ, গলসি এবং দুর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে শুধু দুর্গাপুর পশ্চিমেই ‘লিড’ পেয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার উপবাসে ছিলেন কীর্তি আজাদ। জয়ের পরে তিনি বলেন, ‘‘দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের) আশীর্বাদ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব সঙ্গে নিয়ে বাংলায় ভোটে লড়তে এসেছিলাম। রাজনীতিতে ৩৬ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা নিয়ে মানুষের কাছে গিয়েছিলাম। সবাই আমাকে আশীর্বাদ করেছেন। কর্মীরা আপ্রাণ লড়াই করেছেন। তাতেই এই জয় পেয়েছি। যাঁরা কটূক্তি করছিলেন, তাঁদের খেলা শেষ হয়ে গিয়েছে। আমি নিজে খেলোয়াড় ছিলাম, কী ভাবে খেলতে হয় জানি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বাঙালি মাছে-ভাতে থাকেন। আমি চিংড়ি, ছোট মাছ খেতে ভালবাসি। আমি এখানেই থাকব, পালিয়ে যাচ্ছি না।’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নানা প্ররোচনার মধ্যেও আমাদের কর্মীরা জমি ছাড়েননি। দিলীপ ঘোষ প্রার্থী হয়ে এসে নানা কটূক্তি করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী থেকে পুলিশ অফিসার— সবাইকেই কুকথা বলেছেন। তা কোনও মানুষই ভাল ভাবে নেননি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 kirti azad Dilip Ghosh TMC BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy